সদস্য সংখ্যা এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের দখল দু’ক্ষেত্রেই জমি হারাচ্ছে এসএফআই।
ওই ছাত্র সংগঠনের দেওয়া তথ্যই বলছে, গত এক বছরে এসএফআইয়ের সদস্য সংখ্যা প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। তাদের দখলে থাকা ছাত্র সংসদের সংখ্যাও গত এক বছরে অর্ধেকের বেশি কমেছে। এসএফআই রাজ্য নেতৃত্ব এর দায় চাপাচ্ছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) ‘অত্যাচার’-এর উপরে। টিএমসিপি নেতৃত্ব অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
একই ভাবে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআইয়ের সদস্য সংখ্যাও গত তিন বছরে ৪০ লক্ষ কমেছে। এসএফআইয়ের মতো সিপিএমের যুব নেতৃত্বও একই সুরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন।
বাম-জমানায় কী করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কিছু কলেজে দিনের পর দিন এসএফআই জিতত, তা নিয়ে সম্প্রতি এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা সম্মেলনের প্রকাশ্য সমাবেশে প্রশ্ন তুলেছিলেন সিপিএম নেতা গৌতম দেব। রাজ্যের শাসন ক্ষমতাকে হাতিয়ার করেই যে এসএফআই বেশ কিছু কলেজে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতত গৌতমবাবুর আত্ম-সমালোচনার লক্ষ্য ছিল সেটাই।
বস্তুত, মঙ্গলবার এসএফআই নেতৃত্ব যে অভিযোগ করছেন, বাম জমানায় সেই একই অভিযোগ তুলত টিএমসিপি। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে রাজ্যের বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়েও ‘পরিবর্তনে’র হাওয়া বইছে। একের পর এক ছাত্র সংসদের দখল গিয়েছে টিএমসিপি-র হাতে। এ দিন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র জানান, এ বছর এসএফআইয়ের সদস্য সংখ্যা ৭ লক্ষ ১১ হাজার ২২০। গত বছরের থেকে ৫ লক্ষ কম। খাতায় কলমে সদস্য সংখ্যা কমলেও বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রীই অবশ্য মানসিক ভাবে এসএফআই-কে সমর্থন করছেন বলে দাবি সায়নদীপের। তিনি বলেন, “গায়ের জোরে একের পর এক ছাত্র সংসদ দখল করে নিচ্ছে টিএমসিপি।” তাঁর অভিযোগ, “এসএফআই করার অপরাধে গত এক বছরে ১৬ জন ছাত্র খুন হয়েছেন। এসএফআইয়ের সদস্য হতে গেলে ছেলেমেয়েরা আক্রান্ত হচ্ছেন।” গত বছরে তাঁদের দখলে ছিল বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০টি ছাত্র সংসদ। এখন সেই সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৭০-এ। রাজ্য সম্পাদক বলেন, “যে ছাত্র সংসদগুলি হাতছাড়া হয়েছে, তার মধ্যে ১০৩টি সংসদ ওরা গায়ের জোরে দখল করেছে।”
টিএমসিপি-র উপদেষ্টা মণ্ডলীর চেয়ারম্যান বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “দুরাত্মার ছলের অভাব হয় না। ৩৪ বছর ধরে গায়ের জোরে ছাত্র সংসদ দখল করার পরে এখন ওরা এই সব ভিত্তিহীন কথা বলছে। আমরা গণতন্ত্র ও নির্বাচনে বিশ্বাসী। ছাত্র সমাজই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।”
সংগঠন ধরে রাখতে শিক্ষায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, শিক্ষার বেসরকারিকরণের বিরোধিতা ইত্যাদি দাবিতে এসএফআই কর্মসূচি নিচ্ছে। ২৪ থেকে ২৬ অগস্ট আলিপুরদুয়ারে এসএফআইয়ের ৩৪তম রাজ্য সম্মেলনে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু, প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেব প্রমুখের উপস্থিত থাকার কথা। |