ভাইচুং ভুটিয়ার দীর্ঘ ছায়া সরে যাওয়ার পর প্রথম নেহরু কাপ।
বব হাউটনের জেতা পরপর দুটো নেহরু কাপের পর নতুন বিদেশি কোচের জমানা।
বহু দিন ধরে জাতীয় দলে খেলা মহেশ-ক্লাইম্যাক্স-রেনেডি-স্টিভন ডায়াসদের পরবর্তী প্রজন্মের একঝাঁক ফুটবলারের পরীক্ষা।
চৌম্বকে এই তিনটি প্রেক্ষাপটের উপর দাঁড়িয়ে কাল নেহরু স্টেডিয়ামে কাপ-জয়ের অভিযান শুরু করতে চলেছে কোভারম্যান্সের ভারত। যাদের বিরুদ্ধে সুনীল ছেত্রীদের ‘যুদ্ধ’ সেই সিরিয়া এখন দাঙ্গা বিধ্বস্ত। চব্বিশ ঘণ্টা আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হুমকি দিয়েছেন, সিরিয়ার শাসক গোষ্ঠী যদি বিক্ষুব্ধদের শায়েস্তা করতে রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করে তা হলে আমেরিকা ছেড়ে কথা বলবে না। সিরিয়ায় সেনাবাহিনী পাঠিয়ে দেবেন ওবামা।
মাঠের ‘যুদ্ধে’ নামার আগে কোভারম্যান্স বা সুনীল ছেত্রীরা অবশ্য কোনও হুমকি দিচ্ছেন না সিরিয়াকে। বরং কিছুটা সমীহই করছেন ‘লাল ঈগলদের’। পর্তুগালের ক্লাবে খেলে দেরিতে শিবিরে যোগ দেওয়ার পরও ফের অধিনায়কের সিংহাসনে বসে পড়া সুনীল ছেত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে সরাসরি বললেন, “এশিয়ার যে ক’টা দেশ ফুটবলে উন্নতি করছে তাদের মধ্যে সিরিয়া আছে। ওদের এশিয়া কাপে দেখেছি। গত দু’বার ওদের হারিয়ে আমরা নেহরু কাপে চাম্পিয়ন হয়েছি ঠিক। কিন্তু এটাও জানি ওরা ঠিক কতটা শক্তিধর।” |
নতুন জুটি। সাংবাদিক সম্মেলনে সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে কোচ কোভারম্যান্স। মঙ্গলবার।—নিজস্ব চিত্র |
সিরিয়া দল সম্পর্কে শেষ তথ্য এখনও জোগাড় করতে পারেননি কোভারম্যান্স। ভারতের নতুন ডাচ কোচও তাই সতর্ক। এতটাই যে, গ্রেটার নয়ডার জেপি গ্রিন স্পোর্টস কমপ্লেক্সে ট্যাকটিক্স অনুশীলনের সময় সমস্ত বৈদ্যুতিন মিডিয়ার ক্যামেরা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি। ধাঁধা তৈরি করেছেন ফর্মেশন নিয়েও। “আমরা সব রকম ফর্মেশনে খেলতে পারি।” বলেই প্রশ্নের উত্তর শেষ করেছেন। মাঠে অবশ্য দেখা গেল কার্যত ৪-৪-১-১-এ খেলবে ভারত। সামনে কখনও সুনীল, কখনও ফ্রান্সিস ফার্নান্ডেজ ম্যাচের মধ্যেই জায়গা বদলে খেলবেন। নতুন জাতীয় কোচ নির্ভর করছেন মাটি ঘেঁষা সেটপিস মুভমেন্টের উপর।
কিন্তু ৪-৪-১-১ ফমের্শনে তো ববও খেলাতেন। তা হলে কোভারম্যান্সের জমানায় পরিবর্তনটা কোথায় হতে চলেছে? শেষ জেতা দুটো নেহরু কাপে যাঁরা খেলেছিলেন তাঁদের মধ্যে দু’জন রয়েছেন এ বারের টিমে। গোলকিপার সুব্রত পাল এবং অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। সুব্রতকে এ দিন কথা বলার অনুমতি দেননি কোচ। সুনীল বললেন, “আমরা লং বল থেকে সরে এসে এ বার মাটিতে বল রেখে খেলব। কোচ সেটাই চাইছেন। আমার মনে হয় নতুন ভারতকে কিছুটা হলেও দেখতে পাবেন কাল।” ‘মাপ দেখে নিয়ে কোটের কাপড় কাটায় বিশ্বাসী’ কোচ কোভারম্যান্স অবশ্য কেন মাটিতে বল রেখে খেলতে চান তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। “আমার টিমের বেশির ভাগ ফুটবলার উচ্চতায় ছোট। ফলে লং বল খেললে অসুবিধা। পজেশনাল ফুটবলে মাটিতে বল রেখে খেললে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়।”
আর যেটা বলেননি তা হল, জাতীয় দলে বহু দিন পর বঙ্গ-ক্লাব ফুটবলারদের ভিড়। ডেম্পোর দীর্ঘ দিনের আধিপত্য উধাও জাতীয় দলে। সম্ভাব্য প্রথম ১১ জনের সাত জনই এ বার কলকাতার তিন ক্লাবের হয়ে খেলবেন আই লিগে। |