জরিমানায় জোর পুরসভার
প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার বন্ধ করতে জরিমানা আদায়ের কথা বলা হয়েছে। অথচ নিয়মিত নজরদারি চালিয়ে তা না করার জন্য শহরের বাজারগুলিতে ব্যবসায়ীদের একাংশ জবরদস্তি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে সচেষ্ট বলে অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে শহরকে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মুক্ত রাখতে জরিমানা আদায়ের উপর জোর দিতে চাইছেন শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার ট্যাবলো বার করে সে ব্যাপারে প্রচারেও নেমেছেন তাঁরা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডগুলিতে, বাজার এলাকাগুলিতে ঘুরবে ওই ট্যাবলো। জরিমানা আদায়ের উপর জোর দিয়েই পরিবেশ বিভাগের দায়িত্বে থাকার সময় মেয়র পারিষদ সুজয় ঘটক শহরকে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মুক্ত করতে সফল হন। ২০১১ সালের মে মাসে তিনি দায়িত্ব ছাড়ার পর জরিমানা আদায় পদ্ধতি শিথিল হয়ে পড়ে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই কিছু ব্যবসায়ী জরবদস্তি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে সচেষ্ট বলে অভিযোগ। তাই ফের জরিমানা আদায়ের উপর জোর দিতে চাইছেন পুর কর্তৃপক্ষ। ট্যাবলোতে লাগানো হোর্ডিংয়ে পুর এলাকায় প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি জানানো হয়েছে।
ট্যাবলোর ছবি তুলেছেন সন্দীপ পাল।
পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ দুলাল দত্ত বলেন, “ব্যবসায়ীরা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে সামগ্রী বিক্রি করলে ৫০০ টাকা এবং বাসিন্দারা কেউ ব্যবহার করলে তাঁকে ৫০ টাকা জরিমানা দেওয়ার বিষয়টি ট্যাবলো থেকে মাইকিং করে, হোর্ডিংয়ে প্রচার করা হচ্ছে। ট্যাবলোর প্রচারের সঙ্গে ৫ টি বরো এবং পুরসভার মূল দফতর থেকে বিভিন্ন বাজারগুলিতে আলাদা ভাবে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হবে।” তিনি জানান, ব্যবসায়ী, বাসন্দাদের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করছেন দেখলেই এখন থেকে জরিমানা ধার্য করা হবে। কংগ্রেস-তৃণমূল জোট শিলিগুড়ি পুর নির্বাচনে জিতে পুরবোর্ড দখল করলেও মেয়র পদ নিয়ে মতানৈক্যের জেরে সে সময় বোর্ডে যোগ দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেস। পুরসভার সাফাই এবং পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ হয়ে সুজয় ঘটক। শহরে সমস্ত ধরনের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। কোথাও ব্যবসায়ী, বাসিন্দাদের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করতে দেখলেই জরিমানা করা হয়। শহর প্ল্যাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মুক্ত করতে তাতেই সাফল্য মেলে। জরিমানা থেকে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আদায়ও হয়। বছরখানেক আগে তৃণমূল পুরবোর্ডে যোগ দিলে পরিবেশ বিভাগের দায়িত্ব নেন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির দাবি মেনে তিনি জরিমানা সংগ্রহের প্রক্রিয়া সাময়িক ভাবে বন্ধ রেখে প্রচারের উপর জোর দেন। শহর প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মুক্ত রাখার প্রক্রিয়া তখন থেকেই কিছুটা শিথিল হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ শহরের বাসিন্দাদের একাংশের। পরবর্তীতে পথ নাটকের মাধ্যমে প্রচার চালানো হয়। জরিমানা আদায়ে কড়া না হওয়ায় জবরদস্তি ক্যারিব্যাগ ব্যবহারের প্রবণতা বাড়তে থাকে। শহরের সুনাম রক্ষায় রবিবার করে শহরের বিভিন্ন বাজারে প্রচারে নামে হিমালয়ান নেচার অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার ফাউন্ডেশন। এই পরিস্থিতিতে ১ অগস্ট থেকে পরিবেশ বিভাগের দায়িত্ব নেন দুলালবাবু। চম্পাসারি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি-সহ শহরের বিভিন্ন বাজারগুলির ব্যবসায়ী সমিতিগুলির কর্মকর্তাদের একাংশ জানিয়েছেন জবরদস্তি যাঁরা প্লাস্টিকের ক্যাব্যাগ ব্যবহার করছেন তা বন্ধ করতে জরিমানা আদায়ের মাধ্যমে পুর কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে হবে। পরিবেশ বিভাগের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ সুজয়বাবু বলেন, “২০১০ সালের মার্চ মাসে শহরে সমস্ত রকম প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে জরিমানা করা শুরু হয়। তাতে একেক দিন ২০ হাজার, ২৫ হাজার টাকা জরিমানা উঠত। প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যাবহার বন্ধ হয়ে এলে জরিমানা আদায় কমে যেতে থাকে। শহরে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগের ব্যবহার বন্ধ করার ক্ষেত্রে কতটা সফলতা এসেছে তা থেকেই সেটা স্পষ্ট হত।” বর্তমানে প্লাস্টিকের ক্যরিব্যাগ বন্ধের দায়িত্বে থাকা স্যানিটরি ইন্সপেক্টর বিদ্যুৎ দেবনাথ অবশ্য জানিয়েছেন, গত এক বছর ধরে অভিযান চালিয়ে প্রচুর প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ আটক হলেও জরিমানা সে ভাবে করা হয়নি। প্রচারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ মাসে ৩০০ টাকা জরিমান আদায় হয়েছে। গত দু’ মাসে জরিমানা আদায় হয়েছে হাজার টাকার মতো। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, “শুধু প্রচার নয়। জরিমানা আদায়ের উপর জোর দিতে হবে। তা না হলে জবরদস্তি যাঁরা ব্যবহার করছেন তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হবে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.