ফের তুষ-কুড়ো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে উদ্যোগী হয়েছে বদরপুর এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেড। ২০০৭-এ বরাক ভ্যালি সিমেন্টস লিমিটেড নিজেদের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে এই কোম্পানি গড়ে তোলে। ধানের তুষ-কুড়ো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রথম প্রকল্প বলে শুরুতে বেশ সাড়াও ফেলেছিল। কিন্তু কাঁচা মালের অভাবে বেশি দিন উৎপাদন চালু রাখা যায়নি। ফলে তাদের আবার অসম রাজ্য বিদ্যুৎ কোম্পানির দ্বারস্থ হতে হয়। এতে এক দিকে যেমন চড়া দামে বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছিল, তেমনই ঘনঘন লোডশেডিঙের জন্য জেনারেটর চালাতে গিয়ে প্রচুর জ্বালানিরও প্রয়োজন হচ্ছিল। তাই ফের অপ্রচলিত প্রথার বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করতে চাইছে সংস্থাটি।
এ জন্য তুষ-কুড়ো নিয়ে সচেতনতা গড়তে মাঠে নেমেছেন খোদ ডেপুটি চেয়ারম্যান মুকেশ অগ্রবাল। বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে তিনি কৃষকদের বোঝাচ্ছেন, ধানের তুষ বা কুড়ো অনেকে এখানে-ওখানে ফেলে রেখে নষ্ট করেন। অনেকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করেন। এর চেয়ে এ সব জমিয়ে রেখে তাদের কোম্পানির কাছে বিক্রি করলে তাঁরা অনেক বেশি লাভবান হবেন। এ জন্য ছোটাছুটিরও প্রয়োজন নেই। তিনি গ্রামবাসীদের কোম্পানির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মোবাইল নম্বর দিচ্ছেন। ফোন করলেই তাঁরাই সেই তুষ-কুড়ো সংগ্রহের ব্যবস্থা করবেন।
অগ্রবাল আশাবাদী, তাঁর এই সচেতনতা অভিযান কাজে আসবে। শীঘ্রই বদরপুর এনার্জি প্রাইভেট লিমিটেডে উৎপাদন শুরু হবে। তাঁর কথায়, বরাক উপত্যকার প্রধান সমস্যাগুলির অন্যতম হল বিদ্যুৎ। তাই তারা এই উপত্যকার বিদ্যুৎ সঙ্কটে বাড়তি চাপ এড়াতে নিজেদের প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ নিজেরাই উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। পরিবেশের ওপর কোনও ক্ষতিকর প্রভাব না ফেলে তুষ-কুড়ো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ভাবা হয়েছিল, ৩০০ থেকে ৩২৫ টন তুষ-কুড়ো সহজেই মিলবে। তাই তাদের এখন সাড়ে চার মেগাওয়াট প্রয়োজন হলেও তাঁরা ছয় মেগাওয়াট বিদ্যুৎ তৈরির পরিকাঠামো তৈরি করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তুষ-কুড়োর অভাবে উৎপাদনই বন্ধ করে দিতে হয়। এতে এখন তাদের রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে। তাই তিনি কাঁচা মাল সরবরাহের জন্য উৎসাহিত করতে গ্রামে গ্রামে ঘোরার সিদ্ধান্ত নেন। মুকেশবাবু জানান, শুধু ধানের তুষ ও চালের কুড়োই নয়, খড়, গোবর, সুপারির খোসা, ছন, বাঁশ, লকড়িও তাঁদের কাজে লাগবে।
|