নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে কারখানার ভেতরে-বাইরে চলছে কড়া পুলিশ প্রহরা। প্রাক্তন সেনাকর্মীদের নিয়ে গড়া সংস্থার নিজস্ব নিরাপত্তাবাহিনী টহল দিচ্ছে গোটা চত্বর জুড়ে। আর তারই মধ্যে মাত্র ৩০০ জন স্থায়ী কর্মী নিয়েই মঙ্গলবার ফের গাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেল মারুতি সুজুকি ইন্ডিয়ার মানেসর কারখানায়।
হিংসাত্মক গোলমালের জেরে প্রায় এক মাস বন্ধ থাকার পরে আবার খুলেছে কারখানার দরজা। মারুতির মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ দিন সকাল থেকেই উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে মাস খানেক আগের ভয়াবহ সংঘর্ষে সংস্থার এক উচ্চপদস্থ কর্তার মৃত্যু ও ১০০ জনের জখম হওয়ার ঘটনার পর স্বাভাবিক ভাবেই এ দিন আর কোনও ঝুঁকি নেননি মারুতি কর্তৃপক্ষ এবং গুড়গাঁও পুলিশ-প্রশাসন। সকালেই কারখানায় এসে গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখে গিয়েছিলেন গুড়গাঁও পুলিশ কমিশনার কে কে সিন্ধু।
পুলিশের সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট যোগেন্দ্র নেহরা জানিয়েছেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কারখানার ভেতরে ও বাইরে মোট ১,২০০-১,৫০০ পুলিশবাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। এর মধ্যে দেশের রিজার্ভ ব্যাটেলিয়ন থেকে রয়েছেন ৫৪০ জন।
|
হরিয়ানা সরকার পূর্ণ নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেও সংস্থা নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সে জন্য এ দিন প্রাক্তন সেনাকর্মীদের নিয়ে তাদের নিজস্ব ১০০ জনের বিশেষ নিরাপত্তাবাহিনীও নিয়োগ করা হয়।
পরে, দিনভর পরিবেশ যথেষ্ট শান্ত ছিল দাবি করে নেহরা বলেন, “কারখানা চত্বরে কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাইনি। যতদিন না ওই শিল্প এলাকায় সব ভয় কেটে গিয়ে পুরোপুরি শান্তি ফিরছে, ততদিন পুলিশি নিরাপত্তা থাকবে।”
নিরাপত্তার আশ্বাস নিয়ে অবশ্য এগিয়ে এসেছেন মানেসরের আশেপাশের গ্রামের বাসিন্দারাও। “পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সংস্থার দিকে সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব”, প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লাগোয়া কাসান গ্রামের সরপঞ্চ রমেশ সিংহ চহ্বান।
এ পর্যায়ে অবশ্য শুধুমাত্র একটি ‘শিফট’ (সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে)-এই গাড়ি তৈরির কাজ চলবে বলে জানিয়েছে মারুতি। গোলমালের ঘটনার আগে কারখানায় কাজ করতেন ৩৩০০ জন। এবং তখন সাধারণ ভাবে দিনে ১৫০০-১৭০০টি গাড়ি তৈরির ব্যবস্থা থাকলেও, এখন ১৫০টির বেশি হবে না বলেই মনে করছেন সংস্থার কর্তারা।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ জুলাইয়ের হিংসাত্মক ঘটনায় মারুতি কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ছিল, এর পিছনে শ্রমিকদের একটা বড় অংশের হাত রয়েছে। তা উড়িয়ে শ্রমিক ইউনিয়ন পাল্টা অভিযোগ তোলে, কর্তৃপক্ষের ভাড়া করা গুণ্ডারা কর্মীদের উপর চড়াও হয়।
এর পরেই ২১ জুলাই কারখানায় লক-আউট ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ।
এ দিন ফের কারখানা চালুর আগে অবশ্য ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৫০০ জন স্থায়ী শ্রমিককে ছাঁটাই করার কথা জানিয়েছে সংস্থা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, একই কারণে আরও ৫০০ জন অস্থায়ী শ্রমিককেও ছাঁটাই করা হতে পারে। |