আজাদ ময়দানে সভার অনুমতি ছিল। কিন্তু, গিরগাঁও চৌপট্টি থেকে আজাদ ময়দান পর্যন্ত মিছিলের অনুমতি পাননি মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে। মুম্বই পুলিশকে তোয়াক্কা না করেই মিছিল করলেন তিনি। বাধা দেয়নি পুলিশ-প্রশাসন। উল্টে তাঁর দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে সমস্যায় পড়েছেন এক পুলিশ কনস্টেবল।
অসমে গোষ্ঠী-সংঘর্ষের প্রতিবাদে ১১ অগস্ট মুম্বইয়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল কয়েকটি সংগঠন। হঠাৎই হিংসাত্মক চেহারা নেয় সেই বিক্ষোভ। নিহত হন ২ জন বিক্ষোভকারী। আহত হন ৪৪ জন পুলিশ-সহ ৫২ জন। এই ঘটনাকে নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে আসরে নেমেছেন রাজ। তাঁর বক্তব্য, সে দিনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর আর পাটিল ও পুলিশ কমিশনার অরূপ পট্টনায়ক। তাঁদের এখনই ইস্তফা দেওয়া উচিত।
আজ ওই ঘটনার প্রতিবাদে গিরগাঁও চৌপট্টি থেকে আজাদ ময়দান পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিল এমএনএস। রাজ জানিয়ে দেন, পুলিশের অনুমতি না পেলেও তাঁরা মিছিল করবেন। মিছিল ও সভা শান্তিপূর্ণই হবে। তবে পুলিশ বাধা দিলে পরিণতির দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে।
|
রাজ ঠাকরের হাতে গোলাপ ফুল তুলে দিচ্ছেন প্রমোদ তাওড়ে। ছবি: পি টি আই। |
আজ এমএনএসের পতাকা নিয়ে চৌপট্টিতে জড়ো হন হাজার হাজার মানুষ। নিজের টয়োটা ল্যান্ডক্রুজার গাড়িতে মিছিলকে নেতৃত্ব দেন রাজ। তার আগে এক বার সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির ঘুরে আসেন তিনি। প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকলেও কোথাও-ই এমএনএস কর্মীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেননি তাঁরা।
নাটক চরমে ওঠে আজাদ ময়দানের সভায়। সভায় তখন জনসমুদ্র। ১১ অগস্টের হিংসায় আহত পুলিশকর্মীদের প্রতি সহানুভূতি ঝরে পড়ে রাজের বক্তৃতায়। আর আর পাটিল আর পট্টনায়কই পুলিশকে সে দিন উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে দেননি বলে অভিযোগ করেন তিনি। আর থাকতে পারেননি কনস্টেবল প্রমোদ তাওড়ে। ১১ অগস্টের হিংসায় আহত হয়েছিলেন তিনি। সোজা রাজের দিকে এগিয়ে গিয়ে তাঁর হাতে তুলে দেন ‘বন্ধুত্বের’ উপহার, হলুদ গোলাপ।
আর আর পাটিল ও অরূপ পট্টনায়কের উপরে কার্যত বীতশ্রদ্ধ তাওড়ে। তাঁর বক্তব্য, রাজের কথা একেবারে ঠিক। কেবল ১১ অগস্ট নয়, ১৭ অগস্টও তাঁর উপরে অবিচার হয়েছে বলে দাবি বাইকুল্লা ওয়্যারলেস বিভাগের এই কনস্টেবলের। সে দিন তাওড়ে ও তাঁর কয়েক জন সহকর্মীর উপরে সিআইএসএফ জওয়ানদের একটি দল হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন তাওড়ে। তাঁর দাবি, বিষয়টি নিয়ে কমিশনার পট্টনায়কের কাছেও গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, গুরুত্ব না দিয়ে উল্টে তাঁকে নিয়ে হাসাহাসি শুরু করেন পট্টনায়ক। তাওড়েকে ব্যঙ্গ করে বলেন, তাঁকে সুভাষচন্দ্র বসুর মতো দেখতে।
রাজ ঠাকরেকে সমর্থন করায় বিপদে পড়েছেন তাওড়ে। পুরো ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর আর পাটিল। পরে কর্তব্যরত অবস্থায় রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে কথা বলার দায়ে তাওড়েকে আটক করা হয়েছে। তাঁকে সাসপেন্ড করাও হতে পারে। কিন্তু, তাতে ঘাবড়াবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তাওড়ে। তাঁর বক্তব্য, রাজকে সমর্থন করে তিনি কোনও ভুল করেননি। |