গ্রামেরই লিচু বাগানে গ্রামবাসীদের নিয়ে সালিশি সভা বসিয়েছিল মাওবাদীরা। সেখানে মহিলা-পুরুষ মিলিয়ে ২৯ জন উপস্থিত ছিল। খবর যায় পুলিশের কাছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় সিংহের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছে যায়। ঘিরে ফেলে বাগান। সালিশি সভা থেকে নিয়ে তুলে নিয়ে আসা হয় সকলকে। চারজন বাদে গ্রামের সকলকেই অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মোতিহারির রাজেপুর থানার পাকরাহা গ্রামে গত শনিবার বিকেলের এই ঘটনাকে পুলিশের বড় ‘সাফল্য’ হিসেবেই দেখছেন কর্তারা।
কেন এই সাফল্য তা বোঝাতে গিয়ে পুলিশ কর্তারা বলছেন, মাস দুই ধরে মাওবাদী সংগঠনের হয়ে ধৃতরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে গ্রামের মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল। সংগঠনে গ্রামবাসীদের সামিল করতে মাওবাদীরা সরকার এবং পুলিশের বিরুদ্ধে ভুল বোঝাচ্ছিল। এদের গ্রেফতারের ফলে সেই কাজে ভাটা পড়বে বলেই পুলিশ কর্তাদের ধারণা। যে চারজন এই কাজ করছিল তারা হল: মুন্না যাদব ওরফে রামন তিওয়ারি ওরফে অশোক কুমার, মঙ্গল প্রসাদ, দুর্গা প্রসাদ এবং বীরেন্দ্র প্রসাদ। এরা সকলেই রাজেপুর থানার আকরাহা গ্রামের বাসিন্দা। এদের মধ্যে প্রথম জন এই এলাকায় দলের প্রধান বলে পুলিশি জেরায় জানিয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে চোরাই মোটরসাইকেল, মাওবাদী পত্রপ্রত্রিকা এবং মোবাইল ফোন আটক করা হয়েছে। তবে তাদের কাছে কোনও আস্ত্র পাওয়ার কথা পুলিশ জানায়নি।
মোতিহারির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় সিংহ বলেন, “আমাদের কাছে খবর ছিল মাওবাদীরা গ্রামবাসীদের মধ্যে সরকার বিরোধী প্রচার চালাচ্ছে। কাল খবর পেয়ে তাদের হাতে নাতে ধরা হয়েছে। মাস দুই ধরে তারা গ্রামবাসীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিল। চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” সঞ্জয় সিংহের দাবি, গ্রামবাসীরা ওদের কথায় বিভ্রান্ত হয়নি। কারণ, গ্রামবাসীদের একটি অংশই পুলিশকে এই বৈঠকের খবর দেয়। তাঁরা পুলিশকে জানিয়েছে, সংগঠনের লোকেরা তাদের বলেছে, জমি বিবাদ-সহ যে সমস্যা গ্রামে রয়েছে তার জন্য পুলিশ বা আদালতে যেতে হবে না। তারাই সালিশি করে সমস্যা মিটিয়ে দেব। সেই উদ্দেশে শনিবার বিকেলে ওই বৈঠক ডেকেছিল মাওবাদীরা।
|