রক্ত রাখার ব্যাগের অভাবে বিপাকে পড়েছে রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত রাখার ব্যাগের আকাল পড়েছে। ফলে রক্তদান শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন কতৃর্পক্ষ। সোমবার প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে রায়গঞ্জ টাউন কংগ্রেস কমিটির উদ্যোগে সুপার মার্কেট এলাকায় একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতে গিয়ে একই সমস্যা হয়। টাউন কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ ২০০ বোতল রক্ত দান করতে চাইলেও ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ব্যাগের অভাবে ১৮২ ইউনিটের বেশি রক্ত সংগ্রহ করতে পারেননি। ওই ঘটনায় ক্ষুব্ধ রায়গঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত। তিনি ব্লাড ব্যঙ্ক কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে ব্যাগের সরবরাহগ স্বাভাবিক করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তাঁর অভিযোগ, ব্লাড ব্যাঙ্কে ব্যাগের সঙ্কট যেমন চলছে তেমনই কয়েক মাস ধরে রক্তদাতাদের ‘ব্যাজ’এ দেওয়া হচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করেন, “রাজ্য সরকারের গাফিলতির জেরেই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে ব্যাগের অভাব দেখা দিয়েছে। এদিন শিবিরে আমাদের বহু কর্মী রক্ত দিতে পারেননি। রক্তদাতাদের ব্যাজ দেওয়ার কাজও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।” এই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কিটের সরবরাহ স্বাভাবিক করার দাবিতে শিলিগুড়ির রিজিওনাল ব্লাড ট্রান্সমিশন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হচ্ছেন! ব্লাড ব্যাঙ্কের ইনচার্জ প্রদীপ মন্ডল বলেন, “এক সপ্তাহ ধরে ব্লাড ব্যাঙ্কে কিট সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সেজন্য সীমিত সংখ্যক রক্ত সংগ্রহ করতে হচ্ছে। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির রিজিওনাল ব্লাড ট্রান্সমিশন কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাগ সরবরাহের দাবি জানানো হবে।” রোগী কল্যাণ সমিতি সদস্য আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি অরিন্দম সরকার অভিযোগ করেন, “কেন্দ্রীয় সরকারের এক সংস্থা কিট ও ব্যাজ সরবরাহ করে। তাঁদের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় রাজ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে কিট ও ব্যাগের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জেলা হাসপাতালে প্রয়োজনে শিলিগুড়ি থেকে কিট সরবরাহ করা হচ্ছে। সরকারের বিরুদ্ধে বদনাম রটাতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির রিজিওনাল ব্লাড ট্রান্সমিশন থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৭০০-৮০০ ব্লাড ব্যাগ রায়গঞ্জে সরবরাহ করা হয়। ব্লাড ব্যাঙ্কে গড়ে ৬০০ ব্যাগ মজুত থাকে। শনিবার পর্যন্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে ২০০টি ব্যাগ মজুত ছিল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতাল থেকে ১০০টি ব্যাগ সংগ্রহ করেন রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন শিবির থেকে রক্ত সংগ্রহ করেন। প্রদীপবাবু বলেন, “মঙ্গলবারের মধ্যে শিলিগুড়ির ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ সরবরাহ স্বাভাবিক না-করলে রক্ত সংগ্রহ করতে পারব না।” |