কুড়ি বছরেও ওটি-র তালা খুলল না সিঙ্গতে
বিশ বছর পার। এখনও তালা খুলল না মঙ্গলকোটের সিঙ্গত গ্রামীণ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের। এর ফলে ওই গ্রামীণ হাসপাতালে অস্ত্রোপচার পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মঙ্গলকোটের মাজিগ্রাম, ভাল্যগ্রাম, কৈচর-২, শিমুলিয়া-সহ এলাকার ৬০ হাজার বাসিন্দা। সে কারণে পুরোপুরি চালু হয়নি ৫০ শয্যার ওই হাসপাতাল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কংগ্রেস জমানায় সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের মন্ত্রিসভার স্বাস্থ্যমন্ত্রী অজিত পাঁজার আমলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত হওয়ার অনুমোদন পায়। বাসিন্দারা জানান, তাঁদের ধারণা ছিল, গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত হলে অস্ত্রোপচার পরিষেবা পাবেন তাঁরা। সেই সময়ে নতুন ভাবে শুরু হয় হাসপাতাল তৈরির কাজ। বাম জমানায় সিঙ্গতের ওই গ্রামীণ হাসপাতালের দোতলা ও অপারেশন থিয়েটার (ওটি) তৈরির কাজ শেষ হয়। ১৯৮২ সালে চালু হয় হাসপাতালটি। কিন্তু সে সময়ে অস্ত্রোপচারের ন্যূনতম পরিকাঠামোও ছিল না। পরবর্তীকালে ২০০০ সালে বিশ্ব ব্যাঙ্কের অর্থানুকুল্যে আধুনিকীকরণ করা হয় হাসপাতালটির। অস্ত্রোপচারের যন্ত্র জন্য অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতির পাশাপাশি শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র সবই আসে। কিন্তু তা সত্ত্বেও চালু হয়নি অস্ত্রোপচার। এলাকার বাসিন্দা অনুপমা দত্ত, সায়ন্তিকা রায় বলেন, “প্রসূতির অবস্থা একটু জটিল হলেই হাসপাতাল থেকে তাকে ‘রেফার’ করে দেওয়া হয়।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, ১৯৮২ সাল থেকে ২০১১- এই ঊনিশ বছরে শুধুমাত্র অস্ত্রোপচারের পরিষেবা পাওয়ার আশ্বাসই শুনে আসছেন তাঁরা। তাঁরা জানান, রাজ্যে সরকার বদলের পর পরিস্থিতি বদলাবে হলে ভেবেছিলেন তাঁরা। আশা ছিল, হয়তো তালা খুলবে অস্ত্রোপচারের ঘরের। কিন্তু ‘পরিবর্তনের’ এক বছর কেটে গেলেও ওটির অবস্থা একই থেকে গেল।
—নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, বছর তিনেক আগেও ওই হাসপাতালের উপর সাধারণ মানুষের ভরসা ছিল না। বছরে ১০০টিও স্বাভাবিক প্রসব হত না সেখানে। এর পর, রোগী টানতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলকোটের বিভিন্ন জায়গায় হাসপাতালের বিজ্ঞাপন দেন। তাতে হাল কিছুটা ফিরেছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, গত বছর ৫০০টি স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে হাসপাতালে। এ বছর সেই সংখ্যা ছাড়াতে পারে। হাসপাতাল সুপার শিশিরকুমার নস্কর বলেন, “যে হারে প্রসবের চাপ বাড়ছে, তাতে প্রসূতিদের জন্য অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরি।” তিনি জানান, গত বছর কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল থেকে অস্ত্রোপচারের সরঞ্জামও নিয়ে এসেছিলেন তিনি। তা সত্ত্বেও চালু করা যায়নি অস্ত্রোপচার। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসূতি চিকিৎসক থাকলেও অ্যানেস্থেসিস্ট চিকিৎসক ছিলেন না কোনও। প্রায় দেড় বছর আগে জেলা স্বাস্থ্য দফতর এক চিকিৎসককে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে অ্যানেস্থেশিয়ার জন্য চার মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন। হাসপাতাল সুপার বলেন, “প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ওই চিকিৎসক কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে দু’মাস হাতে কলমে শিক্ষা নিয়ে এসেছেন। তা সত্ত্বেও অস্ত্রোপচারের সময়ে রোগীকে অচেতন করতে তিনি ভয় পাচ্ছেন। তাঁর মনোভাবের কথা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের জানিয়েছি।” জেলার সহকারি স্বাস্থ্য আধিকারিক (কাটোয়া) শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এক জন বিশেষজ্ঞ অ্যানেস্থেসিস্ট দিয়ে ওটি চালুর চিন্তাভাবনা রয়েছে। একবার ওটি চালু হয়ে গেলে ওই চিকিৎসক মনে জোর পাবেন। তখন আর অসুবিধা হবে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.