হস্টেল থেকে বাড়ি ফেরার পথে উধাও হয়ে যায় বীথিকা (আসল নাম নয়।)। অনেক খুঁজেও না পেয়ে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে বলে সন্দেহ করে তাঁর পরিবার। পুলিশে অভিযোগ জানান তাঁরা। ঘটনার তিন দিনের মাথায় তরুণীর খোঁজ মিলল মহারাষ্ট্রের নানদেব-এ। ‘ফেসবুক’-এর বন্ধু অমিতকে (আসল নাম নয়) বিয়ে করতে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ট্রেন ধরে সে পাড়ি দেয় মহারাষ্ট্রে। তাঁকে উদ্ধারের জন্য নানদেব থানার সঙ্গে ইতিমধ্যে যোগাযোগ করেছে শিলিগুড়ি পুলিশ। শিলিগুড়ির ডেপুটি কমিশনার ও জি পাল বলেন, “ওই তরুণীকে অপহরণ করা হয়েছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ঘটনার তদন্তের আমরা জানতে পেরেছি মহারাষ্ট্রে সে রয়েছে। তাঁকে উদ্ধার করা হবে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির দেশবন্ধু পাড়ায় বীথিকার বাড়ি। সে গ্যাংটকের একটি বোর্ডিং স্কুলে পড়াশোনা করে। বৃহস্পতিবার সকালে বীথিকা বাড়ি আসবে বলে হস্টেল থেকে রওনা হয়। গ্যাংটক থেকে রওনা হওয়ার পর থেকে শিলিগুড়ি মহানন্দা সেতু পর্যন্ত অন্তত তিনবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে সে। তার পর থেকেই বীথিকার ‘মোবাইল সুইচ’ বন্ধ হয়ে যায়। বার বার চেষ্টা করেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তাঁর অভিভাকরা। বন্ধু, আত্মীয়ের বাড়িতে খোঁজ করে তাঁর খোঁজ না পেয়ে শুক্রবার ওই তরুণীর মা শিলিগুড়ি থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে, দুপুর সাড়ে ৩টা নাগাদ মহানন্দা সেতুতে থাকার সময় সে মোবাইলের সুইচ অফ করে দেয়। পরে এনজেপি এলাকার একটি এটিএম কাউন্টার থেকে সে সাড়ে ১১ হাজার টাকা তোলে। ঘটনার এক তদন্তকারী পুলিশ অফিসার বলেন, “এনজেপি এলাকার এটিএম কাউন্টার থেকে টাকা তোলার ঘটনা জানার পরই সে পালিয়ে গিয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ হয়। সেভাবেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।” পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ছাত্রীর ‘মোবাইল কল লিস্ট’ ঘেঁটে তদন্তকারী অফিসাররা মাহারাষ্ট্রের এক নম্বরের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে বলে জানতে পারে। যে দিন গ্যাংটক থেকে বীথিকা রওনা হয় ওইদিন মহারাষ্ট্রের নম্বরে বার কয়েক যোগাযোগ করে সে। ওই নম্বরে যোগাযোগ করে পুলিশ বুঝতে পারে আসল ঘটনা। পুলিশ জানায়, মাস কয়েক আগে মহারাষ্টের অমিতের সঙ্গে ‘ফেসবুক’-এর মাধ্যমে অমিতের বন্ধুত্ব হয়। অমিতের টানেই মহারাষ্ট্র যাওয়ার পরিকল্পনা করে বীথিকা। বৃহস্পতিবার সকালে গ্যাংটক থেকে একটি ছোট গাড়িতে সে শিলিগুড়ি রওনা হয়। এনজেপি থেকে রওনা হওয়ার আগে যাতে তাঁর অভিভাবকরা বিষয়টি বুঝতে না পারেন এ জন্য তাঁদের বাড়ি যাওয়ার কথা জানায় বীথিকা। এক পুলিশ কর্তা বলেন, “ফেসবুকের বন্ধুর টানেই সে মহারাষ্ট্র যায়। তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। ওই তরুণী ভাল আছে। যে বাড়িতে সে রয়েছে তাঁদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। শীঘ্রই ওই তরুণীকে উদ্ধার করে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।” |