দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে সম্প্রতি পূর্ব রেলের বনগাঁ-শিয়ালদহ শাখার বনগাঁ ও চাঁদপাড়ার মধ্যে ডবল লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় নিত্যযাত্রীরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন। ট্রেনে যাতায়াতে আগের চেয়ে সময় কম লাগছে। কিন্তু দুর্ভোগ থেকে পুরোপুরি রেহাই মেলেনি। এর প্রধান কারণ, ট্রেনের সংখ্যা সে ভাবে না বাড়ায়। ফলে, ভিড়ের হাত থেকে রেহাই মিলছে না যাত্রীদের। তাঁরা ট্রেন বা ট্রেনে কামরার সংখ্যা বাড়ানোর দাবি তুলেছেন।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সমীর গোস্বামী বলেন, “নিয়মিত ভাবে না হলেও ট্রেনের সংখ্যা মাঝেমধ্যে বাড়ানো হয়।” তবে, কামরা কম থাকার জন্য সমস্যার কথা তিনি মেনে নিয়েছেন।
বনগাঁ-শিয়ালদহ ৭৬ কিলোমিটার রেলপথের মধ্যে রয়েছে ২৪টি স্টেশন। তার মধ্যে চাঁদপাড়া, বিভূতিভূষণ হল্ট এবং বনগাঁ এই তিনটি স্টেশনের মধ্যে ১০ কিলোমিটার পথে ট্রেন চলত একটি মাত্র লাইনে। দীর্ঘদিন ধরে ওই তিন স্টেশনের যাত্রীদের দাবি ছিল, ডবল লাইনের। |
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৩-২০০৪ সালের রেল বাজেটে তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ডবল লাইনের কাজের কথা ঘোষণা করেন। ওই কাজ শুরু হয় ২০০৯-২০১০ সালে। ওই কাজ সম্প্রতি শেষ হওয়ায় বনগাঁ ও শিয়ালদহে মধ্যে ডবল লাইনে বৈদ্যুতিক ট্রেন চলছে। বর্তমানে সারা দিনে চলে ৩১ জোড়া ট্রেন।
ডবল লাইনে ট্রেন চললেও এখনও প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যায় বহু মানুষকে লোকাল ট্রেনগুলিতে বাদুড়ঝোলা হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে দেখা যায়। এ জন্য রেল লাইনের ধারের বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা লেগে মৃত্যু বা জখম হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ভিড় ট্রেনে যাত্রীদের একাংশের রুমাল, দেশলাই বা সিগারেটের প্যাকেট দিয়ে সিট ‘বুক’ করে রাখার প্রবণতাও রয়েছে। যা বহু যাত্রীরই বিরক্তি এবং দুর্ভোগের কারণ হয়। এ জন্য মাঝেমধ্যে গোলমালও বাধে। বনগাঁ জিআরপি সূত্রে জানানো হয়েছে, এমন কোনও অভিযোগ আসেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিষয়টি জানা গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে, ডবল লাইনে ট্রেন চলায় মোটের উপরে খুশি নিত্যযাত্রীরা। কলকাতায় ওষুধের ব্যবসার কাজে বনগাঁ লোকালে নিয়মিত যাতায়াত করেন বনগাঁর বাসিন্দা শঙ্কর দাস। তিনি বলেন, “আগে বনগাঁ থেকে শিয়ালদহ যেতে আড়াই থেকে পৌনে ৩ ঘণ্টা সময় লাগত। ডবল লাইন চালু হওয়ায় এখন সময় লাগছে ২ ঘণ্টা ১০ মিনিটের মতো।” বনগাঁ লোকালের ফল বিক্রেতা অমল বিশ্বাসের কথায়, “ট্রেন দ্রুত চলায় বেশি ফল বিক্রি করতে পারছি। ব্যবসা বেড়েছে।” |