টোলগে-সমস্যার সমাধান কবে জানা নেই। কলকাতা লিগে ম্যাচ না খেলায় আবার পয়েন্ট খোয়ানোর আশঙ্কা। পরপর ঘটনায় আইএফএ-র উপর ক্ষুব্ধ মোহনবাগান যে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে সোমবার পরিষ্কার করে দিলেন মোহনবাগান সচিব। জানালেন, আইএফএ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথাও ভাবছেন।
কলকাতা লিগ কমিটি-র সভায় যাই সিদ্ধান্ত হোক, মোহনবাগান কর্তাদের রাগ তাতে বিন্দুমাত্র কমছে না। বরং যত দিন যাচ্ছে, টোলগে-সমস্যার জেরে আরও তিক্ত হচ্ছে আইএফএ-মোহনবাগান সম্পর্ক। সোমবার সন্ধ্যায় ক্লাব তাঁবুতে বসে অঞ্জনবাবু বলেন, “এএফসি বা ফিফা চায় না আমরা রাজ্য লিগ খেলি। শতাব্দীপ্রাচীন আইএফএ-র ঐতিহ্যের কথা ভেবেই আমরা ঘরোয়া লিগে খেলি। সে রকম হলে আমরা আইএফএ থেকে বেরিয়ে যাব। তাতে কি আইএফএ-র গৌরব বাড়বে?” সত্যিই যদি মোহনবাগান আইএফএ-র অনুমোদন ত্যাগ করে, তা হলে ক্লাবের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে তা নিয়ে এখনই ভাবছেন না কর্তারা। সে ক্ষেত্রে অন্য কোনও রাজ্য সংস্থায় নথিভুক্ত করাতে হতে পারে ক্লাবকে।
সোমবার সন্ধ্যায় মোহনবাগান তাঁবুতে সচিব অঞ্জন মিত্র-র গলায় অভিযোগের সুর। বলছিলেন, “আমরা আইএফএ-র অত্যাচারের শিকার। ম্যাচ পিছোতে বলেছিলাম, ফুটবলাররা জাতীয় শিবিরে আছে বলে। তা সত্ত্বেও ম্যাচটা ওই দিনই রাখা হল। এ বার ওরা যদি পয়েন্ট কাটে আমরা তার জন্য তৈরি।” অঞ্জনবাবু আরও যোগ করেন, “এআইএফএফ থেকে এএফসি সব সংস্থার কাছেই ম্যাচ পিছনোর জন্য বলা যায়। এতে আইন ভাঙা হয় না।” ফলে, পয়েন্ট কাটার ব্যাপারেও চাপ বাড়ল আইএফএ-র উপর।
২৬ অগস্টের টালিগঞ্জ অগ্রগামী ম্যাচটাও মোহনবাগান ফুটবলার না থাকার যুক্তিতেই খেলতে চায় না। তবে কর্তাদের রাগের মূল কারণ যে টোলগে সমস্যার দ্রুত সমাধান না হওয়া, সেটা বোঝা গেল সচিবের কথাতেই। বলছিলেন, “একটা ছেলে দিনের পর দিন মানসিক কষ্টে আছে। কবে খেলতে পারবে জানে না। আইএফএ সেই সমস্যার তাড়াতাড়ি সমাধান করছে না। আবার যে ম্যাচ পিছোতে বললাম, তাতে অনুপস্থিত থাকার জন্য পয়েন্ট কাটা হবে কি না তাই নিয়ে মিটিং হবে। এটা তো অন্যায়ই।”
মোহনবাগানের আইএফএ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকিতে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ইস্টবেঙ্গল সচিব কল্যাণ মজুমদার। তাঁর কথায়, “অন্য ক্লাব কী সিদ্ধান্ত নেবে, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না।” আইএফএ সচিব উৎপল গঙ্গোপাধ্যায়ও মোহনবাগানের আরও বড় লড়াইয়ে যাওয়ার হুমকি নিয়ে কোনও মন্তব্যে যেতে নারাজ। বলছিলেন, “ওরা তো আমাদের সরকারি ভাবে এখনও কিছু জানায়নি। যা জেনেছি সংবাদমাধ্যমে। এ নিয়ে কিছু বলব না।” তবে তাঁর আশা টোলগে-সমস্যার সমাধান দ্রুতই হবে। উৎপলবাবু জানান, মঙ্গলবারই হয়তো লিগ কমিটির সভা ডাকা সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে মোহনবাগানের পয়েন্ট কাটা হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত ঝুলে থাকবে বুধবার পর্যন্ত।
ফেডারেশন কাপে নামার আগে কলকাতা লিগে না খেললে কি প্রস্তুতিতে খামতি থেকে যাবে? মানছেন না কোচ বা সচিব। সোমবার অনুশীলনের পর কোচ সন্তোষ কাশ্যপের কথায়, “আমার ছেলেরা ম্যাচ খেলার জন্য তৈরি।” ফেডারেশন কাপের আগে মোহনবাগানের প্রস্তুতির জন্য রয়েছে এয়ারলাইন্স গোল্ড কাপ, সিকিম গোল্ড কাপ। সেপ্টেম্বরে শ্রীনগরেও দু’টো ম্যাচ খেলতে যাবে তারা। ঘরের মাঠে মোহনবাগান না খেললে সমর্থকরা যে বঞ্চিত হবেন সে কথা অবশ্য মানছেন সচিব। তিনি জানান, কলকাতায় তো ক্লাব খেলতে চায় কিন্তু সেটা ক্লাবের প্রতি অন্যায় মেনে নিয়ে নয়। ফুটবলারের সম্মান বিকিয়ে দিয়ে নয়। |