ভারতীয় ফুটবলে শুরু হচ্ছে ডাচ যুগ
ইম জেকোবাস কোভারম্যান্স। নেদারল্যান্ডসের এই কোচের হাত ধরেই ভারতীয় ফুটবলে শুরু হতে চলেছে ডাচ জামানা। আটচল্লিশ ঘণ্টা পরেই নেহরু কাপে দল নিয়ে প্রথম পরীক্ষায় নামতে চলেছেন তিনি। নতুন এক ঝাঁক ফুটবলার নিয়ে যুদ্ধে নামতে হচ্ছে তাঁকে। কিছুটা টেনশন থাকলেও আত্মবিশ্বাসী তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে টুর্নামেন্টে নিয়ে তাঁর প্রথম সরকারি সাংবাদিক সম্মেলন। গ্রেটার নয়ডার জেপি গ্রিনস মাঠে অনুশীলনে নামার আগে আনন্দবাজারের প্রশ্নের মুখে ইউরো কাপ জয়ী দলের প্রাক্তন ডিফেন্ডার। কিছু প্রশ্নের উত্তর দিলেন। কিছু এড়িয়ে গেলেন।

প্রশ্ন: ভারতীয় ফুটবলে তা হলে ডাচ যুগ শুরু হয়ে গেল? ইউরো কাপে দেখা নেদারল্যান্ডসের কোনও প্রভাব দেখা যাবে আপনার টিমে?
কোভারম্যান্স: আমি মাত্র কিছু দিন হল দায়িত্ব নিয়েছি। কোনও কিছুর প্রভাব ব্যাপারটাকে আমি গুরুত্ব দিই না। আসল ব্যাপারটা হচ্ছে আমরা কীভাবে খেলছি, অথবা খেলতে চাই সেটাই বড় ব্যাপার। তবে কিছু পরিবর্তন তো হতেই পারে।

প্র: আপনার টিমের ফর্মেশনটা ঠিক কী হবে?
কোভারম্যান্স: আমি যেটা রপ্ত করানোর চেষ্টা করছি সেটা ৪-৫-১ বা ৪-৩-৩। তবে এটার যে বদল হবে না তা নয়। দেখতে হবে বিপক্ষ কী রকম খেলছে। আমরা কী অবস্থায় নামছি। সেক্ষেত্রে দু’জন স্ট্রাইকার নিয়েও নামতে পারি।

প্র: বব হাউটন ভারতকে দু’টো নেহরু কাপ চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। ববের সাফল্যের ছায়ার নীচে দাঁড়িয়ে এ বার হ্যাটট্রিকের সুযোগ। সেটা কি মাঠে নামার আগে বাড়তি চাপ আপনার কাছে? বিশেষ করে হাউটনের চেয়ারে যখন আপনি?
কোভারম্যান্স: চাপ তো আছেই। থাকবেও। ভারতের সবাই চাইবে হ্যাটট্রিক করতে। আমিও সবাইকে বলছি দেশকে জেতাতে মাঠ ভর্তি করে আসুন। তবে সবাই যেন বাস্তব পরিস্থিতিটাও মনে রাখে। ভারত নেহরু কাপ জিতেছিল অনেক আগে। যারা জিতিয়েছিল তাদের বেশিরভাগই এই টিমে নেই। ফলে একেবারে নতুন এক ঝাঁক ছেলেকে নিয়ে আমি নামছি। ফলে চ্যালেঞ্জটা আগের দুটো নেহরু কাপের চেয়ে অনেক বেশি। শুরুতে সবাই জিততে চায়। শেষ পর্যন্ত কেউ বেশি ম্যাচ জেতে। কেউ পারে না। যারা জেতে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়। ফলে আমাদের শুরুটা ভাল করতে হবে।
অধিনায়ক হলেন সুনীল
প্র: এ বারের নেহরু কাপ জেতার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী সেটা কিন্তু বললেন না।
কোভারম্যান্স: আমাদের লক্ষ্য অনেক উপরে। ছেলেরা যা অনুশীলন করেছে বা খেলছে তাতে আশাবাদী হওয়াই যায়। ওদের কমিটমেন্ট সত্যিই আমাকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে। নিজেদের মাঠে এ রকম সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। ছেলেদেরও সেটা বলেছি।

প্র: নেহরু কাপে যাদের বিরুদ্ধে খেলবেন তাদের সম্পর্কে আপনার ধারণা?
কোভারম্যান্স: বুধবার যাদের সঙ্গে আমরা প্রথম ম্যাচ খেলতে নামব সেই সিরিয়া টিমের একটা সিডি দেখেছি। তবে সেটা এখনকার নয়। যে কোনও দলেরই পুরানো খেলার রেকর্ডিংয়ের চেয়ে বর্তমান খেলা ভাল হয়। এখানে আমরা সব ক’টা দলকে দেখতে পাব। তবে সিরিয়া যেহেতু প্রথম নামছে তাই ওদের আগের খেলাটার উপর ধারণা নিয়েই আমাদের নামতে হবে। পরে প্রয়োজন হলে বদলাতে হবে। ই মেলে ওদের কিছু খোঁজ খবরও জেনেছি।

প্র: যে টিমগুলো খেলতে আসছে তাদের মধ্যে ক্যামেরুন আর সিরিয়া-ই খাতায় কলমে বেশি শক্তিশালী। দু’টো দলের মধ্যে কাকে সামলানো বেশি কঠিন?
কোভারম্যান্স: সেটা বলা খুব কঠিন। কারণ টিমগুলোয় কারা আসছে তা জানি না। তবে ফুটবলের ট্র্যাডিশন অনুযায়ী বলতে পারি দু’টো দলই শক্তিশালী।

প্র: সপ্তাহ তিনেকের শিবির করেছেন। ছেলেদের পারফরম্যান্সে আপনি খুশি?
কোভারম্যান্স: ছেলেরা যে ভাবে আমার ভাবনায় সাড়া দিয়েছে তাতে আমি খুশি। আমরা দুটো অনুশীলন ম্যাচ খেলেছি। যথেষ্ট ভাল খেলেছে দল। সব টুর্নামেন্টে প্রথম ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। সিরিয়া আমাদের চেয়ে র্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে। ওই ম্যাচটা জিততে হবে। আমরা যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস নিয়ে শুরু করতে চাই। দেখা যাক....।

প্র: আপনার টিমের অধিনায়ক কি সুনীল ছেত্রীই থাকছেন? না অন্য কেউ?
কোভারম্যান্স: সুনীলকেই আমি অধিনায়ক হিসাবে বেছেছি। কাল সাংবাদিক সম্মেলনে আমার পাশে ও থাকবে।

প্র: বব হাউটন লং বল স্ট্র্যাটেজিতে খেলাতেন ভারতকে। আপনার স্ট্র্যাটেজি কী? নতুন কোনও পরিবর্তন কি দেখতে পাওয়া যাবে?
কোভারম্যান্স: নিশ্চয়ই। আমি পজেশনাল ফুটবল খেলাতে চাই। যাতে পুরো টিমের গতি বাড়ে সেটাই আমার লক্ষ্য। বলতে পারেন কুইক অ্যান্ড ফাস্ট। মাটিতে বল রেখে খেলতে হবে। পুরোটাই যে বদলাচ্ছে তা বলব না। তবে কিছু বদল হবেই। সুনীল-নবিরা ম্যাচ খেলতে নামলে সেটা হয়তো দেখতে পাবেন।

প্র: বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম শ্রদ্ধেয় কোচ ও নেদারল্যান্ডস ফুটবলের স্বর্ণযুগের স্থপতি রেনাস মিশেলের কোচিংয়ে আপনি জাতীয় দলে খেলেছেন। তাঁর প্রভাব কি পড়বে আপনার কোচিংয়ে? মানে আপনার কোচিং দর্শনটা কার মতো?
কোভারম্যান্স: রেনাস মিশেলকে আমি শ্রদ্ধা করি। তবে কার স্ট্র্যাটেজি বা ট্যাকটিক্স আমি ফলো করি সেটা বলা কঠিন। কোনও একজনের নাম করতে চাই না। বিশ্ব ফুটবলে প্রতিদিন কিছু না কিছু বদল হচ্ছে। সেখান থেকে সবাই শেখে। কে কোনটা নেবে সেটা তার উপরই নির্ভর করছে। আসলে দেখতে হবে আমার টিমের ছেলেরা কোন স্ট্র্যাটেজি বা ট্যাকটিক্সের সঙ্গে মানানসই।

প্র: কয়েক দিন আগে কলকাতায় এসে আপনার খেলোয়াড় জীবনে জাতীয় দলের সতীর্থ রুদ খুলিট বলে গিয়েছেন, ভারতীয় ফুটবল আপনার হাতে সুরক্ষিত। আপনার প্রতিক্রিয়া?
কোভারম্যান্স: খুলিট খুব ভাল মনের মানুষ। ওর সঙ্গে ভারতে আসার পর কথা হয়নি। ওর সার্টিফিকেট পেয়ে ভাল লাগছে।

প্র: আপনি ভারতের ফুটবল বদলাতে এসেছেন। আপনার দেশের টিমের হাল এত খারাপ কেন?
কোভারম্যান্স: আমি এখন ভারতের কোচ। ভারত নিয়েই প্রশ্ন করলে খুশি হব।

ভারতের সবাই চাইবে হ্যাটট্রিক করতে। তবে সবাই যেন বাস্তব পরিস্থিতিটাও মনে রাখে। ভারত নেহরু কাপ জিতেছিল অনেক আগে। যারা জিতিয়েছিল তাদের বেশির ভাগই এই টিমে নেই। একেবারে নতুন এক ঝাঁক ছেলেকে নিয়ে আমি নামছি।
কোভারম্যান্স: অভিযান শুরু




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.