অস্ট্রেলিয়ার মাঠে দাপট কোন্নগরের ছেলের
বঙ্গ ক্রিকেটের নতুন রবি
স্ট্রেলিয়ার মাঠে অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে সোমবার পাকিস্তানকে হারাল ভারত। আর সেই জয়ে অন্যতম নায়ক হয়ে থাকল স্থানীয় ক্রিকেটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলতে থাকা এক তরুণ।
মহারাষ্ট্রের মহসিন সঈদ চোটের জন্য ছিটকে না গেলে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে যার থাকারই কথা নয়। কারণ প্রাথমিক ভাবে ভারতের যে দল ঘোষণা হয়েছিল তাতে তার নাম ছিল না। পড়ে পাওয়া সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাংলার রবিকান্ত সিংহ-ই এখন চলতি অনূর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপে ভারতের সফলতম বোলার। তিন ম্যাচে ৯ উইকেট। আগের ম্যাচেই পাপুয়া নিউ গিনির বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেট শিকার রয়েছে। সোমবার পাকিস্তানকে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে এক উইকেটে হারিয়ে যে সেমিফাইনালে উঠল ভারত, তার অন্যতম নায়ক রবিকান্ত। প্রথমে ব্যাট করা পাকিস্তানকে ভাঙে বাংলার মিডিয়াম পেসার এবং সন্দীপ শর্মা। দু’জনেই নেয় তিনটে করে উইকেট।
সিংহ বিক্রম। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও এক শিকার রবিকান্তের। ছবি: গেটি ইমেজেস
কোন্নগরের রবিকান্তকে খুব কাছ থেকে দেখছেন বাংলার জুনিয়র বিভাগের কোচ গৌতম সোম (জুনিয়র)। বাংলার অনুর্ধ্ব ১৬ এবং ১৯ দু’টো টিমেরই দায়িত্বে যিনি। গত চার বছর ধরে রবিকান্ত তাঁরই অধীনে। কোচ কিন্তু সমস্ত কৃতিত্ব দিচ্ছেন ছাত্রকে। “ছেলেটার পরিশ্রম করার ইচ্ছেটা চোখে পড়ার মতো। আজ যা কিছু ও করতে পারছে সেটা ওর খাটনির পুরস্কার,” বলছিলেন বাংলার প্রাক্তন ক্রিকেটার। স্বচ্ছল পরিবার থেকে আসায় ক্রিকেটের ব্যয়বহুলতার সঙ্গে কখনও যুদ্ধ করতে হয়নি রবিকান্তকে। ক্রিকেটীয় দিক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে গৌতম সোম যোগ করলেন, “বলে জোর আছে। অনুর্ধ্ব১৯ বিশ্বকাপেও ঘণ্টায় ১৩৫-১৪০ কিমি বেগে বল করে যাচ্ছে। ব্যাটের হাতটাও ভাল।” তিনি কী অদলবদল করেছেন? বাংলার জুনিয়র দলের কোচ বললেন, “অ্যাকশনটা মেরামত করার দিকে নজর দিয়েছিলাম। ছেলেটার দ্রুত শেখার ক্ষমতাও আছে। অফ দ্য পিচ দু’দিকে বল মুভ করাতে পারে। ভাল বাউন্সার আছে। এক বছর ধরে খেটে ভাল ইয়র্কারও রপ্ত করেছে।”
রবিকান্ত
সিংহ
সেরা অস্ত্র: নির্ভুল লেংথ। ভাল গতি।
বয়স: ১৮ বছর ১৫৫ দিন।
ক্লাব: ইস্টবেঙ্গল।
সেরা বোলিং: ৫-২১, পাপুয়া নিউগিনির বিরুদ্ধে।
রবিকান্তের ক্লাব সতীর্থরাও রীতিমতো উচ্ছ্বসিত তাঁর পারফরম্যান্সে। ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক অর্ণব নন্দী তুলে আনছেন, রবিকান্তের শেখার অক্লান্ত ইচ্ছের কথা। আর রবিকান্তের বোলিংয়ের সেরা দিকটা কী? অর্ণবের কথায়, “ও এই বয়সে যে গতিতে বল করছে, তা চমকপ্রদ। ওর অদ্ভুত ক্ষমতা আছে একটা নির্দিষ্ট লেংথে টানা বল করে যাওয়া।” গত মরসুমে ইস্টবঙ্গলে খেলা বাংলার প্রাক্তন পেসার শিবশঙ্কর পালও বললেন, “নতুন বলে ও সাঙ্ঘাতিক। পুরনো বলে ততটা নয়।”
বাংলার ৩২ জনের যে প্রাথমিক রঞ্জি দল ঘোষিত হয়েছে তাতে আছে রবিকান্ত। তার ক্লাব এবং রাজ্য দলের কোচ দু’জনেই নিশ্চিত অশোক দিন্দা, সামি আমেদের পর নতুন পেস-অস্ত্র হিসেবে উঠে আসার মশলা রয়েছে রবিকান্তের। অস্ট্রেলিয়ায় অনুর্ধ্ব উনিশ বিশ্বকাপে তারই ঝলক দেখা যাচ্ছে।

পাকিস্তানকে হারিয়ে শেষ চারে ভারত
জেতার জন্য চাই দশটা রান। হাতে মাত্র এক উইকেট। সাঁড়াশি চাপ তৈরি করছে চিরশত্রু পাকিস্তান। এমন রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির মধ্যে এক উইকেটে জয় ছিনিয়ে নিয়ে অনূর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠল ভারত। দুই টেল এন্ডার হরমিত সিংহ এবং সন্দীপ শর্মা জয় নিশ্চিত করার পরে ভারত অধিনায়ক উন্মুক্ত চাঁদ স্বীকার করে নেয়, স্নায়ুচাপে শেষের দিকটায় থরথর করে কাঁপছিল। বলে, “এত নার্ভাস ছিলাম যে গায়ে কাঁটা দিচ্ছিল। এখনও কাঁপছি!” রবিকান্ত সিংহ (৩-৪৩) এবং সন্দীপ শর্মা (৩-২৪) পাকিস্তানকে মাত্র ১৩৬ রানে আটকে রাখার পরে ব্যাট করতে নেমে ৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে ছিল ভারত। বাবা অপরাজিত (৫১) এবং বিজয় জোল (৩৬) পরিস্থিতি সামাল দেয়। কিন্তু ভারতকে ১২৭-৯ করে দিয়ে দারুণ ভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল পাকিস্তান। ম্যাচের শেষ সাত ওভার মাটি কামড়ে পড়ে থেকে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় দশ রান তুলে ফেলে হরমিত ও সন্দীপ। ম্যাচের সেরা হল বাবা অপরাজিত। বৃহস্পতিবার সেমিফাইনালে ভারতের সামনে নিউজিল্যান্ড।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.