নেতৃত্বের সামনেই কাউন্সিলদের ক্ষোভ
খড়্গপুরে অনাস্থা এড়াতে বৈঠক তৃণমূল নেতাদের
ড়্গপুরে তৃণমূল পুরবোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে কংগ্রেস। বোর্ড হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই অবস্থায় দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে রবিবার বৈঠক করলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু সঙ্কট মোকাবিলার বদলে সেই বৈঠকে তৃণমূলের কোন্দল সামনে এল। নেতৃত্বের সামনেই পুরসভার বেশ কিছু কাজকর্ম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন একাংশ কাউন্সিলর। তাঁদের বক্তব্য, দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা না করেই কিছু পদক্ষেপ করেছেন পুরপ্রধান। তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, বৈঠকে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “আলোচনা ফলপ্রসূ। শহরের উন্নয়ন ব্যাহত করতেই কংগ্রেস চক্রান্ত করছে। খড়্গপুরের মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন।”
গত ১৪ অগস্ট তৃণমূল পরিচালিত খড়্গপুর পুরসভার বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছে কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে রবিবার উপপুরপ্রধান তুষার চৌধুরীর বাড়িতে দলীয় কাউন্সিলরদের ডেকে বৈঠকে বসেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ছিলেন দলের জেলা চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মৃগেন মাইতি, জেলা সভাপতি দীনেন রায়, কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ, খড়্গপুর শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরী প্রমুখ। দলের ১৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে পুরপ্রধান জহরলাল পাল-সহ ১৩ জন বৈঠকে ছিলেন। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুরেশ যাদব ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এম শিবশঙ্কর রাও পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কাজের জন্য আসেননি বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিকেল ৫টা নাগাদ বৈঠক শুরু হয়। শেষ হয়ে রাত ৯টা নাগাদ। টানা ৪ ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকের মাঝপথে যোগ দেন জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো।
তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেই অনাস্থা এনেছে কংগ্রেস। তাদের সমালোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন পুরপ্রধান জহরলাল পাল। শহর কংগ্রেস সভাপতি অমল দাসের বক্তব্য, “পুরপ্রধানের মদতেই দুর্নীতি চলছে।” তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে রবিবারের বৈঠকে দলের একাংশ কাউন্সিলরেরও নিশানায় ছিলেন পুরপ্রধান। দলীয় নেতৃত্বের সামনে এক কাউন্সিলর বলেন, “শুরু থেকে দলের সকলের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ হলে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হত না।” জেলা নেতৃত্ব অবশ্য পুরপ্রধানের পাশেই দাঁড়িয়েছেন। দলের এক জেলা নেতার বক্তব্য, “এই দু’বছরে প্রচুর কাজ হয়েছে। খোঁজ নিয়ে দেখেছি, শহরবাসীও পুরসভার কাজকর্মে খুশি।” যদিও প্রলেপ দেওয়া এই বক্তব্যে দলীয় কোন্দল এবং উদ্বেগ ঢাকা পড়ছে না। জেলা নেতৃত্বও একান্তে মানছেন, পরিস্থিতি খুবই জটিল। নিয়ম মতো, ১৫ দিনের মধ্যে বোর্ড মিটিং ডাকতে হবে। বোর্ডের মিটিংয়ে এই প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি হবে। ২৭ না ২৮ অগস্ট, কবে বোর্ড মিটিং ডাকা হবেতা আজ, মঙ্গলবারের মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যেতে পারে।
খড়্গপুরে ৩৫ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। অনাস্থা ভোটে জিততে গেলে কমপক্ষে ১৮ জন কাউন্সিলরের সমর্থন প্রয়োজন। তৃণমূলের রয়েছে ১৫ জন কাউন্সিলর। কংগ্রেসের ১৪। বামফ্রন্টের ৪। বাকি ১ জন নির্দল ও ১ জন বিজেপি’র কাউন্সিলর রয়েছেন। নির্দল কাউন্সিলর সত্যদেও শর্মা কংগ্রেসের পাশে রয়েছেন। অনাস্থা প্রস্তাবে সইও করেছেন। বামেরা প্রাথমিক ভাবে জানিয়েছে, ভোটাভুটিতে তারা যোগ দেবে না। অবস্থান স্পষ্ট করেননি বিজেপি কাউন্সিলরও। বামেরা যদি ভোটাভুটিতে যোগ না-দেয়, সে ক্ষেত্রে অনাস্থা ভোটে জিততে গেলে তৃণমূলের কমপক্ষে ১৬ জন কাউন্সিলরের সমর্থন প্রয়োজন। দলের ১৫ জন কাউন্সিলর রয়েছেন। বাকি একটি ভোট কোথা থেকে আসবে, আলোচনা চলছে তা নিয়ে। তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, পুরবোর্ডের কাজকর্মে অধিকাংশ কাউন্সিলর সন্তুষ্ট। ভোটাভুটি হলে কংগ্রেস হারবে।
আপাতত, দলীয় কোন্দল ঠেকাতেই ‘ব্যস্ত’ তৃণমূল নেতৃত্ব। খড়্গপুর শহরে তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠী রয়েছে। এক দিকে রয়েছেন পুরপ্রধান জহরলাল পালের অনুগামীরা। অন্য দিকে রয়েছেন শহর তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীর অনুগামীরা। দলের জেলা নেতৃত্ব অবশ্য এই ‘দ্বন্দ্বের’ কথা মানতে নারাজ। রবিবারের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, ক্ষোভ-অসন্তোষ দূরে সরিয়ে রেখে দলের সব কাউন্সিলর এক হয়ে কাজ করবেন। এই দু’বছরে কত কাজ হয়েছেতা আরও বেশি করে প্রচার করা হবে। আজ, মঙ্গলবার রাতেও দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসতে পারেন শহর তৃণমূল নেতৃত্ব।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.