সাত মাস কেটে গিয়েছে। গত নভেম্বর মাসে কে বা কারা করলা নদীতে বিষ ঢেলেছিল তা এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে। প্রশাসনের কাছেও করলায় বিষকাণ্ড রহস্যই রয়ে গিয়েছে। গত বছর নভেম্বর মাসে জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া করলায় প্রচুর মাছের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, ফরেনসিক গবেষণাগার সর্বত্রই করলা নদীর জল পরীক্ষা করে এন্ডোসালফান নামে একটি নিষিদ্ধ কীটনাশকের অতিমাত্রায় জলে মিশে যাওয়ার প্রমাণ মেলে। বিষকাণ্ডের পরে মৎস্য দফতর জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করে। ঘটনাটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হস্তক্ষেপ করায় জোরদার প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। পুলিশের তরফেও পৃথক ভাবে তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তে সন্দেহভাজন এক ৬৫ বছরের বৃদ্ধকে গ্রেফতার করে পুলিশ। করলা নদীর মাঝামাঝি এলাকায় গজিয়ে ওঠা একটি ছোট চরে ধান চাষ করেছিলেন ওই ব্যক্তি। যদিও কৃষি দফতর এবং মৎস্য দফতর সে সময়ে সমীক্ষা করে জানিয়ে দেয়, ছোট জায়গায় ধান চাষে ব্যবহার করা কীটনাশকে গোটা নদীতে বিষক্রিয়ার ঘটনা অসম্ভব। দুজন মৎস্যজীবীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। কিন্তু বিষক্রিয়ার কোনও কিনারা হয়নি। পুলিশের তরফে আদালতে একটি চার্জশিটও দাখিল করা হয়। ধৃতরাও জামিনে মুক্তি পেয়ে যান। তার পরে তদন্তের কাজ বেশি দূর এগোয়নি বলে অভিযোগ। নদীতে বিষক্রিয়ার কারণ হিসেবে মাছধরার জন্য বিষ প্রয়োগ করা হয়ে থাকতে পরে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়। নদীর জলের নমুনা পরীক্ষা করে নদীতে অতিমাত্রায় নিষিদ্ধ কীটনাশক এন্ডোসালফান মিশে যাওয়ার প্রমাণ পাওয়ার পরে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া কয়েকটি চা বাগান থেকেও নদীতে বিষ মিশতে পারে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল। ঘটনার আট মাস পরেও কে নদীতে বিষ মিশিয়েছিল, তার স্পষ্ট উত্তর মেলেনি জেলা প্রশাসনের কাছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র বলেন, “এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত রিপোর্ট পাইনি। পুলিশের তরফেও কোনও রিপোর্ট আসেনি।” পুলিশ সুপার সুগত সেন জানিয়েছেন, তদন্তের সময়ে তাঁরা অনেককে জেরা করেন। তিন জন সন্দেভাজনকে গ্রেফতারও করা হয়। এখনও তার তদন্ত চলছে। |