|
|
|
|
দুষ্কৃতীদের গোলমালেই খুন লেবু, অনুমান |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রিষড়া |
দুষ্কৃতীদের গুলিতে বাবা-ছেলের খুনের কারণ নিয়ে পুলিশ এখনও ধন্ধে।
রবিবার রাতে সমর চৈন ওরফে লেবুকে (৩৮) গুলি করে খুন করে দুষ্কৃতীরা। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে লেবুর বাবা জ্যোতিন্দ্রনাথ চৈনও (৭০) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সোমবার রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এসডিপিও (শ্রীরামপুর) রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “সব দিক খোলা রেখে তদন্ত চলছে।”
লেবুর বিরুদ্ধে একাধিক অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ আছে। রিষড়া স্টেশন চত্ত্বরে হকার এবং আশপাশের বিভিন্ন মদ-জুয়ার ঠেক থেকে সে তোলা আদায় করত বলেও অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে পুলিশের খাতায়। শুধু রিষড়া থানাতেই তার বিরুদ্ধে নথিভুক্ত অভিযোগের সংখ্যা ১০টি। এক সময়ে হুব্বা শ্যামলের সাগরেদ ছিল লেবু। পরে রমেশ মাহাতোর দলে ভেড়ে। পুলিশের একটি মহলের বক্তব্য, ইদানীং রমেশের সঙ্গ ছেড়ে সে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছিল। জেলে থাকা অপর এক দুষ্কৃতী নেপু গিরির সঙ্গেও তার সংঘাত হয়।
লেবু এক সময়ে সে সিপিএমের ‘ছত্রচ্ছায়ায়’ ছিল বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। বছর কয়েক আগে রিষড়ার এক প্রভাবশালী সিপিএম নেতার সঙ্গে ‘সম্পর্কের’ অবনতি হওয়ায় তৃণমূলের ‘ঘনিষ্ঠ’ হয়ে ওঠে এই যুবক। লেবুর দ্বিতীয় স্ত্রী পাপিয়া দত্ত চৈন হুগলি জেলা মহিলা তৃণমূলের সম্পাদক।
রিষড়ার দক্ষিণপাড়ায় ইমারতি ব্যবসা ছিল লেবুর। রবিবার সেখানেই ছিল ওই যুবক। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ ৫-৬ জন দুষ্কৃতী এসে লেবুকে লক্ষ্য করে অতর্কিতে গুলি চালাতে শুরু করে। লেবুর বাবাও ছিলেন সেখানে। ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর পিঠে গুলি লাগে। ঘটনাস্থলেই লেবুর মৃত্যু হয়। রিষড়া সেবাসদন হাসপাতালে মারা যান জ্যোতিন্দ্রনাথ।
ঘটনার সময় এলাকাটি অন্ধকারে ডুবে ছিল। স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, ‘অপারেশন’ চালিয়ে পায়ে হেঁটে একটি গলিপথ দিয়ে নবগ্রামের দিকে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। তাদের হাতে বোমাও ছিল। সোমবার সকালে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল) অমিতাভ বর্মা ঘটনার তদন্তে যান।
তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, লেবুকে খুনের পিছনে রমেশের ইন্ধন আছে। কেননা, গত কয়েক বছর ধরে রিষড়া-কোন্নগর-উত্তরপাড়া জুড়ে অসামাজিক কাজকর্ম রমেশই নিয়ন্ত্রণ করে। হুব্বা শ্যমলকে খুনের অভিযোগ ২০১১ সালের ২ জুন থেকে রমেশ জেলবন্দি। পুলিশকর্তাদের দাবি, গরাদের পিছনে থেকেও ‘দাদাগিরি’ বিন্দুমাত্র কমেনি তাঁর। জেলের ভিতরে থেকেই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সে ‘কারবার’ চালিয়ে যাচ্ছে।
পুলিশের একাংশের বক্তব্য, ইদানীং তোলাবাজি অথবা বিভিন্ন ফ্ল্যাটে ইমারতি দ্রব্য সরবরাহ করা নিয়ে রমেশের সঙ্গে লেবুর বিরোধ হয়ে থাকতে পারে। এই খুনের পিছনে রমেশের সাগরেদ নেপু গিরিরও ‘হাত’ থাকতে পারে বলে পুলিশের একাংশের অনুমান। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা। |
|
|
|
|
|