মনোরোগিণী হাসপাতালে উল্টোডাঙা থেকে জগাছায় তুলে
নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ
রাত ১২টা। জনশূন্য, আলো-আঁধারি রাস্তায় এক তরুণীকে উদ্ভ্রান্তের মতো ছোটাছুটি করতে দেখেই দাঁড়িয়ে গেল পুলিশের টহলদার গাড়ি। পুলিশ দেখে অঝোরে কাঁদতে থাকেন তরুণীটি। গাড়িতে তুলে তাঁকে স্থানীয় একটি মহিলা হোমে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা যায়, তরুণী মানসিক ভারসাম্যহীন। পুলিশের কাছে তাঁর পরিবারের অভিযোগ, ওই রাতে মেয়েটিকে গণধর্ষণ করা হয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জগাছা থানার কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপরে গরফা সেতুর কাছে। কয়েক দিন আগেই ওই এলাকার সাঁতরাগাছি সেতুর নীচে ভোরবেলা এক মহিলাকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উঠেছিল। সেই ঘটনায় প্রশ্ন ওঠে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করে রাজ্য মহিলা কমিশন। সেই ঘটনার পরেও ওই এলাকায় পুলিশি টহল যে বাড়েনি, শুক্রবারের ঘটনায় তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তবে এ বার পুলিশ আর আগের মতো অভিযোগকারিণীকে ফিরিয়ে দেয়নি।
হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার অজেয় রানাডের কথায়, “মানসিক ভারসাম্যহীন ওই তরুণীকে উদ্ধার করে হোমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ওঁর পরিবারের পেয়েই গণধর্ষণের মমলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হয়েছে মেয়েটির।”
ঠিক কী ঘটেছিল সে-রাতে?
পুলিশ জানায়, গত ১৭ অগস্ট রাতে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের গরফা সেতুর কাছে গাড়ি নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন জগাছা থানার আইসি সুবীর চক্রবর্তী। নিশুত রাতে রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ওই তরুণীকে ছুটতে দেখেন তিনি। অত রাতে ফাঁকা রাস্তায় তরুণীকে ছুটতে দেখেই সন্দেহ হয় তাঁর। তরুণীটির কোনও বিপদ হয়েছে আশঙ্কা করে গাড়ি থামিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন তিনি। কিন্তু তরুণী পুলিশের কোনও প্রশ্নেরই জবাব দিতে পারেননি। অসংলগ্ন কথা বলতে বলতে অঝোরে কাঁদতে থাকেন। তার পরেই ওই তরুণীকে ডোমজুড়ের একটি মহিলা হোমে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরের দিন অর্থাৎ ১৮ অগস্ট হোম থেকে জগাছা থানায় জানানো হয়, বছর তিরিশের ওই তরুণীর বাড়ি কলকাতার উল্টোডাঙায় গোরাপদ সরকার লেনে। সেই ঠিকানায় যোগাযোগ করে তাঁর পরিবারের লোকেদের ডোমজুড়ের হোমে ডেকে পাঠায় পুলিশ। সেখানে গিয়ে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলেন তাঁর মা। পরে তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে তাঁদেরই এলাকার কয়েক জন যুবক মিলে হাওড়ায় এনে ধর্ষণ করেছে। লিখিত অভিযোগ পেয়েই পুলিশ গণধর্ষণের মামলা রুজু করে এবং ওই তরুণীকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়।
পুলিশি সূত্রের খবর, মেয়ের সঙ্গে বেশ কিছু ক্ষণ কথা বলার পরে ওই তরুণীর মা জানতে পারেন, তাঁদেরই এলাকার পরিচিত একটি ছেলে এবং অন্য দু’জন মিলে ওই তরুণীকে জোর করে গাড়িতে তুলে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের কাছে নিয়ে যায়। তার পরে একটি ভাঙা মন্দিরে হাত বেঁধে তাঁকে ধর্ষণ করে। পরে তারা গরফা সেতুর কাছে মেয়েটিকে ফেলে পালিয়ে যায়।
সোমবার রাতে হাওড়া হাসপাতালে দাঁড়িয়ে ওই তরুণীর মা বলেন, “ও বারবার বলছে, ওর ইজ্জত নেওয়া হয়েছে। পায়েও কাটার দাগ রয়েছে।” তিনি আরও জানান, এলাকারই একটি বাড়িতে যাতায়াত ছিল তাঁর মেয়ের। সেই বাড়িরই একটি ছেলে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে ওই তরুণীকে তুলে নিয়ে এসেছিল। পুলিশ কমিশনার অজেয় রানাডে বলেন, “ওই তরুণীর সঙ্গে কথা বলে পুরো বিষয়টি জানার চেষ্টা চলছে। খোঁজা হচ্ছে অভিযুক্তদেরও।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.