‘নরকের’ নাম বাসস্ট্যান্ড: ধর্মতলা
জমে আছে জল, সঙ্গী আবর্জনার স্তূপও
মে থাকা নোংরা জলের উপরে অস্থায়ী টিকিট কাউন্টার। সেখানেই বসে আছেন দক্ষিণবঙ্গ রাষ্টীয় পরিবহণ সংস্থার কয়েক জন কর্মী। নোংরা জল ভেঙে কাউন্টারে পৌঁছতে হচ্ছে যাত্রীদের। পাশেই ভুটান যাওয়ার বাসের টিকিট কাউন্টার। সেখানে পৌঁছতে গেলে শুধু জল নয়, কাউন্টারের পাশে আবর্জনার স্তূপও পেরোতে হচ্ছে।
এক দিকে নোংরা জমা জল, অন্য দিকে ডাঁই হয়ে থাকা আবর্জনা। সব মিলিয়ে প্রায় নরকের চেহারা নিয়েছে শহরের প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলার সরকারি বাসস্ট্যান্ড। প্রতিদিন কয়েকশো দূরপাল্লার বাস এবং কলকাতা ও শহরতলির বাস ছাড়ে এখান থেকে। আর নোংরা জল-আবর্জনা ডিঙিয়েই বাসে উঠতে হয় যাত্রীদের। নিত্যযাত্রীরা আরও জানাচ্ছেন, বাসস্ট্যান্ডে একটাই যাত্রী-শেড ছিল। সেটিও মেরামতির জন্য গত তিন মাস তালাবন্ধ অবস্থায় পড়ে। কাজেই বৃষ্টি পড়লে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভেজা ছাড়া উপায় নেই।
পুরুলিয়ার বাস ধরতে এসে এ রকমই অভিজ্ঞতা ব্যাঙ্ককর্মী তাপস গঙ্গোপাধ্যায়ের। তাপসবাবু বলেন, “অসুস্থ মাকে নিয়ে পুরুলিয়া যাচ্ছিলাম। দেড় ঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করেছি। নোংরা জল ডিঙিয়ে টিকিট কাটতে যেতে হয়েছে। ধর্মতলার বাসস্ট্যান্ডের হাল পুরুলিয়া বাসস্ট্যান্ডের থেকেও খারাপ।”
ছবি: সুদীপ আচার্য
ধর্মতলা বাসস্ট্যান্ডে প্রতিদিন ভোর সাড়ে চারটে থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত দুর্গাপুর, পুরুলিয়া, সিউড়ি, শিলিগুড়ি ও আসানসোল-সহ নানা জায়গার বাস ছাড়ে। বিমানবন্দরগামী ভূতল পরিবহণের বাতানুকূল বাসও ছাড়ে এখান থেকে। আর সেই ব্যস্ত জায়গার এই দুরবস্থা। যাত্রীদের তো বটেই, বাসস্ট্যান্ডের কর্মীদেরও জমা জল ও আবর্জনার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সিএসটিসি-র স্টার্টার অসীম ভট্টাচার্য বলেন, “সামান্য বৃষ্টিতেই এই অবস্থা। অন্যান্য বার জল জমলেও দু’তিন ঘণ্টায় নেমে যায়। এ বার নিকাশি নালাগুলির অবস্থা এতটাই খারাপ যে, জল কিছুতেই নামছে না। চালক, কন্ডাক্টরদেরও জল ডিঙিয়ে কাজ করতে হচ্ছে।”
ভূতল পরিবহণের এক কর্মীর অভিযোগ, “সাধারণ মানুষ যেখানে-সেখানে প্লাস্টিকের কাপ ফেলেন। আমরা নিজেরাই খরচ করে আমাদের টিকিট কাউন্টারের সামনের অংশ পরিষ্কার করি। কিন্তু নিকাশি নালা পরিষ্কার করব কী ভাবে?” একই মত সিএসটিসি-র টিকিট কাউন্টারের কর্মীদেরও। এক কর্মী জানালেন, তাদের সাফাইকর্মীরা বাসস্ট্যান্ডের কিছু জায়গা পরিষ্কার করেন। কিন্তু নিকাশি নালা পরিষ্কার করার দায়িত্ব তাদের নয়। কিন্তু নিকাশির এই বেহাল ছবি বদলানোর দায়িত্ব তা হলে কার? এ নিয়ে একে অপরের উপরে দায় চাপাচ্ছে পুরসভা, পিডব্লিউডি ও পরিবহণ দফতর। কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (নিকাশি) রাজীব দেব বলেন, “ওই বাসস্ট্যান্ডের নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক করার দায়িত্ব আমাদের নয়। সম্ভবত পিডব্লিউডি-র। আমরা এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।”
অন্য দিকে, পিডব্লিউডি-র সিটি ডিভিশনের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কনকরঞ্জন সিংহের কথায়, “আমরা এর দায়িত্বে নেই। ওই বাসস্ট্যান্ডের নিকাশির দায়িত্ব রাজ্যের পরিবহণ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের।” পরিবহণসচিব বি পি গোপালিকা বলেন, “ওই বাসস্ট্যান্ডে জল জমার কথা নয়। জমলেও দ্রুত নেমে যায়। এ বছর কেন এ অবস্থা, তা খোঁজ নিয়ে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা হবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.