ট্রাকের সঙ্গে ভ্যানের মুখোপুখি ধাক্কায় বৃহস্পতিবার ভোরে বীরভূমের দুবরাজপুরে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১৩ জন। তাঁরা তারাপীঠে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন। এই দিনই নদিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় মায়াপুর মোড়ে দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন দু’জন। ওই ঘটনায় আহত হয়েছেন ৩৭ জন। প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ, দু’টি বাসের রেষারেষির ফলেই ওই দুর্ঘটনা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এই দিন ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ পানাগড়-দুবরাজপুর ১৪ নম্বর রাজ্য সড়ক দিয়ে ১৬ জন যাত্রী নিয়ে ইলামবাজার থেকে দুবরাজপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি ভ্যান। যাত্রীরা বক্স বাজিয়ে নাচানাচিও করছিলেন বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। ওই রাস্তায় জয়দেব মোড় পার হওয়ার পরেই উল্টো দিক আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে ভ্যানটির। ভ্যানটি কার্যত চুরমার হয়ে গিয়েছে। যাত্রীরা রাস্তায় ছিটকে পড়েন। ঘটনাস্থলেই মৃতু হয় তিনজনের। তাঁদের নাম বরুণ বারুই (৩৮), দীনেশ ঘরামি (৫৭) ও শ্যামল মণ্ডল (৪৩)। বরুণবাবু ও শ্যামলবাবুর বাড়ি নিউ টাউন থানার প্রমোদগড়ে। দীনেশবাবুর বাড়ি জ্যোতিনগরে। তবে দুবরাজপুর থানার নাইট পেট্রোল গাড়ি ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকায় উদ্ধার কাজ শুরু করতে দেরি হয়নি। পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা যাত্রীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। সিউড়ি সদর হাসপালের সুপার মানবেন্দ্র ঘোষ বলেন, “আহতদের মধ্যে চার পাঁচজনের আঘাত গুরুতর। প্রয়োজনে দু’ একজনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হতে পারে।” |
স্থানীয় সূত্রে ও আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, তাঁরা কলকাতার বাগুইহাটি জগৎপুরের প্রমোদগড়ের একটি অস্থায়ী বাজারে সব্জি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা এই দিন ভ্যান ভাড়া করে তারাপীঠে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন। যাত্রীদের অধিকাংশই ওই এলাকারই বাসিন্দা। বাগুইহাটির বাসিন্দা সুপ্রভাস দত্ত বলেন, “প্রতি বারের মতো পুরোহিত নিয়ে তারাপীঠে কৌশিকী অমাবস্যার পুজো দিতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ ট্রাকের সঙ্গে আমাদের গাড়ির ধাক্কা লাগল। তারপর আর কিছু মনে নেই।” পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পর থেকে ট্রাকের চালক পলাতক।
এই দিন সকালে নদিয়ায় দুর্ঘটনায় মৃতদের নাম বন্দনা ঘোষ (৩৩) ও সুশান্ত বিশ্বাস (৩০)। আহত হয়েছেন ৩৭ জন। তাঁদের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দেবব্রত দত্ত বলেন, “আহতদের মধ্যে ১৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।” প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, এদিন সকালে বেলপুকুর ও ধর্মদাগামী দু’টি বাস একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার জন্য প্রচণ্ড জোরে চলছিল। তখনই বেলপুকুরগামী বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বড় লরিতে ধাক্কা দেয়।
ধর্মদাগামী বাসটি আবার বেলপুকুরের বাসটিকে ধাক্কা দেয়। নদিয়া জেলা বাস মালিক পরিচালন সমিতির সদস্য কুণাল ঘোষ অবশ্য রেষারেষির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক মলয় রায় বলেন, “কী কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে কোনওরকম রেষারেষি হয়ে থাকলে, তা বরদাস্ত করা হবে না।”
এ দিন মুর্শিদাবাদের বড়ঞা এলাকায় কুলি-কান্দি রাজ্য সড়কের উপর কুমড়াই মোড় সংলগ্ন এলাকাতেও একটি বাস দুর্ঘটনায় এগারো জন মহিলা সহ মোট ৩২ জন যাত্রী জখম হয়েছেন। জোরে চলতে চলতে বাসটি আচমকা ব্রেক কষলে উল্টে যায়। যাত্রীদের দাবি, চালক মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, চালক পলাতক। |