অর্থ সঙ্কটের কারণে জাতীয় সড়কগুলির মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে সমস্যা ক্রমেই বাড়ছে। তা কাটাতে এ বার বেসরকারি বিনিয়োগের নতুন পথ খুলে দিতে চাইছে কেন্দ্র। সরকারি সূত্রে বলা হচ্ছে, প্রথম পর্যায়ে জাতীয় সড়কের প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার অংশের রক্ষণাবেক্ষণ, পরিচালন ও টোল আদায়ের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে বেসরকারি হাতে। সে ক্ষেত্রে যেমন ভাল পরিষেবা পাওয়ার আশা রয়েছে, তেমনই জাতীয় সড়কের সংশ্লিষ্ট অংশে আরও বেশি হারে টোল আদায় করা যাবে বলেও মনে করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কাল কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের প্রস্তাবে সম্মতি দিতে পারে মন্ত্রিসভা। সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক সূত্রে বলা হচ্ছে, এ ব্যাপারে প্রধানত উদ্যোগী হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। পরবর্তী কালে নতুন এই প্রস্তাবের নিয়ম-নীতি নির্ধারণের জন্য সড়ক পরিবহণ, অর্থ ও আইন মন্ত্রকের কর্তারা কয়েক দফায় বৈঠক করেন। কেন্দ্রের এই নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী জাতীয় সড়কের একাংশ বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে। কেননা গোটা দেশে নতুন রাস্তা তৈরির জন্য এখন সরকারের ওপর চাপ রয়েছে। কিন্তু তা করতে গিয়ে বর্তমান জাতীয় সড়কগুলির রক্ষণাবেক্ষণে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তা ছাড়া সরকারি স্তরে পেশাদারিত্বের যেমন অভাব রয়েছে, তেমনই টোল আদায়ের ক্ষেত্রে প্রচুর ফাঁক রয়েছে। যাদের ওপর টোল আদায়ের দায়িত্ব তারা আকছার দুর্নীতি করছে। কিন্তু বেসরকারি হাতে জাতীয় সড়ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তুলে দিলে, তারা নিজের গরজেই টোল আদায় করবে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা প্রথমে সড়ক মেরামতের জন্য মূলধন খাতে বিনিয়োগ করবে। তার পর টোল আদায়ের মাধ্যমে সেই মূলধন খাতে বিনিয়োগের অর্থ তারা তুলে নেবে। নিজেদের মুনাফা রাখার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে সরকারকে নির্দিষ্ট হারে প্রিমিয়ামও দিতে হবে।
সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, জাতীয় সড়কগুলির কোন অংশে প্রতি দিন কত গাড়ি চলে, তার হিসেব রয়েছে। তার ভিত্তিতেই দরপত্র হাঁকা হবে। ফলে বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকিও কম। বরং তাঁরা ভাল পরিষেবা দিতে পারলে সংশ্লিষ্ট অংশে গাড়ি চলাচলের সংখ্যা বাড়তে পারে। তাতে তাদেরই লাভ হবে। তবে তাঁর আশ্বাস, টোলের হার কিছুটা বাড়বে ঠিকই। তবে তা এমন হবে না যে সাধারণ মানুষ বিপদে পড়তে পারে। তা ছাড়া সরকারও সে বিষয়ে নজরে রাখবে। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলি যদি ভাল পরিষেবা দিতে পারে, তা হলে টোল সামান্য বাড়লেও তা নিয়ে মানুষ বিশেষ অসন্তোষ দেখাবে না বলেই আশা করা হচ্ছে। |