স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠানে লালকৃষ্ণ আডবাণীকে যথাযথ সম্মান দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। যার জেরে আজ রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ফোন করেন আডবাণীকে। রাষ্ট্রপতি দুঃখপ্রকাশ করায় বিষয়টি নিয়ে আর জটিলতা বাড়াতে চায়নি বিজেপি-ও।
প্রধান বিরোধী দলের অভিযোগ ছিল, রাষ্ট্রপতি ভবনের অনুষ্ঠানে আডবাণী-সহ লোকসভা ও রাজ্যসভার দুই বিরোধী দলনেতা-নেত্রী অরুণ জেটলি ও সুষমা স্বরাজকে প্রাপ্য মর্যাদা দেওয়া হয়নি। একই ভাবে, চার দিন আগে উপরাষ্ট্রপতি হামিদ আনসারির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও আডবাণীকে যথাযথ সম্মান দেওয়া হয়নি। বিরোধী জোট এনডিএ-র চেয়ারম্যান আডবাণী। কিন্তু তাঁকে বসতে দেওয়া হয়েছিল চতুর্থ সারিতে।
রাষ্ট্রপতি ভবনের তরফে অবশ্য সরকারি ভাবে এই অভিযোগের কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। কিন্তু বিজেপির অভিযোগের জেরে আজ আডবাণী-সহ সুষমা ও জেটলিকেও ফোন করেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। বিজেপি নেতাদের তিনি বলেন, প্রোটোকলে কোনও ত্রুটি হয়ে থাকলে তিনি দুঃখিত।
ভবিষ্যতে যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়, সে বিষয়ে রাষ্ট্রপতি ভবন সচেতন থাকবে। রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রোটোকলের দায়িত্বে থাকা কর্তাও বিজেপি নেতাদের ফোন করে আজ ক্ষমা চেয়ে নেন। তবে ঘরোয়া আলোচনায় রাষ্ট্রপতি ভবনের এক আমলা আজ বলেন, যা হয়েছে প্রোটোকল মেনেই হয়েছে। বিজেপি খামোখা রাজনীতি করছে। |
কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, ইউপিএ সভানেত্রী হিসাবে সনিয়া গাঁধীকে যে মর্যাদা দেওয়া হয়, সেই একই মর্যাদা এনডিএ চেয়ারম্যানেরও প্রাপ্য। বিজেপি-র বক্তব্য, উপরাষ্ট্রপতি পদে শপথের দিন এনডিএর চেয়ারম্যান আডবাণীকে চতুর্থ সারিতে বসতে দেওয়ার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী দফতরের প্রতিমন্ত্রী নারায়ণস্বামীর নজরে পড়ে।
তখন তিনি আডবাণীকে প্রথম সারিতে বসার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু তা-ও সম্ভব হয়েছিল মনমোহন সরকারের এক মন্ত্রী অনুপস্থিত থাকায়। সেই মন্ত্রী সে দিন রাষ্ট্রপতি ভবনে এলে হয়তো শেষ পর্যন্ত আডবাণীকে পিছনের সারিতেই বসতে হত। তার পর গত কাল রাষ্ট্রপতি ভবনে এক অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও ইউপিএর চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধীর জন্য ঠিক জায়গায় বসার বন্দোবস্ত হলেও এনডিএ চেয়ারম্যানের প্রতি সেই সৌজন্য দেখানো হয়নি।
দলের এক শীর্ষ নেতা আজ বলেন, “রাষ্ট্রপতি ভবনে এমন অনুষ্ঠান প্রথম নয়। কে কোন গেট দিয়ে ঢুকবেন, কোন আসনে কারা বসবেন, তার সবই প্রোটোকলের ব্যাকরণে বাঁধা। কিন্তু আডবাণী-সহ সুষমা ও জেটলি রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রবেশের পর কোথায় যাবেন, তা দেখার জন্য কেউ ছিলেন না।
মাত্র ক’দিনের ব্যবধানে একই ধরনের অসৌজন্যের পিছনে দুরভিসন্ধিও থাকতে পারে। তা ছাড়া প্রশাসনের যাবতীয় বিষয়ে সরকার কী রকম উদাসীন, তা-ও বোঝা যাচ্ছে।”
এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য আজ সকালে বৈঠকে বসেন আডবাণী, সুষমা, জেটলিরা।
স্থির হয়, তাঁদের অসন্তোষ সরকারকে জানানো হবে। পরে বিজেপি সাংসদ যশবন্ত সিন্হা বলেন, “এ ধরনের ঘটনা যথেষ্ট যন্ত্রণাাদায়ক। অনায়াসেই এটি এড়ানো যেতে পারত।” তবে খোদ রাষ্ট্রপতি ফোন করার পর বিজেপি অবশ্য এই অধ্যায় ‘সমাপ্ত’ বলে দাবি করছে। |