হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত দান করতে শিবিরে নাম লেখেন ৬২ জন। বৃহস্পতিবার পুরসভার বাজারে সকাল ৯টায় লাইনেও দাঁড়ান তাঁরা। কিন্তু ব্লাড ব্যাঙ্ক রক্ত নিতে নারাজ। তাঁদের আর্জি উদ্যোক্তারা যদি আশ্বাস দেন ত্রিশ জনের বেশি রক্তদাতা হবে না তবে তাঁরা শিবির শুরু করবেন। সরকারি কর্মীদের বক্তব্যে বিস্মিত হয়ে চেঁচামেচি শুরু করেন রক্তদান শিবিরের উদ্যোক্তারা। অবশেষে তাঁদের ডেকে বুঝিয়ে শান্ত করেন ব্লাড ব্যাঙ্কের কর্মীরা। শুরু হয় শিবির। কেন এমন আর্জি! ব্লাড ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, রক্ত সংরক্ষণের জন্য ব্যাগের তীব্র সঙ্কট চলছে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে। তাই বাধ্য হয়ে শিবির বাতিল করতে হচ্ছে। যেখানে শিবির হচ্ছে সেখানে রক্ত দানের কোটা বেধে দেওয়া হচ্ছে। ঘটনার খবর পেয়ে অবাক জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার। তিনি বলেন, “গ্রীষ্মে রক্তের চাহিদা মেটাতে বেশি করে রক্তদান শিবির আয়োজনের আর্জি জানাই। এ ক্ষেত্রে উল্টো ঘটনা ঘটছে। সদর হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে যে এমন সঙ্কট তৈরি হয়েছে সেটা আমাকে জানানো হয়নি। বুধবার জানতে পেরে কলকাতা থেকে ৪০০ ব্যাগ আনিয়েছি। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় সামান্য।” ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত সংরক্ষণের জন্য প্রতিদিন ৫০টি ব্যাগের প্রয়োজন। সেই হিসেবে মাসে নূন্যতম দেড় হাজার ব্যাগ চাই। অথচ চলতি অগস্ট মাসের প্রথমে ২০০টি ব্যাগ আসে ব্লাড ব্যাঙ্কে। সেই ব্যাগ ফুরিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার আরও চারশো ব্যাগ আসে। সেগুলি আজ, শনিবার তিনটি শিবিরে প্রয়োজন হবে। ওই পরিস্থিতিতে রবিবার থেকে সপ্তাহে ১২টি শিবির অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। অগস্ট মাসের প্রথমে হাজার রক্তের ব্যাগ চেয়ে আর্জি পাঠানা হয়। মিলেছে মাত্র ২০০টি ব্যাগ। পরের দফায় হাজার ব্যাগ চেয়ে পাওয়া গিয়েছে মাত্র ৪০০টি ব্যাগ। ফলে গত সাত দিনে অন্তত ৯টি রক্তদান শিবির বাতিল করতে হয়েছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে পুর্বনির্ধারিত শিবিরগুলি। কেন ওই সঙ্কট! স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে দাবি, অগস্ট মাসের শুরুতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ থেকে কম সংখ্যক ব্যাগ এসে পৌছলেও জেলা স্বাস্থ্য দফতরে বিষয়টি জানানো হয়নি। এক্ষেত্রে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং স্বাস্থ্য দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। এই ব্যাপারে সদর হাসপাতালের সুপার ব্রজেশ্বর মজুমদার বলেন, “রক্তের ব্যাগ জেলাতে তৈরি হয় না। বাইরে কিনতে পাওয়া যায় না। তাই কেন সঙ্কট বলতে পারব না।” |