গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণ করাতে গিয়ে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছিল শনিবার। সেই ঘটনাকে ঘিরে রবিবার রাজনীতির লড়াই দেখল শিলিগুড়ি শহর।
তৃণমূলের ডেপুটি মেয়র-সহ কিছু কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ওই ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসককে ‘আড়াল’ করার অভিযোগ তুলল সিপিএম। মৃত আশা বর্মনের পরিবারও একই অভিযোগ করেছে। এ দিন শিলিগুড়ির ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের নিরঞ্জননগরে আশাদেবীর বাড়িতে যান প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য এবং সিপিএমের একাধিক কাউন্সিলর। বলেন, “ওই চিকিৎসককে আড়াল করার চেষ্টা বাসিন্দারা মেনে নেবেন না। চিকিৎসকের পাশে দাঁড়িয়ে কেনই বা ডেপুটি মেয়র এবং স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ সাফাই দিচ্ছিলেন, তা-ও খতিয়ে দেখা দরকার। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি।”
আশাদেবীর স্বামী উত্তম বর্মন বলেন, “অস্ত্রোপচারের সময়ে কোনও ত্রুটির জন্য আমার স্ত্রীর অন্ত্রে ফুটো হয়ে যায় বলে হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাই জানিয়েছিলেন। অথচ আমাদের এলাকার কাউন্সিলর তথা ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা এবং স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র পারিষদ মৈত্রেয়ী চক্রবর্তী, দু’জনেই জোর গলায় বলেছিলেন, রোগিণীর কিছু হয়নি।” মৃতার দিদি ঊষা দেবীর অভিযোগ, “ওই দুই কাউন্সিলর প্রথম থেকেই চিকিৎসকের গাফিলতি নেই বলে বারবার ঘোষণা করেছেন। এমনকী, বোন মারা যাওয়ার পরে এলাকার কাউন্সিলরের দেখা পাইনি। এতেই মনে হচ্ছে ,কাউন্সিলরদের একাংশ চিকিৎসায় গাফিলতিতে অভিযুক্তদের আড়াল করছেন।”
গত ৪ অগস্ট শিলিগুড়ি পুরসভার ডাবগ্রামের ‘মাতৃসদন’ হাসপাতালে ভর্তি হন আশাদেবী। সেখানে গর্ভপাত ও বন্ধ্যাকরণের অস্ত্রোপচারের পরে তিনি অসুস্থ হওয়ায় ৬ তারিখ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সে দিনই উত্তমবাবুরা শিলিগুড়ি থানায় মাতৃসদনে চিকিৎসায় গাফিলতিতে আশাদেবী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। শুক্রবার দুপুরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আশাদেবীর মৃত্যু হয়।
এ দিন ডেপুটি মেয়র বলেন, “ওই চিকিৎসক আমাদের বলেছিলেন, পরিকাঠামোগত সমস্যায় চিকিৎসার অসুবিধা হতে পারে। তাই মেডিক্যালে রেফার করা হয়েছে। পরিবারের লোকেরা আর্থিক সমস্যার কারণে মেডিক্যালে নিতে চাইছিলেন না। তাঁদের সে সময় ১ হাজার টাকা দেওয়ার কথাও বলেছিলাম। ওষুধও কিনে দিই।” মৈত্রেয়ীদেবীর দাবি, “গর্ভপাত এবং বন্ধ্যাকরণ করতে গিয়ে কোনও সমস্যা হয়েছে বলে ওই চিকিৎসক জানাননি।” ঘটনার পর থেকেই ওই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। |