পুরসভার মাতৃসদনে গর্ভপাত এবং বন্ধ্যাকরণ করাতে গিয়ে রোগিণী আশা বর্মন অসুস্থ হয়ে পড়ায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছিল। গত সোমবার গুরুতর অসুস্থ আশাদেবীকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শুক্রবার আশাদেবীর (৩৫) মৃত্যু হয়েছে। ওই রোগিণীর মৃত্যুর পর অভিযুক্ত চিকিৎসকের শাস্তি এবং ক্ষতিপূরণের দাবি তুলেছেন পরিজনেরা। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের সুপার সব্যসাচী দাস বলেন, “রোগীর অন্ত্রে কয়েকটি ফুটো হয়ে গিয়েছিল। তা থেকে ফুসফুসেও সংক্রমণ ছড়ায়। এ দিন তিনি মারা গিয়েছেন।”
ঘটনায় জেরে অস্বস্তিতে পড়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত বলেন, “মাতৃসদন থেকে মেডিক্যাল কলেজে ওই রোগীকে পাঠানো হয়েছিল। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। সেখানে তিনি মারা গিয়েছেন বলে শুনেছি। উনি মাতৃসদনে না, মেডিক্যালে গিয়ে সংক্রমণে আক্রান্ত হন তা দেখা হচ্ছে। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।” অভিযুক্ত চিকিৎসক অর্ণব বর্মা অবশ্য বলেন, “ওই রোগিণী মারা গিয়েছেন বলে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। উনি মাতৃসদনে অসুস্থ হয়ে পড়ায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করি। গাফিলতির অভিযোগ সঠিক নয়।”
মাতৃসদন সূত্রের খবর, গত শনিবার ঘোঘোমালির নিরঞ্জন নগরের বাসিন্দা মাস তিনেকের গর্ভবতী আশাদেবী মাতৃসদনে গর্ভপাত এবং বন্ধ্যাকরণ করাতে যান। ওই দিনই তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। তার পরে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তোলেন পরিবারের লোকজন। মৃতার স্বামী উত্তম বর্মন পেশায় ভ্যান চালক। উত্তমবাবু বলেন, “অভিযুক্ত চিকিৎসক অস্ত্রোপচারের সময় বেশি কাটাছেঁড়া করেন বলে স্বীকারও করেন। এতে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে। ওই চিকিৎসকের শাস্তি চাই। ক্ষতিপূরণ চাই।”
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের খবর, মাতৃসদনে প্রথমবার অস্ত্রোপচারের পর আশাদেবী অসুস্থ হয়ে পড়লে মাতৃসদন কর্তৃপক্ষ তাঁকে মেডিক্যাল রেফার করেন। কিন্তু আশা দেবীর পরিবারের লোকজন তাঁকে সেখানে নিয়ে যেতে চাননি। এই নিয়ে গোলমালও হয়। পুলিশ যায়। তার পরে মাতৃসদন কর্তৃপক্ষ রোগীকে মেডিক্যালে ভর্তির ব্যবস্থা করেন। মেডিক্যালেও আশা দেবীর আরেক দফায় অস্ত্রোপচার করা হয়। |