ভোরবেলা আগুন ছড়াল তমলুক শহরের শঙ্করআড়া এলাকার একটি নার্সিংহোমে। দমকলের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও নার্সিংহোমের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোগীদের নিরাপদে বাইরে বার করে আনা হলেও নার্সিংহোমের তিন কর্মী আহত হয়েছেন।
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ বাড়ি মালিকের বিরুদ্ধে আগুন লাগানোর অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, নার্সিংহোমে কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবেই আগুন লাগিয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এ দিকে, ভয়াবহ এই ঘটনার জেরে রোগীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জেলা সদরে। জেলাসদরের নার্সিংহোমগুলির পরিকাঠামো পরিদর্শনে স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কালিদাস দত্ত অবশ্য “নার্সিংহোমে আগুন লাগার কোনও খবর জানা নেই’’ দাবি করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের ধারে অবস্থিত ওই নার্সিংহোমটির দোতলায় অপারেশন থিয়েটারের কাছে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টা নাগাদ আগুন লাগে। খবর পেয়ে আতঙ্ক ছড়ায় নিচতলায় থাকা রোগী ও তাঁদের পরিজনদের মধ্যে। জনা দশেক রোগী ছিল মাত্র। সবাইকেই বার করে আনা হয় নিরাপদে। |
নার্সিংহোমে ভর্তি থাকা এক রোগীর আত্মীয় অজয় সামন্ত বলেন, “আমি নীচে ছিলাম। আচমকা বিকট শব্দ হয়। তারপর আগুন লেগেছে বলে চিৎকার শুনতে পাই। তড়িঘড়ি করে আমার আত্মীয়কে বাইরে নিয়ে আসি।’’ খবর পেয়ে তমলুক দমকলকেন্দ্রের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। নার্সিংহোমের অপারেশন থিয়েটার-সহ বেশ কিছুটা অংশ ও বেশ কিছু যন্ত্রপাতি পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সকালেই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। রোগীদের স্থানীয় অন্য একটি নার্সিংহোমে স্থানান্তর করা হয়।
নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের তরফে সমর সামন্ত এ দিন অভিযোগ করেন, “পুরনো বিবাদের জেরে বাড়ির মালিকই ভোরে নার্সিংহোমে ঢুকে আগুন ধরিয়েছেন। কর্মীরা তাঁকে হাতেনাতে ধরলেও পালিয়ে যান।” পুলিশের কাছেও এই অভিযোগ জানিয়েছেন নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। বাড়িমালিকের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেন, “লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও বেআইনি ভাবে ওই নার্সিংহোম চলছিল। নার্সিংহোমের বেআইনি কার্যকলাপ ঢাকা দিতে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে বৈদ্যুতিক কারণে আগুন লাগার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বহিরাগত কেউ আগুন লাগিয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাড়ির মালিক পলাতক। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। নার্সিংহোম সিল করে দেওয়া হয়েছে। |