স্বাধীনতা দিবসের আগে নিয়মমাফিক হুমকি বা বন্ধের ঘোষণা নয়, কেন্দ্র ও রাজ্যের উদ্দেশে গারো জঙ্গি সংগঠন জিএনএলএ শান্তির প্রস্তাব পাঠাল। সেই সঙ্গে পাঠানো হল স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা।
মেঘালয় পুলিশ গত সপ্তাহে বাংলাদেশে নজরবন্দি জিএনএলএ সংগঠনের চেয়ারম্যান চ্যাম্পিয়ন সাংমাকে হাতে পেয়েছিল। তার পরই চ্যাম্পিয়ন শান্তি আলোচনার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু সংগঠনের সেনাধ্যক্ষ সোহন ডি শিরা আলোচনায় রাজি হবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল। এ বার কিন্তু খোদ শিরার তরফেই এল শান্তির প্রস্তাব। তবে শর্ত দেওয়া হয়েছে, গারো অধ্যূষিত এলাকাগুলিকে এক করে পৃথক গারো রাজ্য গড়তে হবে। কেন্দ্র এই প্রস্তাবে রাজি থাকলে তবেই আলোচনায় বসবে জিএনএলএ।
সংগঠনের রাজনৈতিক সচিব বিকডট নিকজাং মারাক নিজেই সংবাদমাধ্যমে ফোন করেছিলেন। তিনি জানান, বাংলাদেশের কোনও এক অজ্ঞাত স্থানে রয়েছেন তাঁরা। কেন্দ্র ও মেঘালয় সরকার তাদের প্রস্তাবে রাজি হলে শীর্ষ নেতাদের নিয়ে তিনি শিলং আসতে পারেন। মারাক বলেন, “আমরা পৃথক দেশ চাইছি না। ভারতীয় সংবিধানের অধীনেই,তিন নম্বর ধারা অনুযায়ী পৃথক রাজ্য চাইছি। যদি নাগাদের জন্য নাগাল্যান্ড, মিজোদের জন্য মিজোরাম গড়া হতে পারে, তবে গারোল্যান্ড নয় কেন? আশা করি, ভারত সরকার এই প্রস্তাবে রাজি হবে।”
শান্তি প্রস্তাবের পাশাপাশি, আসন্ন স্বাধীনতা দিবসের আগে হুমকি নয়, জঙ্গিদের তরফে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়েছে। মারাক বলেন, “আশা করি, স্বাধীনতা দিবসের উৎসব সফল ও শান্তিপূর্ণ হবে। আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে গাঁধীজি, নেতাজি, ভগৎ সিংহ, অম্বেডকরের অবদান স্মরণ করছি।”
অবশ্য, জঙ্গিরা শান্তি চাইলেও কেন্দ্র ও রাজ্য এখনই জিএনএলএ-র সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি নয়। পৃথক গারো রাজ্য গঠন জঙ্গিদের আলোচনার একমাত্র শর্ত, যা কোনওমতেই মানতে রাজি নয় স্বরাষ্ট্রন্ত্রক। কেন্দ্রীয় যুগ্ম স্বরাষ্ট্র সচিব শম্ভু সিংহ বলেন, “আলোচনার জন্য আমাদের দরজা সবসময় খোলা। কিন্তু তা নিঃশর্ত হতে হবে। কৃতকার্যের জন্য জঙ্গিদের বিচারের সামনাসামনি দাঁড়াতে হবে।” তাঁর মতে, মেঘালয় এমনিতেই ছোট রাজ্য। একে আর টুকরো করা সম্ভব নয়।
মেঘালয় সরকারও শান্তি আলোচনা নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে রাজি নয়। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী এইচডিআর লিংডো বলেন, “আমরা আলোচনার মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে সমস্যা মেটাতে চাই। কিন্তু জিএনএলএকে প্রথমে অস্ত্র ত্যাগ করে সন্ত্রাস বন্ধ করে, আলোচনার পরিবেশ রচনা করতে হবে।” তিনি আরও জানান, মেঘালয়বাসী পৃথক রাজ্য তৈরির জন্য জঙ্গিদের দায়িত্ব দেয়নি। তাই পৃথক রাজ্যের শর্তে কোনও আলোচনা সম্ভব নয়। |