|
|
|
|
জমি বেদখল করে বাড়ি, এতদিনে উদ্যোগ লিজের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মেদিনীপুর শহরে খাস-জমি সব কোথায় গেল? খালি চোখে এখন আর সে-সব জমি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কারণ, ইতিমধ্যেই জমি দখল করে বাড়ি হয়ে গিয়েছে। সে-সব ইমারত আবার হাতবদলও হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকায়। প্রশাসনের নাকের ডগায় এ রকম ঘটে চললেও জমি-উদ্ধারে কারও হুঁশ নেই। জমি-উদ্ধার তো দূরের কথা, বেদখল জমি লিজ দিয়ে সরকারের রাজস্ব আয়-বৃদ্ধিরও চেষ্টা হয়নি। এত দিনে মাত্র একটি এলাকার জমি লিজে দিতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। বারপাথর ক্যান্টনমেন্টে বসবাস করা ১৩৪১ জনের একটি তালিকা তৈরি হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ভূমি ও ভূমি-সংস্কার আধিকারিক অরিন্দম দত্তের কথায়, “ধীরে ধীরে বেদখল হওয়া সরকারি জমি উদ্ধারের পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে লিজের ব্যবস্থা করা হবে। শহরের কোন এলাকায় কত খাস-জমি রয়েছে, তা চিহ্নিত করার কাজও শুরু হয়েছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের মধ্যস্থল কেরানিতলা, বারপাথর ক্যান্টনমেন্ট, নরমপুর, সিপাইবাজার এলাকায় এ-রকম খাস জমি রয়েছে। ওই সব এলাকায় ঠিক কত পরিমাণ খাস জমি রয়েছে, সেই জমি কোনও সংস্থাকে বা ব্যক্তিকে আগেই লিজ দেওয়া হয়েছে কি না, লিজের সময়সীমা পার হয়ে গিয়েছে কি না, কত জমি লিজ না দেওয়া সত্ত্বেও বেদখল হয়েছে এ বার সে-সবই খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রায় সব খাস-জমিই বেদখল হয়ে গিয়েছে। সে-সব জমিতে ৮-১০ হাজার বাড়িও হয়েছে। চড়া দামে জমির হাত-বদলও হচ্ছে। বর্তমানে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, জমি লিজে পেতে গেলে জমির দামের ৯৫ শতাংশ সেলামি দিতে হবে। বছরে খাজনাও দিতে হবে। এ ভাবেই ৩০ বছরের লিজ-চুক্তি করছে সরকার। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নরমপুর মৌজায় বর্তমানে কাঠা প্রতি জমির দাম সাড়ে ৪ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। ওই মৌজায় বেশ কয়েক একর খাস-জমি রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই সরকার অনেক টাকাই রাজস্ব পেতে পারে। কিন্তু আগে এ বিষয়ে তেমন উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। তবে এ বার বারপাথর ক্যান্টমেন্টের ক্ষেত্রে ভূমি-দফতর লিজে জমি দিতে উদ্যোগী হয়েছে। ১৩৪১ জন লিজের জন্য আবেদন করেছেন। তার মধ্যে ২৪৩ জনকে লিজ দেওয়াও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এ তো গেল মাত্র একটি মৌজা। বাকি মৌজাগুলির ক্ষেত্রে কী হবে? কেন বছরের পর বছর তা বেদখল হয়ে থাকবে? এই প্রশ্ন উঠেছে। যাঁরা ওই জমি দখল করে রেখেছেন তাঁরা আর্থিক দিক দিয়ে স্বচ্ছল। সরকারি রাজস্ব দেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, এ বার ধীরে ধীরে শহরের প্রতিটি এলাকাকেই ধরা হবে। যাঁরা বাড়ি করে পুরুষানুক্রমে রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে সরকার লিজ-চুক্তি করে রাজস্ব আদায় করবে। কারও সঙ্গে আগে চুক্তি হয়ে থাকলে এবং চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে থাকলে তা নবীকরণ করতে হবে। তবে কেউ বেআইনি ভাবে জমি হস্তান্তর করলে ভূমি দফতর তা মানবে না। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। |
|
|
|
|
|