|
|
|
|
সংস্কারে বাধা সরছে না এই অধিবেশনেও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
রাষ্ট্রপতি ভোটে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পক্ষে যে ঐকমত্য দেখা গিয়েছিল, সংস্কার-সহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কিন্তু তার কণামাত্র হাতে পাচ্ছেন না ইউপিএ শীর্ষ নেতৃত্ব। আগামী বুধবার থেকে বাদল অধিবেশন শুরু হচ্ছে সংসদের। তার আগে সংস্কারমুখী ফরওয়ার্ড ট্রেডিং সংশোধনী বিল আনা নিয়ে শরিক-সহযোগীদের মন বোঝার চেষ্টা করেন ইউপিএ নেতৃত্ব। তা ছাড়া জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসন বিল তো আছেই। আছে মহিলা সংরক্ষণের মতো সামাজিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিল। বাস্তবে দেখা গেল, কোনও ক্ষেত্রেই আপাতত সরকারের হালে পানি নেই।
প্রণববাবু অর্থ মন্ত্রক ছাড়ার পর থেকেই সংস্কারে মন দেওয়ার কথা বলতে শুরু করেন ইউপিএ নেতৃত্ব। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, তৃতীয় বারের চেষ্টাতেও মন্ত্রিসভায় তোলা গেল না ফরওয়ার্ড ট্রেডিং সংশোধনী বিলটি। দু’বার তৃণমূলের আপত্তিতে পিছিয়ে যেতে হয়েছে মনমোহনকে। এ বারও তার অন্যথা হল না।
মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার কথা ছিল গত কাল। কিন্তু মনমোহন সুস্থ ছিলেন না বলে সেই বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়। রেলমন্ত্রী মুকুল রায় কাল দিল্লি এসেছিলেন বৈঠকে যোগ দিতে। বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার খবর পেয়ে কলকাতা ফিরে যান। তবে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে যান। তৃণমূল সূত্রের খবর, সেই চিঠিতে মুকুল অনুরোধ করেন, তাঁর অনুপস্থিতিতে এমন কিছু নিয়ে যেন আলোচনা না হয় যাতে তৃণমূলের আপত্তি আছে। প্রশাসনিক সূত্রে বলা হচ্ছে, সে কারণে আজ আরও এক বার ফরওয়ার্ড ট্রেডিং বিলটি আলোচনায় উঠল না। যদিও সরকারি ভাবে বলা হচ্ছে, খাদ্য ও উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী কে ভি টমাসের অনুপস্থিতিতে বিলটি নিয়ে আলোচনা হয়নি।
এ দিনই আবার ছিল বিভিন্ন দলের মুখ্য সচেতকদের বৈঠক। সেখানেও তৃণমূল বিলটি নিয়ে একই বার্তা দেয়। শুধু তারাই নয়, আপত্তি তোলে সমাজবাদী পার্টিও। সঙ্গে যোগ দেয় সিপিআই। জমি বিলটি নিয়ে তৃণমূলের আপত্তি তো রয়েইছে। আবার পবন বনশল যখন বৈঠকে জানান, আসন্ন অধিবেশনে মহিলা সংরক্ষণ বিলটি আনতে চায় সরকার, সঙ্গে সঙ্গে আপত্তি জানান সপা, বসপা-র নেতারা। তালিকা থেকে বিলটিকে অবিলম্বে বাদ দেওয়ার দাবি জানান রামবিলাস পাসোয়ানও। অর্থাৎ, ইউপিএ-র সহযোগীরা বুঝিয়ে দিলেন, মহিলা সংরক্ষণ বিলটির ভবিষ্যৎও বিশ বাঁও জলে।
সামগ্রিক ভাবে এই যখন পরিস্থিতি, তখন সংস্কারের প্রশ্নে কতটা সাহসী হতে পারবে সরকার?
প্রধানমন্ত্রী অর্থ মন্ত্রকের দায়িত্ব নেওয়ার পরে সংস্কারের কর্মসূচি দ্রুত রূপায়ণ হবে বলে মনে করেছিল শিল্প ও বাণিজ্য মহল। কিন্তু এখন ফের চিদম্বরমকেই অর্থমন্ত্রী করার পরে সংস্কারের প্রশ্নে সরকার আদৌও সাহসী হতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। তা ছাড়া চিদম্বরমের বিরুদ্ধে এখনও আর্থিক দুর্নীতির মামলা চালু থাকায় তাঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে সরকারকে বিব্রত করার পরিকল্পনা নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে চিদম্বরমকে সামনে রেখে আর্থিক সংস্কারের প্রশ্নে শেষ পর্যন্ত দল কতটা এগোতে চাইবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে সংশয় রয়েছে কংগ্রেসের মধ্যেই। |
|
|
|
|
|