চলতি মাসেই বৈঠক দিল্লিতে
সাগর-বন্দরের যৌথ উদ্যোগে থাকবে রাজ্যও, ইঙ্গিত
সাগরে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে কেন্দ্রের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত ভাবে সম্মত রাজ্য সরকার। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য মন্ত্রিসভা। তার পর রাজ্য অর্থ দফতরের অনুমোদন নেওয়া হবে। বুধবার কলকাতা বন্দরে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে রাজ্যের পক্ষ থেকে এমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিনিধিকে। ঠিক হয়েছে, চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে দিল্লিতে ফের বৈঠকে বসবে দু’পক্ষ। সেখানে রেল এবং জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকেও ডাকা হয়েছে। সেই বৈঠকে প্রকল্পের খুঁটিনাটি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা।
গত ২৭ জুলাই কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের ‘ফ্ল্যাগশিপ পরিকাঠামো উন্নয়ন’ কর্মসূচিতে পশ্চিমবঙ্গের প্রকল্পটিকে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করা হয়। তাতে বলা হয়: সাগরে গভীর সমুদ্র বন্দরটি গড়ে তোলার জন্য একটি ‘স্পেশাল পারপাস ভেহিকেল’ (এসপিভি) গড়ে তোলা হবে। তাতে রাজ্যের ২৬ শতাংশ এবং কেন্দ্রের ৭৪ শতাংশ অংশীদারিত্ব থাকবে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগের (পিপিপি) মাধ্যমে প্রকল্পটি গড়ে তোলার জন্য দরপত্র হাঁকবে ওই এসপিভি।
প্রকল্পটি নিয়ে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করতে বুধবার কলকাতায় আসেন জাহাজ মন্ত্রকের সচিব। রাজ্যের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যসচিব সমর ঘোষ, শিল্পসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পরিবহণসচিব বিপি গোপালিকা। বৈঠকে কলকাতা বন্দরের কর্তারাও ছিলেন। প্রাথমিক সমীক্ষার পরে ঠিক হয়েছে, সাগরের পশ্চিম দিকে, বেগুয়াখালি এলাকার সামান্য উত্তরে বন্দরটি তৈরি হবে। নির্মাণ কাজ শেষ করে বন্দর চালু হতে পারে ২০১৬-১৭ সাল নাগাদ। এই বন্দরের নাব্যতা হলদিয়া বন্দরের মতোই হবে।
ঠিক হয়েছে, বন্দর নির্মাণের জন্য রাস্তা, রেললাইন, বিদ্যুৎ-সহ আরও এক গুচ্ছ পরিকাঠামো রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার যৌথ উদ্যোগে গড়ে দেবে। এক মুখপাত্র জানান, নতুন বন্দরের জন্য রেল ও সড়ক যোগাযোগ গড়ে তোলা দরকার। রেল দফতর ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে সাগরের কপিলমুনি আশ্রম পর্যন্ত রেললাইন প্রসারিত করবে তারা। অন্য দিকে, ডায়মন্ডহারবার রোডকে সম্প্রসারিত করার পরিকল্পনা নিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। এই দু’টি কাজ সম্পন্ন হলে প্রস্তাবিত বন্দরের জন্য আলাদা করে রেল ও সড়ক যোগাযোগ গড়ে তুলতে হবে না। এই কারণেই দিল্লির পরবর্তী বৈঠকে ওই দুই কর্তৃপক্ষকে ডাকা হয়েছে।
গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করতে ৫০০০ কোটি টাকা খরচ হবে বলে প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে। পরিকল্পনা মতো, বন্দরের যাবতীয় পরিকাঠামো তৈরি করে দেবে কেন্দ্র ও রাজ্য। এর পর সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি) বন্দর নির্মাণ করা হবে। ওই মুখপাত্র জানান, প্রকল্পের মূল খরচ লাগবে বন্দর তৈরিতে। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্যও কয়েকশো কোটি টাকা লাগবে। সরকারের এক মুখপাত্র জানান, প্রকল্পে রাজ্যের অংশীদারিত্ব কী ভাবে থাকবে, তাই নিয়ে চিন্তাভাবনা হচ্ছে। তাঁর মতে, এমন হতেই পারে যে, প্রকল্পের জন্য বিদ্যুৎ, নিকাশি, জলের মতো কয়েকটি পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব নিল রাজ্য সরকার। তবে ঠিক কী হবে, তা চূড়ান্ত হতে আরও সময় লাগবে।
এই প্রকল্পের জন্য ‘রাইটস’ যে সমীক্ষা রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত বন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না। এখানে ‘রিক্লেম’ করা হবে। অর্থাৎ, সমুদ্রের পলি তুলে পাড়ের কিছুটা অংশ ভরাট করে বন্দরের জন্য জমি তৈরি করা হবে।
এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়ার দিনই প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে, তিনি এই কাজটির দ্রুত রূপায়ণ দেখতে চান। প্রকল্পটির প্রকৃত অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে একটি স্টিয়ারিং কমিটিও গড়ে দিয়েছেন তিনি।
ওই কমিটিতে জাহাজ মন্ত্রক, অর্থ বিষয়ক সচিব ও যোজনা কমিশনের সদস্যরা থাকবেন। সংশ্লিষ্ট কমিটি এসপিভি গঠনের বিষয়টি যেমন চূড়ান্ত করবে, তেমনই নজর রাখবে দরপত্র হাঁকার ব্যবস্থার ওপর। আবার প্রকল্পটি পত্তনের জন্য কোনও আর্থিক উৎসাহ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি না এবং তা কতটা, তা-ও ওই কমিটি নির্ধারণ করে দেবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.