এখনও নির্দেশিকা দেয়নি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক
সেভিংসে ন্যূনতম জমার নিয়মই বহাল প্রায় সব ব্যাঙ্কে
ব্যাঙ্কের সেভিংস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম টাকা জমা রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়া হবে বলে গত এপ্রিলেই ঘোষণা করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু তার পর তিন মাস কেটে গেলেও এ বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা জারি করতে পারেনি তারা। ফলে স্টেট ব্যাঙ্ক ছাড়া গ্রাহকদের জন্য এই সুবিধা চালু করেনি প্রায় কোনও ব্যাঙ্কই। কারণ, তাদের আশঙ্কা, শেষ পর্যন্ত এই নীতি চালু হলে তহবিল সংগ্রহের খরচ বাড়বে। সার্বিক ভাবে বৃদ্ধি পাবে ব্যবসা চালানোর খরচও। ফলে এখনও পর্যন্ত সিদ্ধান্ত কার্যকর না-হওয়াই বরং স্বস্তিতে রেখেছে তাদের।
ন্যূনতম জমা (মিনিমাম ব্যালান্স) নিয়ে নির্দেশিকা কেন এখনও তৈরি করা গেল না, সেই প্রশ্নে অবশ্য মুখ খুলতে রাজি হয়নি শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এ নিয়ে ই-মেল করা হলেও, জবাব মেলেনি। তবে নির্দেশিকার অপেক্ষা না-করে ইতিমধ্যেই ন্যূনতম টাকা রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে নিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক। কিন্তু বাধ্য না-হলে এখনই সেই পথে হাঁটতে রাজি নয় বাকি ব্যাঙ্কগুলি। এমনকী এই নিয়ম তুলে নেওয়া তো দূর অস্ৎ, বরং উল্টো দিকে হেঁটে জমার অঙ্ক বাড়িয়েও দিয়েছে কোনও কোনও ব্যাঙ্ক।
এ বার কি খুশি মতো তোলা যাবে টাকা?
ন্যূনতম টাকা গচ্ছিত রাখার বাধ্যবাধকতা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলির এত আপত্তি কেন?
ব্যাঙ্ককর্তাদের দাবি, কম খরচে তহবিল সংগ্রহে অন্যতম বড় ভূমিকা পালন করে সেভিংস অ্যাকাউন্ট। কারণ, এতে সুদের হার মেয়াদি আমানতের তুলনায় অনেকটাই কম। আর কারেন্ট অ্যাকাউন্টে সুদ দেওয়া না-হলেও, কম তার সংখ্যাই। কারণ, দিনে যত বার খুশি টাকা জমা-তোলার সুযোগ নিতে সাধারণত তা ব্যবহার করেন ব্যবসায়ীরা। তাই সেভিংস অ্যাকাউন্টে টাকা যত বেশি থাকবে,
ততই সুবিধা ব্যাঙ্কগুলির। বতর্মানে সেখানে বাধ্যতা- মূলক ভাবে ন্যূনতম একটি অঙ্ক জমা রাখার নিয়ম চালু আছে ব্যাঙ্কিং শিল্পে। বিভিন্ন ব্যাঙ্কের ক্ষেত্রে অবশ্য তা আলাদা। ওই নির্দিষ্ট অঙ্কের নীচে টাকার পরিমাণ নেমে গেলেই গ্রাহককে জরিমানা করে ব্যাঙ্কগুলি। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা জারি হলে গ্রাহকের ন্যূনতম টাকা জমা রাখার সেই বাধ্যবাধকতা আর থাকবে না। ফলে সুলভে তহবিল জোগাড় করতে গিয়ে ফাঁপরে পড়তে হবে বলে মনে করছেন ব্যাঙ্ককর্তারা।
ন্যূনতম জমার নিয়ম না-থাকলে, গ্রাহকদের জন্য বেশ কিছু সুবিধা চালিয়ে যাওয়াও সমস্যা হবে বলে মনে করছে ব্যাঙ্কগুলি। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, এমনিতেই সেভিংস অ্যাকাউন্ট চালু রাখতে একটা খরচ বইতে হয়। তার উপর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গ্রাহককে নিখরচায় দেওয়া হয় এটিএম কার্ড এবং আরও কয়েকটি পরিষেবাও। তাঁদের দাবি, সেভিংস অ্যাকাউন্টে সুদ কম বলেই বিনা পয়সায় ওই সমস্ত পরিষেবা গ্রাহকদের দিতে পারেন তাঁরা।
এ প্রসঙ্গে ফেডারেল ব্যাঙ্কের খুচরো ব্যবসা বিভাগের কর্তা ডি সম্পৎ বলেন, “ব্যাঙ্কিং পরিষেবার খরচ ক্রমশ বাড়ছে। তাই এই পরিস্থিতিতে নিয়ম বদলালে অ্যাকাউন্ট চালানোর খরচ আরও বাড়বে। আর তা মেটাতে নতুন ফি নেওয়ার কথা ভাবতে শুরু করতে পারে ব্যাঙ্কগুলি।” আইডিবিআই ব্যাঙ্কের এগ্জিকিউটিভ ডিরেক্টর আর কে বনশলের মতে, “যাঁরা মোটা টাকা সেভিংসে রাখেন, তাঁদের ডি-ম্যাট-সহ বিভিন্ন পরিষেবা নিখরচায় দেওয়া হয়। কিন্তু নিয়ম বদলালে তা লাভজনক ভাবে চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।”
ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের এক কর্তার মতে, “ন্যূনতম টাকার বাধ্যবাধকতা না-রেখেও সীমিত সুবিধা-সহ বিশেষ ধরনের সেভিংস অ্যাকউন্ট খোলা যেতে পারে। যেমন, আমাদের ব্যাঙ্কের ‘ইউনাইটেড বেসিক সেভিংস অ্যাকাউন্ট’। এই অ্যাকাউন্টে চেক বই বা এটিএম পরিষেবার সুবিধা থাকে না। কিন্তু তা বলে সব সেভিংস অ্যাকাউন্টেই ন্যূনতম জমার নিয়ম তুলে দিলে সমস্যা হতে পারে। কারণ, সে ক্ষেত্রে ওই সব পরিষেবা চালানোই লাভজনক না-থাকার সম্ভাবনা।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.