অভিনব বিন্দ্রার ইভেন্টটা কবে? উসেইন বোল্টের দৌড়? সাইনা নেহওয়ালের পরের ম্যাচটা কখন?
সুরেশ রায়নার আগ্রহের কেন্দ্রে যদি সাইনা নেহওয়াল থাকেন, বীরেন্দ্র সহবাগের বিজেন্দ্র সিংহ। আবার মনোজ তিওয়ারি বা উমেশ যাদব জানতে চান, ভারতীয়দের ইভেন্টগুলো টিভিতে কখন দেখতে পাবেন? সব মিলিয়ে কলম্বোয় টিম হোটেলে টিম ইন্ডিয়া-র অবসর জুড়ে থাকছে লন্ডন অলিম্পিক। এমনিতে লন্ডনে শ্রীলঙ্কার কোনও অ্যাথলিটের পদক জয়ের সম্ভাবনা কম, তবু টিম হোটেলের কফিশপে বা শহরের ভারতীয় রেস্তোরাঁর বড় স্ক্রিনে সব সময়ই অলিম্পিকের ছবি। সন্ধেয় সুরেশ রায়নাকে ধরতেই উৎসুক গলা, “এইমাত্র খবর পেয়েছি সাইনা ফার্স্ট রাউন্ডে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে জিতেছে। আমি সাইনার ফ্যান। লন্ডনে ও পদক জিতছে দেখতে চাই। এত ভাল শুরু যখন হয়েছে, দেখবেন ভাল কিছুই হবে।” পরের রাউন্ডে সাইনার প্রতিদ্বন্দ্বী যে বেলজিয়ামের, সে খবরও এতক্ষণে জেনে ফেলেছেন রায়না। সোমবারই সাইনার পরের রাউন্ডের ম্যাচ রায়না প্র্যাক্টিস থাকলেও মিস করতে চান না। “দুপুরে প্র্যাক্টিস আছে। ওই সময়টায় খেলা না পড়লে কোনও ভাবেই সাইনার খেলা মিস করতে চাই না,” বলছিলেন গত রাতের ম্যান অব দ্য ম্যাচ। যাঁকে এই মুহূর্তে টনি গ্রেগ ওয়ান ডে-র সেরা ‘ফিনিশার’ বলছেন।
সার্টিফিকেটটা নিয়ে রায়না অবশ্য আদৌ গদগদ হচ্ছেন না। বরং বললেন, “আমার কাজটাই তো ফিনিশ করার। ৩৫-৪০ ওভারের আগে বেশির ভাগ দিন নামার সুযোগ হয় না। কিন্তু গত পাঁচ ছ’বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য এই বিশ্বাসটা আছে যে, ৪৫টা বল পেলেও আমি ৬৫ থেকে ৭০ রান করবই। গত কাল অবশ্য ইরফানও দারুণ ব্যাট করেছে।”
প্রেমদাসায় ২৮৬ তাড়া করে শ্রীলঙ্কার মাঠে রান তাড়া করে জেতার সর্বকালীন রেকর্ড গড়ে ম্যাচ জিতেছে ধোনির টিম। মঙ্গলবার প্রেমদাসায় চার নম্বর ম্যাচটা জিতলেই এক দিনের সিরিজ পকেটে। আজ প্র্যাক্টিস থেকে ছুটি, শুধু বিকেলে ছিল ফুটবল সেশন। মিডিয়ার বাড়াবাড়ি এই সিরিজে নেই, কাজেই খোশমেজাজে রয়েছে ধোনি ও তাঁর দলবল।
ম্যাচ জিতে গেলে সব ভুলের সাত খুন মাফ হওয়ারই নিয়ম। তবু ‘ডেথ ওভারস’-এ বোলারদের ৯০ এর উপর রান দেওয়া নিয়ে ভুগতে হয়েছে, গত রাতে ম্যাচ শেষে বলছিলেন গম্ভীর। আরও তাৎপর্যের, টানা দুটো শূন্য করার পরেও রোহিত শর্মাকে নিয়ে পড়ে আছেন কেকেআর অধিনায়ক। ফের বলছেন, “গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে একটা সময় আমি আর বীরু ফেল করছিলাম। তখন একার হাতে বেশ কিছু ম্যাচ বের করেছে রোহিত। এখনও দেশের সেরা প্রতিভা। খারাপ সময় যাচ্ছে বলেই কাউকে ছেঁটে ফেলা যায় না।” ‘প্রতিভা’য় আস্থা রাখতে গিয়ে টিম যে ডুবতে বসেছিল এবং রায়না-ইরফান জুটির সাফল্যের জন্যই এত কথা বলার জায়গা থাকছে, সেটা নিয়ে অবশ্য কারও মাথাব্যথা নেই। তাই টানা ১৪ ম্যাচ ধরে অবহেলিত ও বঞ্চিত মনোজ তিওয়ারি চোখ রাখছেন টিভির পর্দায়। অলিম্পিক দেখে মনকে ব্যস্ত রাখতে চাইছেন। কোথাও একটা বেফাঁস মন্তব্য মানে আরও পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা। গত ম্যাচের আগের দিন প্রেমদাসার নেটে দেখেছিলাম অবিচলিত ও উদাসীন, আজও তাই। অপেক্ষা, ধৈর্য আর মোটিভেশনাল ভিডিও এখনও সম্বল হাওড়ার যুবকের। আর আছে লন্ডন অলিম্পিক। লিয়েন্ডার-সানিয়ার ম্যাচ দেখতে চান, দেখতে চান সাইনার অগ্রগতি আর অবশ্যই বোল্টকে।
মঙ্গলবারের ম্যাচে খেলবেন? কোনও ইঙ্গিত? ইঙ্গিত নেই, মন খারাপের দাওয়াইও নেই। টিভি খুলে অলিম্পিক দেখা ছাড়া আর কী-ই বা করতে পারেন মনোজ?
|