সাত সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাওড়া, বিকেলে সেখান থেকে ট্রেনে চেপে চেন্নাইআর এই ঝক্কি পোহাতে হবে না শিল্পাঞ্চলবাসীকে। দুপুরের খাওয়া সেরে ধীরেসুস্থে বিকেলে ট্রেন ধরতে পারবেন তাঁরা। মাত্র ১৬ ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন চেন্নাই। কারণ, এ বার সপ্তাহে এক দিন করে আসানসোল থেকে রওনা দেবে চেন্নাই যাওয়ার এক্সপ্রেস ট্রেন।
আসানসোল-চেন্নাই সেন্ট্রাল এই ট্রেনের সূচনা হয়েছে শনিবার। সে দিন দুপুর ১টায় রেলমন্ত্রী মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় বর্ধমান স্টেশন থেকে রিমোটের মাধ্যমে ট্রেনটির যাত্রাপথের সূচনা করেন। সেই সময়ে আসানসোল স্টেশনে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক ও রেলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের ডিআরএম জগদানন্দ ঝা জানান, প্রতি বুধবার বিকেল ৪টের সময় ট্রেনটি আসানসোল থেকে ছাড়বে। পৌঁছবে পর দিন রাত ১১টা নাগাদ। প্রতি শনিবার সেটি আবার আসানসোলে ফিরবে। |
আইনমন্ত্রী তথা আসানসোলের বিধায়ক মলয়বাবু জানান, কয়েক বছর ধরে শিল্পাঞ্চলবাসী আসানসোল থেকে চেন্নাই পর্যন্ত একটি ট্রেনের দাবি করছিলেন। অবশেষে তা পূরণ হল। গত রেল বাজেটে এই ট্রেনটি চালুর কথা ঘোষণা করেন রেলমন্ত্রী। মলয়বাবু বলেন, “এর ফলে শুধু শিল্পাঞ্চলের বাসিন্দারাই নন, আশপাশের জেলা ও সংলগ্ন রাজ্যের বাসিন্দারাও সুবিধা পাবেন।”
শনিবারই করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেন্নাই যাওয়ার জন্য হাওড়াগামী ট্রেন ধরতে আসানসোলে আসেন পাণ্ডবেশ্বরের বাসিন্দা শ্যামল ঘোষ। তিনি জানান, ছোট মেয়ের চোখের চিকিৎসার জন্য তাঁকে প্রতি মাসে চেন্নাই যেতে হচ্ছে। আসানসোল-চেন্নাই ট্রেন শুরু হওয়ায় খুশি শ্যামলবাবু বলেন, “হাওড়া গিয়ে ট্রেন ধরার ঝামেলা থেকে এ বার মুক্তি পাব।” এই ট্রেন চালু হওয়ায় খুশি এলাকার চিকিৎসক মহলও। তাঁরা জানান, চেন্নাইয়ের একাধিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান আসানসোল, দুর্গাপুরে তাদের শাখা খুলেছে। সেখানকার চিকিৎসকেরা এখানে আসেন। প্রয়োজনে এখানকার রোগীদের সেখানে যেতে হয়। চিকিৎসক অরুণাভ সেনগুপ্তের কথায়, “দক্ষিণ ভারতে চিকিৎসা করতে যাওয়ার উপায় সহজ হল।”
শুধু চিকিৎসা ক্ষেত্র নয়, এই ট্রেনের মাধ্যমে দু’প্রান্তের ব্যবসা-বাণিজ্যও শক্তিশালী হবে বলে মনে করছে ব্যবসায়ী মহল। আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন, “যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সব ধরনের ব্যবসারই উন্নতি হবে বলে আমরা আশা করছি।” |