রাজ্যের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে চূড়ান্ত হয়েছে বর্ধমান জেলাভাগের সিদ্ধান্ত। খনি ও শিল্পাঞ্চল নিয়ে তৈরি হতে চলেছে আলাদা জেলা। প্রশাসনিক জটিলতা কাটিয়ে তা বাস্তবায়িত হতে এখনও দেরি আছে। তবে নিজেদের শহরে জেলা সদরের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে আসানসোল ও দুর্গাপুর দুই শহরের বাসিন্দারাই।
সদর করা হোক আসানসোলেই, এই দাবি নিয়ে পথে নেমেছে এই মহকুমার একাধিক বণিক সংগঠন। এ বিষয়ে শহরে নানা বৈঠক, সম্মেলনও করছে নানা সংগঠন। তাদের দাবি, শিল্পাঞ্চলের স্বার্থে আসানসোলেই হোক জেলা সদর। আসানসোল চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সুব্রত দত্ত দাবি করেন, শিল্পাঞ্চলের সবচেয়ে পুরনো শহর এই আসানসোল। শিল্প কারখানা ও খনির সহাবস্থানে গড়ে ওঠা এই শহরে রয়েছে পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের সদর কার্যালয়। এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা ইসিএলের সদর কার্যালয়ও এখানে। সুব্রতবাবুর কথায়, “গত তিন দশক ধরে আমরা পৃথক একটি জেলা চেয়ে এসেছি। সেই দাবি পূরণ হতে চলেছে। আমাদের পরবর্তী দাবি, জেলা সদর হোক এই শহরেই।”
তাঁদের সঙ্গে এই দাবিতে সরব হয়েছে জামুড়িয়া, রানিগঞ্জ, বরাকর ও রূপনারায়ণপুরের বণিক সংগঠনগুলিও। জামুড়িয়ার চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক অজয় খেতানের দাবি, গোটা শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে আসানসোলেরই যোগাযোগের সুবিধা বেশি। উদাহরণ হিসেবে তিনি জানান, জামুড়িয়া থেকে যত সহজে আসানসোলের যোগাযোগ রাখা সম্ভব, আর কোনও শহরের সঙ্গে তা সম্ভব নয়। শিল্পাঞ্চলের উপর দিয়ে যাতায়াতকারী দূরপাল্লার যত ট্রেন আসানসোল স্টেশনে থামে, শিল্পাঞ্চলের অন্য কোথাও তা থামে না। অজয়বাবুর বক্তব্য, “গোটা শিল্পাঞ্চলের সুবিধার্থে আসানসোলকেই সদর হিসেবে চাইছি।”
বরাকর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি গিরিধারীলাল অগ্রবাল, রূপনারায়ণপুর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি বিশ্বনাথ রুজেরা আবার জানান, জেলা সদরে পৌঁছতে হলে এত দিন তাঁদের প্রায় ১৩০ কিলোমিটার রাস্তা পাড়ি দিতে হত। সেই ভোগান্তি যাতে আর না হয়, সে জন্যই নতুন জেলা সদর হিসেবে আসানসোলকে পেতে চান তাঁরা।
আসানসোলকে সদর হিসেবে পেতে আগ্রহী রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সও। সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান দাবি করেন, সকলের সুবিধার জন্যই নতুন একটি জেলা গঠন হচ্ছে। তাই এমন জায়গায় সদর কার্যালয় হওয়া উচিত যেখানে সাধারণ নাগরিকেরা সহজে যাতায়াত করতে পারেন। রাজেন্দ্রপ্রসাদবাবু বলেন, “আসানসোল শহরে সব রকমের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। সে দিক থেকে এখানে সদর কার্যালয় হলে কোনও আপত্তি ওঠা উচিত নয়।” বরাকর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি দীপক দুধানিও দাবি করেন, শিল্পাঞ্চলের ‘করিডর’ হিসেবে আসানসোল শহর ধরা হয়। তাই সদর এখানেই হওয়া উচিত। |