সরাসরি রোগের উৎস নয়, তবে দায়টাও কিছু কম নয়। কারণ চুপিসাড়ে রোগ ছড়িয়ে দিচ্ছে এই জিনটিই। নাম ‘আরএইচওসি’। কেমোথেরাপিকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এই জিনটিই স্তন ক্যানসার ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে বলে দাবি করলেন মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা। ‘প্লস ওয়ান’ পত্রিকায় তাঁদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে।
অনেক সময়েই দেখা যায়, কেমোথেরাপিতে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগিণীর শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হচ্ছে না। ক্রমাগত ছড়িয়ে পড়ছে স্তন ক্যানসার। মিশিগানের বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ সব ক্ষেত্রে আসলে ওই ‘আরএইচওসি’ জিন জ্বালানির মতো কাজ করছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই জিন শরীরের এক অঙ্গ থেকে অন্য অঙ্গে ক্যানসার ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এমনকী হাড়ের মধ্যেও সে ক্যানসার ছড়িয়ে দিতে পারে। এবং এর ফলে অনেক সময়ই দেখা যায় প্রাথমিক স্তরের স্তন ক্যানসারের পরিবর্তে হাড়ের ক্যানসারেই রোগিণীর মৃত্যু হয়।
মুখ্য গবেষক সোফিয়া মেরাজভার জানান, ক্যানসার স্টেম সেল নিয়ন্ত্রণের উপায় এ বার বাতলে দিতে পারবে তাঁদের পাওয়া জিনটিই। ইতিমধ্যেই ‘আরএইচওসি’ জিন কাবু করার ক্ষমতা রয়েছে, এমন একটি রাসায়নিকেরও সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। তবে ওষুধের বিষয়টি এখনও পরীক্ষাগারেই সীমাবদ্ধ।
সমাধান না মিললেও ‘আরএইচওসি’-এর আড়াল থেকে হানা দেওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই দেখছেন কলকাতার ক্যানসার শল্য চিকিৎসক গৌতম মুখোপাধ্যায়। মিশিগানের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে তিনি একমত। গৌতমবাবু বলেন, “সংখ্যায় কম হলেও অনেক সময় দেখা যায় স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত রোগিণীর কেমোথেরাপিতে উপকার হচ্ছে না। এর পিছনে যদি ওই জিনটিরই হাত থেকে থাকে, তা হলে সত্যিই এটি যুগান্তকারী আবিষ্কার। সে ক্ষেত্রে ‘আরএইচওসি’ জিনটিকে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে, ওই সব রোগিণীর ভীষণ উপকার হবে।” |