আগামী ৩১ জুলাই ঋণনীতির পর্যালোচনায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার নাও বাড়াতে পারে। অন্তত শেয়ার বাজার মহলের তাই আশঙ্কা। সেই কারণেই ওই দিনটি যত এগিয়ে আসছে ততই লগ্নিকারীদের মধ্যে বাড়ছে হতাশা। অনিশ্চত হচ্ছে বাজার। পড়ছে সূচক। বৃহস্পতিবার এক ধাক্কায় সেনসেক্স পড়ে গিয়েছে ২০৬.২৩ পয়েন্ট। তবে এ দিন টাকার দাম অনেকটাই বেড়েছে। ইউরোপের আর্থিক পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে, এই আশায় গত চার দিনের পতন কাটিয়ে উঠে বাজার বন্ধের সময়ে ডলারে টাকার দর বেড়েছে ৬৪ পয়সা। ফলে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়িয়েছে ৫৫.৫২ টাকা।
সারা দিন ঢিমেতালে লেনদেন হলেও বাজার বন্ধ হওয়ার মুখে খবর আসে, ইউরোপীয় শীর্ষ ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট মারিও দ্রাঘি ইউরো অঞ্চলের অর্থনীতিকে বাঁচাতে সব রকম ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। এর প্রভাবে রফতানিকারী ও বিদেশি লগ্নিকারীরা বিপুল পরিমাণে ডলার বিক্রি করতে শুরু করেন। ফলে বাড়তে থাকে টাকা।
এ দিন সূচক কমে দাঁড়িয়েছে ১৬,৬৩৯.৮২ অঙ্কে। যা গত দেড় মাসে সর্বনিম্ন। দেশীয় বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলিও। যার জেরে তারা টানা বিক্রি করে চলেছে শেয়ার। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী ওই সব সংস্থা গত বুধবারই ভারতের বাজারে ৫৮৩.৬১ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। বিদেশি লগ্নিকারীদের শেয়ার বিক্রি সূচকের পতনকে ত্বরান্বিত করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
এ দিন পতনের তাৎক্ষণিক কারণ হিসেবে অবশ্য আইটিসির চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিক ফলাফলের দিকেই আঙুল তুলছে শেয়ার বাজার মহল। ভোগ্যপণ্য প্রস্তুতকারী ওই সংস্থার আর্থিক ফলাফল শেয়ার বাজারকে খুশি করতে পারেনি। এই তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) আইটিসির মোট আয় হয়েছে ৬৫৫২.২১ কোটি টাকা। মুনাফা ১৬০২.১৪ কোটি টাকা।
এ দিকে, বেশ কিছু রাজ্যে তেলের দাম বাড়ায় মূল্যবৃদ্ধি বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ার ফলেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষে সুদের হার কমানোর রাস্তায় হাঁটা সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ধারণার জেরেই ব্যাঙ্ক সুদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পণ্যের বাজার খারাপ হতে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা। যার জেরে এই দিন বিশেষ করে কমেছে গাড়ি এবং আবাসন সংস্থার শেয়ার দর। টাটা মোটরসের দর ৩.৮০% পড়ার পাশাপাশি ডিএলএফ পড়েছে ২.৮৫%।
তবে বিএনকে ক্যাপিটাল মার্কেটসের এমডি অজিত খান্ডেলওয়ালের মতো বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বেশি চিন্তিত বর্ষা কেমন হবে, তা নিয়েই। খান্ডেলওয়াল বলেন, “বর্ষার শুরুটা আদৌ ভাল হয়নি। পরে ভাল বৃষ্টি না হলে এর বিরূপ প্রভাব পড়তে বাধ্য। যার হাত থেকে রেহাই পাবে না শেয়ার বাজারও।” |