১১ মাস আগে খসড়া তৈরি হলেও রাজ্যের নয়া তথ্যপ্রযুক্তি নীতি এখনও ঘোষিত হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর মন্ত্রিসভার আসন্ন পরবর্তী বৈঠকেই চূড়ান্ত হতে পারে সেই নীতি। পেতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর অনুমোদন।
আগামী ২৩ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠক হওয়ার কথা। সেই বৈঠকে ওই নীতি চূড়ান্ত হতে পারে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট মহল। একই সঙ্গে আরও দু’টি প্রকল্পে আনুষ্ঠানিক শিলমোহর পড়ার কথা এই বৈঠকে। প্রথমটি কল্যাণীতে ৫০ একর জমির উপরে কেন্দ্র-রাজ্য উদ্যোগ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফর্মেশন টেকনোলজি গড়ে তোলা। দ্বিতীয়টি রাজারহাটে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা আই টি সি ইনফোটেককে পুরনো দরে ১৫ একর জমি দেওয়া।
প্রায় এক বছর আগে তৈরি হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি নীতির খসড়া। গত বছর অগস্ট মাসে বণিকসভা সি আই আই-এর অনুষ্ঠানে এসে শিল্প তথা তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, নয়া নীতির খসড়া তৈরি। পরে সরকারের এক বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে এই নীতি ঘোষণা করা হবে বলে ঠিক হয়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নীতি প্রকাশ করার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, তথ্যপ্রযুক্তি নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল রাজ্য সরকারের অন্যতম শরিক কংগ্রেস। ক্ষুদ্র, কুটির ও সেচ মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এই নীতিতে গ্রামাঞ্চলের আরও বেশি প্রাধান্য দাবি করেন। শুধুই শহরাঞ্চলের বাইরে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বিনিয়োগ নয়। চাই গ্রামাঞ্চলের বাজারের উপযুক্ত তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উন্নয়ন। যেমন, দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ও উত্তরপ্রদেশের গ্রামাঞ্চলে এই শিল্পের জন্য রয়েছে বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং বা ‘রুরাল বিপিও’।
গ্রামাঞ্চলকে গুরুত্ব দেওয়ার প্রসঙ্গেই আটকে যায় নীতি। ফের খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় সংযোজন করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, খসড়া নীতিতে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের প্রসারের পাশাপাশি ছোট ও মাঝারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা কয়েক গুণ বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। জেলায় জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি ‘হাব’ তৈরি করার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলিকে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছিলেন পার্থবাবুও।
নীতির চেয়েও এই নয়া উৎসাহ বা ‘ইনসেনটিভ’ প্রকল্পের দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজ্যের ছোট ও মাঝারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। ২০০৯ সালে শেষ ‘ইনসেনটিভ’ প্রকল্প তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, নয়া নীতিতে পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে লগ্নি করলে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়বে। কিন্তু সেই বৃদ্ধির পরিমাণ কতটা, তা জানতে আগ্রহী তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পমহল।
অবশ্য ন্যাসকমের মতে পরিকাঠামো গড়ে দেওয়াও এক রকমের আর্থিক সহায়তা। ন্যাসকমের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান সুপর্ণ মৈত্র জানান, “জেলায় জেলায় এই শিল্পের পরিকাঠামো জোগাতে ‘ইনকিউবেশন সেন্টার’ গড়ে দিলে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার পক্ষে বিনিয়োগ করা সহজ হবে। সে ক্ষেত্রে এটাই সরকারি আর্থিক সহায়তা হিসেবে ধরে নিতে হবে।’’ |