খেলাধুলোয় সরকারি হস্তক্ষেপ কতটা জরুরি, বা আদৌ জরুরি কি না, সেই প্রশ্ন এ বার ফের প্রকাশ্যে এল সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভাকে ঘিরে।
বুধবার বিকেলে হঠাৎই সিএবি-তে এসে পৌঁছল আটটি জেলার আট জন জেলাশাসকের চিঠি। এর মধ্যে আছেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, বীরভূম, বাঁকুড়া, উত্তর দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া এবং শিলিগুড়ির জেলাশাসকেরা। সিএবির ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। ক’দিন আগে আইএফএ বা রাজ্য অ্যাথলেটিক্স সংস্থার নির্বাচনে জেলাশাসকরা কেউ আগ্রহ দেখাননি। সভায় আসেননি।
সরকারি চিঠিগুলোর মূল বক্তব্যের সারাংশ একই। মনে হচ্ছে, একই জায়গা থেকে লেখা হয়েছে। চিঠিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, ২৮ জুলাই সিএবি-র বার্ষিক সাধারণ সভায় কারা জেলার প্রতিনিধি হবেন, তা জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদাধিকার বলে ঠিক করবেন স্বয়ং জেলাশাসক। সে জন্যই জেলাশাসকের অনুমতি ছাড়া যেন অন্য কাউকে সভায় প্রবেশাধিকার না দেওয়া হয়। সিএবি অবশ্য তা মানছে না। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার জেলাশাসক নারায়ণস্বামী নিগম যেমন রাতে আনন্দবাজারকে বললেন, “জেলার ক্রীড়া সংস্থার প্রেসিডেন্ট হলেন জেলাশাসক। আমরা কাউকে প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করে পাঠাইনি। কাজেই আমরা মনে করছি, কে প্রতিনিধি হবে সেটা নিয়ম মেনে আমরাই ঠিক করব। সেটাই সিএবি-কে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।”
বার্ষিক সাধারণ সভার ঠিক আগে বিভিন্ন জেলাশাসকের পাঠানো চিঠিগুলিকে কেন্দ্র করে বুধবার বিকেল থেকে চাঞ্চল্য ছড়ায় সিএবি ও বিভিন্ন জেলায়। কয়েক দিন আগেই জেলা সংস্থাগুলি ভেঙে দেওয়ার সরকারি নির্দেশ আদালত খারিজ করে দেওয়া সত্ত্বেও কী ভাবে জেলাশাসকরা চিঠি পাঠাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অন্যতম যুগ্ম-সচিব বিশ্বরূপ দে বলছেন, “প্রতিনিধি নির্বাচন করতে জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রেসিডেন্টের অনুমতি লাগে না। জেলা সংস্থার সচিবের কাছে সিএবি-র তরফ থেকে ফর্ম পাঠানো হয়। সিএবি সংবিধানে সংস্থার প্রেসিডেন্টের কাছে ফর্ম পাঠানোর কোনও নিয়ম নেই। আমরা বৃহস্পতিবার জেসাশাসকদের সেটা জানিয়ে দেব।” রাজ্য ক্রীড়া সংস্থার সচিব কল্যাণ ঘোষালও বিস্মিত, “জেলাশাসকরা এমন সভায় গেছেন বলে শুনিনি। ধরে নিলাম, জেলাশাসকরা খুব উৎসাহী হয়ে পড়েছেন খেলায়। কিন্তু ক’দিন আগে আই এফ এ, রাজ্য অ্যাথলেটিক্সের নির্বাচনে ডি এমরা গেলেন না কেন?”মূলত কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনাই জেলাশাসকদের চিঠির নেপথ্যে আছে বলে মনে করা হচ্ছে। শাসক গোষ্ঠীর সরকারি প্যানেল এখনও ঘোষিত হয়নি। তবে মোটামুটি ভাবে ঠিক আছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে থেকে যাচ্ছেন জগমোহন ডালমিয়া। অন্যতম ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে আসছেন বিশ্বরূপ দে। দুই সচিব পদে সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় এবং সুজন মুখোপাধ্যায়। যাবতীয় বিতর্ক কোষাধ্যক্ষ পদ ঘিরে। সেখানে শাসক গোষ্ঠীর পছন্দ নরেশ ওঝা। পাশাপাশি প্রবীর চক্রবর্তী প্রার্থী হতে চাইছেন। নাম উঠেছে জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও। আবার ডালমিয়া কোষাধ্যক্ষ পদে অহেতুক নির্বাচনের পক্ষপাতী নন। |