|
|
|
|
ন’বছরে মেলেনি ‘সুবিচার’ |
|
স্বেচ্ছামৃত্যু চান অ্যাসিড
হামলায় আক্রান্ত তরুণী
সংবাদসংস্থা • নয়াদিল্লি |
|
সাহসে ভর করে ইভ টিজিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ১৮ বছরের তরুণী।
সেটাই ছিল তাঁর ‘অপরাধ’। ‘শাস্তি’ হিসেবে তাঁর মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেয় দুষ্কৃতীরা।
মুখে অসহ্য ক্ষত আর নষ্ট হয়ে যাওয়া দৃষ্টিশক্তি নিয়ে কেটে গিয়েছে ন’টা বছর। তাঁর সেই সাজার মেয়াদ ফুরোয়নি এখনও। কিন্তু এ বার ‘মুক্তি’ চান সাতাশ বছরের সোনালি মুখোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, সুবিচার পাননি তিনি। দোষীরা এই মুহূর্তে ‘স্বাভাবিক জীবনযাপন’ করছে। কিন্তু তাঁর চিকিৎসার খরচ চালাতে পারছে না পরিবার। এই অবস্থা থেকে রেহাই পেতে তাই স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবি জানিয়েছেন সোনালি।
ঘটনার শুরু ২০০৩-এর এপ্রিলে। জন্মস্থান ধানবাদেই পড়শি কয়েক জন যুবকের অভব্য আচরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সোনালি। তাঁর কথায়, “ওরা তখনই হুমকি দেয়, আমার মুখের হাল পাল্টে দেবে! তাতেও ভয় পাইনি। তার ফলাফল কী হয়েছিল সেটা তো সবাই জানে।” রাতের অন্ধকারে ঘুমন্ত সোনালির মুখে অ্যাসিড ঢেলে দিয়ে যায় ওই যুবকরা। সেই থেকে চিকিৎসার জন্য কয়েক সপ্তাহ অন্তরই সোনালিকে নিয়ে দিল্লির সফদরজঙ্গ হাসপাতালে ছুটতে হয় তাঁর বাবা-মাকে। তবে সেরে ওঠা তো দূর, অবস্থা আরও খারাপই হয়েছে সোনালির।
সেরে ওঠার চেষ্টার পাশাপাশি চলেছে দোষীদের বিরুদ্ধে লড়াইও। কিছুটা সাফল্যও মিলেছিল। তিন বছর জেল হয় সোনালির হামলাকারীদের। কিন্তু জেল থেকে বেরিয়েই তাঁরা ফের হুমকি দিতে শুরু করে বলে অভিযোগ সোনালির। ফের পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থ হন সোনালি। কিন্তু লাভ হয়নি। বাবা চণ্ডী দাস মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “হাইকোর্টেও আবেদন করেছিলাম। কিচ্ছু হল না। ওরা তো দিব্য হেসেখেলে আছে!” এই টানাপোড়েনে ক্রমে ফুরিয়েছে পরিবারের সঙ্গতি। সোনালির কথায়, “আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে বাবা জমিজমা থেকে শুরু করে গয়নাগাঁটি সবই বেচে দিয়েছেন।” চিকিৎসার অভাবে তিলতিল করে মৃত্যুর দিকে এগোনোর বদলে তাই স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবি করছেন সোনালি। তাঁর কথায়, “আর বাঁচার ইচ্ছে নেই। সুবিচার চেয়েছিলাম। পাইনি। কিন্তু বিচারব্যবস্থা আমাকে মরে যাওয়ার অধিকারটুকু তো দিতে পারে!” |
|
|
|
|
|