জমির দখল নিয়ে কংগ্রেস ও সিপিএম সমর্থকদের সংঘর্ষে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের নন্দীবাটি এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। রবিবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক দফায় ওই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। জখম হন দুই মহিলা সহ ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে ৬ জনকে হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযোগ সংঘর্ষের সময় ব্যাপক ভাঙচুর ও লুঠপাটের ঘটনা ঘটে। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “যে জমি নিয়ে বিতর্ক সেখানে একটি বেসরকারি মাদ্রাসা রয়েছে। সেটা নিয়ে দু’পক্ষের গোলমাল হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীবাটি এলাকায় বেসরকারি একটি মাদ্রাসা কমিটির প্রত্যেকে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থক বলে পরিচিত। ২০০৬ সালে স্থানীয় বাসিন্দা কলিমুদ্দিন আহমেদ ২১ শতক জমি মাদ্রাসাকে দানপত্র রেজিস্ট্রি করে দেন। সিপিএমের দাবি, ওই ২১ শতকের মধ্যে রয়েছে দলীয় সমর্থক জুমাতুন নেশার ৭ শতক জমি। অভিযোগ, জাল ডিড করে জুমাতুন নেশার জমি মাদ্রাসার নামে রেজিস্ট্রি করা হয়েছে। ওই অভিযোগ নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে কংগ্রেস-সিপিএমের মধ্যে গোলমাল চলছিল। রবিবার তা চরমে পৌছয়। খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ যায়। সোমবার দু’পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে থানায় দেখা করতে বলা হয়। কিন্তু পুলিশ চলে যেতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই ঘটনায় বাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করে লুঠপাট চালানোর অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ উঠেছে দু’তরফে। সিপিএম নেতৃত্ব জানান, কংগ্রেস কর্মীরা তালা ঝুলিয়ে দেওয়ায় তাঁদের সমর্থক দুটি পরিবার আতঙ্কে গ্রামছাড়া। অভিযোগ, বরুই পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য জসিমুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে ওই হামলা চলে। এ দিকে সিপিএমের স্থানীয় যুব নেতা আফসার হোসেনের নেতৃত্বে ওই হামলা চলে বলে অভিযোগ কংগ্রেসের। সোমবার সকালে দু’তরফে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দু’পক্ষের লোকজন লাঠিসোটা ছাড়াও হাঁসুয়া, বল্লম নিয়ে একে অন্যের উপর চড়াও হয়। সংঘর্ষে মাথা ফাটে সিপিএম সমর্থক জামালুদ্দিন আহমেদ ও মকরম আলির। বেধড়ক মারধর করা হয় কংগ্রেস সমর্থক আঙ্গুরি বিবিকে। গুরুতর জখম হন আঞ্জুরা বিবি নামে এক মহিলা সহ দুই কংগ্রেস সমর্থক মঞ্জুর আলম ও আবদুল জব্বার। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ, কংগ্রেস কর্মীরা তাঁদের কর্মীদের উপরে ইট ছোঁড়ায় সংঘর্ষ শুরু হয়। আহতদের চিকিৎসা নিয়ে যখন প্রত্যেকে ব্যস্ত তখন বাড়ি ও দোকানে হামলা চলে। যদিও অভিযুক্ত সিপিএমের স্থানীয় যুব নেতা আফসার হোসেন বলেন, “ঘটনার সময় এলাকায় ছিলাম না। কংগ্রেস কর্মীরা হামলা চালায়। আমাদের নামে মিথ্যা অভিযোগ হচ্ছে।” সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ অস্বীকার করে কংগ্রেস নেতা জসিমুদ্দিন আহমেদ বলেন, “সিপিএম সমর্থকরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে কংগ্রেস কর্মী ও সমর্থকদের উপর হামলা চালালে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়।” |