‘মুক্তিপণ’ আদায়ের চেষ্টায় এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগে এক আইনজীবী সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রবিবার বিহারের কাটিহার থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে মাটিগাড়া থানার পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাতে আরও ২ জনকে শিলিগুড়ি থেকে ধরা হয়। পুলিশ জানায়, ওই ব্যবসায়ীর নাম রামআশ্রয় সরাব (৬২)। ধৃতদের নাম, ওমপ্রকাশ সাহানি, অসীম সরকার এবং উত্তম কুমার। উত্তমের বাড়ি কাটিহারে। অসীমবাবুর বাড়ি শিবমন্দিরে। তিনি পেশায় আইনজীবী। অপর জনের বাড়ি বাগডোগরায়। এ দিন তাদের শিলিগুড়ি এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। অভিযুক্তদের আদালতে তোলার সময় ব্যবসায়ী ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “রবিবার বিহারের কাটিহার থেকে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়। সে সময় পুলিশের উপরে গুলি চালিয়ে কয়েকজন পালিয়ে যায়। পরে আরও ২ জনকে ধরা হয়েছে। তদন্ত হচ্ছে। ব্যবসায়ীর খোঁজে পুলিশের একটি দল বিহারের ভাগলপুরে গিয়েছে।” শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান তথা ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নান্টু পাল বলেন, “ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে বিহারে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়। তাঁর ছেলে ভাগলপুর থানায় গিয়ে মৃতদেহ সনাক্ত করেছেন। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি করছি। প্রয়োজনে আন্দোলন হবে।” শুক্রবার মাটিগাড়ার কদমতলা থেকে অপহরণ করা হয় রামআশ্রয়বাবুকে। পুলিশ জানতে পারে, বাগডোগরার বাসিন্দা ওমপ্রকাশ সাহানির সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল ওই অলঙ্কার ব্যবসায়ীর। তিনি অভিযুক্তের কাছে এক লক্ষ টাকা পেতেন। অপহরণ করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের ছক কষেন ওই ব্যক্তি। তা থেকে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন। তিনি শিলিগুড়ি আদালতের আইনজীবী অসীমবাবুকে সঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়ে বিহারের একটি দুষ্কৃতী দলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের মাধ্যমেই অপহরণ করে তারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবসায়ীর ছেলে জিতেন্দ্রপ্রসাদবাবুর মোবাইলে ফোন করে ১০ লক্ষ টাকার দাবি করা হয়। বিষয়টি শিলিগুড়ি ও মাটিগাড়া থানার পুলিশকে জানান জিতেন্দ্রবাবু। অভিযুক্ত অসীম সরকার শিলিগুড়ির একটি হোটেল থেকে অপহৃতের পরিবারের সদস্যরা কি করেন, তার উপর নজরদারি করছিলেন। কাটিহারের কুরশিলাতে দুষ্কৃতী দলের হাতে টাকা তুলে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। পুলিশের পরামর্শেই জিতেন্দ্রবাবু নিজে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে সেখানে যান। বিহার পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিলিগুড়ি পুলিশের একটি দলও সেখানে ওৎ পেতে থাকেন। সকাল ১১টা নাগাদ টাকা তুলে দেওয়ার সময় দুষ্কৃতীরা বুঝতে পারে পুলিশ তাদের ঘিরে ধরেছে। গুলি চালিয়ে ২ জন পালিয়ে যায়। উত্তম কুমারকে ধরে ফেলে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই বাকি ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতরা জানিয়েছে, ব্যবসায়ীকে খুন করে বিহারে নিয়ে যাওয়া হয়। |