চলতি বর্ষায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হল শিলিগুড়িতে। গত রবিবার থেকে ২৪ ঘণ্টায় ২৪০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সন্ধ্যার পরেই বৃষ্টি হয়েছে ১৭০ মিলিমিটারের মত। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, গত বছর জুলাই মাসে একদিনে ২৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড রয়েছে। যা এ বার এখনও পর্যন্ত ৫ মিলিমিটার ছাপিয়ে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিভাগের প্রধান সুবীর সরকার বলেন, “গোটা উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়িতেই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। গতবার জুলাই মাসে ২৩৫ মিলিমিটারের একদিনের রেকর্ড রয়েছে। আরও বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।” কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, মৌসুমী অক্ষরেখা এবং ঘূর্ণাবর্তের জেরেই দার্জিলিং জেলার হিমালয়ের পাদদেশে থাকা শিলিগুড়িতে এত বেশি বৃষ্টি হচ্ছে। তবে দার্জিলিং পাহাড়ে সেই তুলনায় বৃষ্টি অনেকটাই কম। সিকিমে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ১২ শতাংশেরও বেশি ছাড়িয়ে গিয়েছে চলতি সপ্তাহে। সিকিম এবং উত্তরবঙ্গ মিলিয়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে ১৫ শতাংশের বেশি ছাড়িয়েছে। এই সপ্তাহে এটা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বলে কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের কর্তাদের দাবি করেছেন। দার্জিলিং, ভুটান সহ পাহাড়ি এলাকায় সোমবার সকাল থেকে ফের বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “শিলিগুড়িতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টায় জলপাইগুড়ি, কোচবিহার জেলা সহ পাহাড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।” এ দিকে সিকিম, দার্জিলিং পাড়াড়ে টানা বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন নদীর জলস্তর সোমবারও বেড়েছে। আবহাওয়া দফতরের কর্তারা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় শিলিগুড়ির লাগোয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি এলাকায় তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। জোর বৃষ্টি হয়েছে ডুয়ার্সের মালবাজার, নাগরাকাটা, চালসা, হাসিমারা, বক্সাদুয়ারের মত এলাকাগুলিতে। এরমধ্যে রঙ্গোতে ১১২ মিলিমিটার, মূর্তিতে ১৮৩ মিলিমিটার, নাগরাকাটায় ১০৯ মিলিমিটার, গজলডোবায় ১৭৪ মিলিমিটার বাগডোগরায় ১৩২ মিলিমিটার, চম্পাসারিতে ২৪০ মিলিমিটার, কালিম্পঙে ৭৭ মিলিমিটার, দার্জিলিঙে ৮৮ মিলিমিটার, হাসিমারায় ৭৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অতিবৃষ্টির জেরে সোমবার শিলিগুড়ির সমস্ত প্রাথমিক স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আজ, মঙ্গলবার থেকে সমস্ত স্কুলে স্বাভাবিক পঠনপাঠন হবে। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান সমর চক্রবর্তী বলেন, “অনেটাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। মহকুমা সর্বত্র খোঁজ নিয়েছি। নতুন করে পরিস্থিতির খারাপ হলে সেইমত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |