বন্যা দুর্গতদের ত্রাণ পাঠাতে কুনকি হাতি নামানো হল ডুয়ার্সে। কুচি ডায়না ও ডায়না নদীর জলের তোড়ে নাগরাকাটার খয়েরকাটা গ্রামে যাওয়ার কাঠের সেতু উড়ে গিয়েছে। গোটা গ্রাম জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এলাকার ৩৫০ পরিবার কার্যত না-খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। খাবার নেই। পানীয় জল দূষিত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে ওই এলাকায় ত্রাণ পাঠাতে বন দফতরের দুটি কুনকি হাতি সূর্য ও ফুলমতিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মহকুমাশাসক বলেন, “স্রোতের তীব্রতা এমনই যে ওই গ্রামটিকে অন্য কোনও ভাবেই ত্রাণ পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। সেই জন্যই কুনকি হাতি আনা হয়েছে। পাশাপাশি ভেঙে পনা সেতু মেরামতির ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা চলছে।” পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সন্ধ্যায় নাগরাকাটায় ছুটে যান সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়াও। আজ, মঙ্গলবার সকালে তিনি ওই এলাকা পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক জোসেফ মুণ্ডা। সেচমন্ত্রী বলেন, “খয়েরকাটা গ্রামের পরিস্থিতির কথা জানতে পেরেই ওই এলাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এলাকার গিয়ে সেচ দফতরের পক্ষ থেকে কী ভাবে সাহায্য করা যায় সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।” এদিকে, রবিবার রাতে মালবাজার ব্লকের মোয়ামারি চর থেকে ৫০০ পরিবার এবং ওয়াশাবাড়ি চা বাগানের ডোবাবস্তি থেকে ৪০টি পরিবারকে উদ্ধার করেছে প্রশাসন। দুর্গতদের ত্রাণ শিবিরে রাখা হয়েছে। খয়েরকাটা গ্রামে ঢোকার কাঠের সেতুটি শনিবার গভীর রাতে ভেঙে যায়। পাশাপাশি, কুচি ডায়না ও ডায়না নদীর জল গ্রামে ঢুকে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে ওই গ্রামে ঢোকার জন্য কুনকি হাতি ব্যবহারের কথা ভাবা হলেও সেতু মেরামতির ব্যাপারে সামরিক বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার কথাও ভাবছে মহকুমা প্রশাসন। এই ব্যাপারে বিন্নাগুড়ি সেনা ছাউনির ইঞ্জিনিয়রদের পরামর্শ নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। মালবাজারে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক সুব্রত ভট্টাচার্য জানান, গরুবাথান লাগোয়া অম্বিয়কের ঝুলন্ত সেতু প্রযুক্তি খয়েরকাটায় কাজে লাগানোর কথা ভাবা হচ্ছে। এ দিকে, যে দুটি কুনকি হাতিকে খয়েরকাটা গ্রামে ত্রাণ পাঠানোর কাজে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেই দুটির এমন কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। গোটা উত্তরবঙ্গে এই ধরনের কাজে অভিজ্ঞ হাতি মেলে কেবল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প এবং জলদাপাড়ায়। তবুও সূর্য ও ফুলমতিকে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে। জলপাইগুড়ি বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও সুমিতা ঘটক বলেন, “সূর্য ও ফুলমতি শান্ত। ওই দুটি কুনকি ওই গ্রামে ত্রাণ পৌঁছতে পারবে।” |