স্কুলে দুষ্টুমি করলে ক্লাসের বাইরে বার করে দেওয়া, জরিমানা করা, এমনকী পড়ুয়ার কাউন্সেলিং করানোটাও ‘শারীরিক নিগ্রহমূলক’ শাস্তি বলে মনে করে জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশন (এনসিপিসিআর)। অথচ রাজ্যের বর্তমান আইনে এগুলি শারীরিক বা মানসিক নিগ্রহমূলক শাস্তির তালিকায় নেই। সেখানে বলা আছে, শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য শিক্ষক বা স্কুল-কর্তৃপক্ষ এই ধরনের কিছু ব্যবস্থা নিলেও নিতে পারেন। কিন্তু এনসিপিসিআর এই ব্যাপারে সম্পূর্ণ ভিন্নমত। তারা এগুলিকেও ছাত্রছাত্রীর নিগ্রহ হিসেবেই দেখছে। রাজ্য সরকার অবশ্য এখনই এ বিষয়ে সবিস্তার মন্তব্য করতে চায়নি। জাতীয় শিশু অধিকার রক্ষা কমিশনের এক দল প্রতিনিধি সোমবার বিকাশ ভবনে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা সচিব অর্ণব রায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে এনসিপিসিআর-এর অন্যতম সদস্য বিনোদ কুমার টিক্কু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের নির্দেশিকা দেখে মনে হচ্ছে, রাজ্য সরকার আসলে ছাত্রছাত্রীদের নিগ্রহমূলক শাস্তিকে সমর্থনই করছে!”
গত জানুয়ারিতে রাজ্যের ওই নিয়মের ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি বেরোয়। সেখানে ক্লাস সামলাতে এমন কিছু ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে, যেগুলি শারীরিক বা মানসিক নিগ্রহমূলক শাস্তির আওতায় পড়ছে না। এমন পাঁচটি ব্যবস্থাকেও কিন্তু নিগ্রহমূলক শাস্তি বলেই মনে করছে এনসিপিসিআর। সেগুলি হল আর্থিক জরিমানা, ক্লাসের বাইরে বার করে দেওয়া, অতিরিক্ত পড়াশোনার কাজ করানো, খেলাধুলো বা অন্য কাজে বাধা দেওয়া এবং স্কুলের কাউন্সেলরকে কাউন্সেলিং। টিক্কুর মন্তব্য, কমিশনের অভিমত মেনে রাজ্য আইন বদলাতে বাধ্য। স্কুলশিক্ষা দফতর বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ। বৈঠকের পরে ওই দফতরের এক কর্তা বলেন, “ওঁরা হঠাৎই কথা বলতে এসেছিলেন। ওঁরা যা বলেছেন, সেটা ওঁদের দৃষ্টিভঙ্গি। এখন দেখতে হবে, ওঁদের কথা মানতে রাজ্য বাধ্য কি না।” |