দোকান ঘর তৈরিকে কেন্দ্র করে সিপিএম-তৃণমূল সংঘর্ষের ঘটনা ঘটল উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার নিরামিশা গ্রামে। সোমবার সকালের এই ঘটনায় ২০ থেকে ২২ জন আহত হয়েছেন। তৃণমূল সমর্থক এক কিশোরীর শ্লীলতাহানি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। আহত ৬ জনকে বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তিন জনকে কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। বাকিদের বিশ্বনাথপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। গ্রামে পুলিশ ও র্যাফের টহলদারি শুরু হয়েছে। পুলিশ জানায়, আপাতত ২ জনকে ধরা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। তৃণমূলের অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাদের সমর্থকদের বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট ও মারধর করা হয়েছে। সিপিএমের দাবি, দু’টি পরিবারের মধ্যে বচসাকে কেন্দ্র করে একজনকে মারধর করা হলে উত্তেজনা ছড়ায়।
তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অভিযোগ, “কেবলমাত্র বাড়ি ভাঙচুর, লুঠপাট করাই নয়, সিপিএমের দুষ্কৃতীরা এক কিশোরীকে মারধর এবং তার শ্লীলতাহানি করেছে। সিপিএম সর্বত্রই তৃণমূলের উপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।” ঘটনাটি মুখ্যমন্ত্রীকে জানানো হবে বলেও জানান তিনি। |
সিপিএমের বারাসত ২ জোনাল কমিটির সদস্য আব্বাস আলি বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। একটা দোকান করা নিয়ে সুরত আলি ও নুর হোসেনের মধ্যে ঝামেলা হয়। ওদের এক সমর্থক আমাদের এক জনকে মারধর করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। ওই সময় আমাদের এক জনের দোকান ভাঙা হলে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। এটা দু’টো পরিবারের মধ্যে ঘটনা।” পুলিশ জানায়, প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে এই ঘটনা চলে। খবর পেয়ে দেগঙ্গা থানার ওসি শান্তিময় পাঁজা ঘটনাস্থলে যান। নামানো হয় র্যাফ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দিন চারেক আগে ওই গ্রামের হাটখোলায় এক ফালি খাস জমিতে ঘর বানাতে যান সিপিএম সমর্থকেরা। সে সময় তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে গণ্ডগোল বাধলে পুলিশের হস্তক্ষেপে তা মেটে। পুলিশ বিবদমান দু’পক্ষ সিপিএমের নুর হোসেন এবং তৃণমূলের সুরত আলিকে ডাকে। পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে ফের দুই যুবকের মধ্যে ওই নিয়ে বচসা হয়। পরে তা বড় আকার নেয়। তৃণমূলের অভিযোগ, সকাল ৯টা নাগাদ সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তৃণমূল নেতা নাজিম মণ্ডলের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর ও লুঠপাট চালায়। হামলা চলে সুরত আলির বাড়িতেও। ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান সাহাবুল বিশ্বাস বলেন, “মহসীন গোলদার, সাজাহান মণ্ডলের নেতৃত্বে হঠাৎ এক দল লোক বাড়ির ভিতরে ঢুকে ভাঙচুর শুরু করে। ছেলে সহিদুলকে মারছে দেখে তার সাত বছরের প্রতিবন্ধী মেয়েটি বাবাকে বাঁচাতে এলে তাকেও ছুড়ে ফেলে দেয়।” তৃণমূলের আরও অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা তৃণমূলকর্মী চানু বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী’কে মারধর করে। মারধর করা হয় চানুর ভাই সফিকুল বিশ্বাসকে। দুষ্কৃতীদের হাতে লাঞ্ছিত হন সফিকুলের স্ত্রী। তাঁর হাত ভেঙে যায়। |