|
|
|
|
স্কুলে কাঁদায় শিশুকে মার, আয়া বরখাস্ত |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
স্কুল থেকে মাথায় যন্ত্রণা এবং গায়ে মারের দাগ নিয়ে বাড়ি ফিরেছিল বছর চারেকের রৌনক। তাকে জিজ্ঞাসা করে অভিভাবকেরা জানতে পারেন, স্কুলের নতুন এক আয়া-ই তার এই হাল করেছেন।
সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার আড়িয়াদহে। ওই আয়ার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানিয়েছে শিশুটির পরিবার। ঘটনার কথা জানার পরেই গার্গী হালদার নামের ওই আয়াকে বরখাস্ত করেছেন স্কুল-কর্তৃপক্ষ। শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সে এখন বাড়িতেই আছে। শিশুটির অভিযোগের
ব্যাপারে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এডিসি (বেলঘরিয়া) বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “ওই ঘটনা নিয়ে তদন্ত চলছে।” |
|
শিশুর পিঠে আঘাতের চিহ্ন।—নিজস্ব চিত্র |
পুলিশ জানায়, রৌনক দাস নামে ওই শিশুটি আড়িয়াদহ গভর্নমেন্ট স্কিম প্রাইমারি স্কুলের নার্সারির ছাত্র। তার দাদা তুষার ওই স্কুলের প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ স্কুল ছুটির পরে রেশমা হাড়ি নামে রৌনকের এক আত্মীয়া তাদের দু’ভাইকে আনতে যান। কিন্তু স্কুলের কিছু কাগজপত্রে সই করানোর জন্য স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রৌনকের মাকে স্কুলে ডাকেন। রেশমা জানান, তিনি ফিরে আসার সময় তুষারকে সঙ্গে নেন। রৌনক স্কুলেই ছিল।
এর কিছু পরে রৌনকের মা রূপা দাস স্কুলে গিয়ে সইসাবুদ সেরে রৌনককে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। রূপাদেবী জানান, স্কুল থেকে ফেরার সময় রৌনক তার মাথায় খুব যন্ত্রণা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল। বাড়ি ফিরে পোশাক খুলতেই তার পিঠে মারের চিহ্ন দেখতে পান রূপাদেবী। আতঙ্কিত রূপাদেবী তাকে এলাকার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেখানে তার মাথায় স্ক্যান করা হয়। রৌনক তার অভিভাবকদের জানায়, গার্গী নামে ওই আয়া তাকে খুব মারধর করেছেন। এর পরেই স্কুলে গিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানান রূপাদেবীরা।
স্কুল-কর্তৃপক্ষ জানান, স্থানীয় পঞ্চাননতলার বাসিন্দা গার্গীকে কয়েক মাস আগে আংশিক সময়ের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল। এ দিন রৌনক কান্নাকাটি করতে থাকায় তাকে গার্গীর তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। স্কুল-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, শিশুটি বেশি কান্নাকাটি করায় তিনি তাকে স্কেল দিয়ে পেটান বলে গার্গী স্বীকার করেছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা রাধা মিত্র বলেন, “রৌনকের কান্নার আওয়াজ পাচ্ছিলাম। কিন্তু ওকে যে এ ভাবে মারধর করা হয়েছে, তা বুঝিনি।” গার্গীর সঙ্গে অবশ্য এ দিন সংবাদমাধ্যমকে কথা বলতে দেননি তাঁর পরিবারের লোকেরা।
রৌনকের পরিবারের লোকজন জানান, বছর চারেক আগে রৌনকের বাবা মারা যান। তার পর থেকে দুই ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে থাকেন রূপাদেবী। এ দিন সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির সামনে পাড়ার লোকেদের জটলা। ঘরের ভিতরে বসে রয়েছে রৌনক। |
|
|
|
|
|