ছেলেকে খুনের নালিশ, ধৃত মা
নিজের সদ্যোজাত শিশুপুত্রকে খুনের অভিযোগে পুলিশ ধরল মাকে। পুলিশের দাবি জেরায় ওই মহিলা জানান, সন্তান হওয়ার পর থেকে নানা শারীরিক সমস্যার জন্য স্বামীর সঙ্গে তাঁর ‘দূরত্ব’ বেড়ে যাচ্ছিল। সে কারণেই নিজের সন্তানকে খুন করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে গোঘাটের গণেশবাটি এলাকার রায়খাঁ গ্রামে বর্ণালী দে-র বাপের বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় তাঁর আঠাশ দিনের শিশুপুত্র। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বছর আঠাশের ওই মহিলা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, রাতে শৌচালয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ছেলের কান্না শুনে ছুটে এসে দেখেন, এক ব্যক্তি ছেলে-কোলে করে ঘর থেকে ছুটে বেরিয়ে যাচ্ছে। ওই ঘরের মেঝেতেই শুয়ে ছিলেন বর্ণালীর বাবা-মা। তাঁরা চিৎকার-চেঁচামিচি শুনে উঠে পড়েন। সকলে খোঁজাখুঁজি করেও রাতে শিশুটির সন্ধান পাননি। রবিবার দুপুরে বাড়ির পাশেই একটি দিঘির জলে তার দেহ ভাসতে দেখা যায়। পুলিশ তা উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়।
ওই মহিলার কথাবার্তায় প্রাথমিক ভাবে কিছু অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন তদন্তকারী অফিসারেরা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বর্ণালী ও তাঁর স্বামী আশিস দে-কে। রবিবার রাতেই পুলিশ গ্রেফতার করে বর্ণালীকে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মহিলা জেরায় জানিয়েছেন, শিশুটির জন্মের পর থেকে অস্ত্রোপচার, বন্ধ্যাত্বকরণ প্রভৃতির ফলে শারীরিক ভাবে অসুস্থ ছিলেন। দীর্ঘ দিন বাপের বাড়িতে থাকতে হচ্ছিল। এ সবের ফলে স্বামীর সঙ্গে তাঁর ‘দূরত্ব’ বেড়ে যাচ্ছিল। সে জন্যই সদ্যোজাত দ্বিতীয় সন্তানকে দিঘির জলে ফেলে দেন। তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন আরামবাগের এসডিপিও শিবপ্রসাদ পাত্র।
মনোবিদ নীলাঞ্জনা স্যান্যালের ব্যাখ্যায়, মা হয়ে যদি কেউ সন্তানকে মেরে ফেলেন, তা হলে ওই মহিলা কোনও ‘কাল্পনিক জগতে’র মধ্যে থেকে এমন ঘটনা ঘটিয়ে ফেলেছেন বলে ধরা যেতে পারে। এটা ‘স্কিজোফ্রেনিয়া’র লক্ষণ। ওঁর মানসিক চিকিৎসা হওয়া খুব জরুরি। নীলাঞ্জনাদেবীর মতে, এটি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হতে পারে না। মহিলার পূর্ববর্তী আচরণে নিশ্চয়ই কোনও না কোনও অস্বাভাবিকত্ব ছিল।
বর্ণালীর শ্বশুরবাড়ি গড়বেতায়। আশিসবাবু গোটা ঘটনায় হতভম্ব। বলেন, “স্ত্রী একটু রাগী। কিন্তু এমন ঘটনা ঘটাতে পারে বলে বিশ্বাসই হচ্ছে না। অতীতেও অস্বাভাবিক আচরণের কোনও দৃষ্টান্ত নেই। আর আমার সঙ্গে সম্পর্কও বেশ ভাল।” মেয়ের আচরণ মেনে নিতে করতে পারছেন না বর্ণালীর বাবা সুকুমার কুণ্ডুও। আগে বর্ণালী এমন ‘উগ্র’ আচরণ করেননি বলে দাবি তাঁর। সোমবার বর্ণালীকে মহকুমা আদালতের বিচারক ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দেন। আদালতের পথে বর্ণালী বলেন, “তখন কী হয়েছিল, আমি নিজেই বুঝতে পারছি না। কী করে নিজের ছেলেকে জলে ফেলে দিলাম, তা-ও বিশ্বাস হচ্ছে না।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.