ইউপিএ-র প্রার্থীকে সমর্থন, নাকি ভোটদানে বিরত থাকা? এই প্রশ্নে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বাম শিবিরে ভোটাভুটির ফল ছিল দুই-দুই। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সেটাই তিন-এক হতে চলেছে।
সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লক উপরাষ্ট্রপতি পদে হামিদ আনসারিকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আজ। সিপিআই এখনও সিদ্ধান্ত না নিলেও তারাও আনসারিকে সমর্থন করবে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। আরএসপি কিন্তু এই ক্ষেত্রেও ইউপিএ-র নীতির বিরোধিতা করে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে।
গত উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বামেরাই আনসারিকে প্রার্থী করেছিল। সে দিক থেকে সিপিএমের ইউপিএ-প্রার্থীকে সমর্থন অস্বাভাবিক কোনও ঘটনা নয়। কিন্তু প্রণব মুখোপাধ্যায়কে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এক দিকে ইউপিএ-র নীতির বিরোধিতা, অন্য দিকে তাদেরই প্রার্থীকে সমর্থন করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের মধ্যে। ফলে সীতারাম ইয়েচুরিকে আজ পলিটব্যুরোর সিদ্ধান্ত ব্যাখ্যা করতে মাঠে নামতে হয়েছে। তাঁর যুক্তি, “রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতি কেউই সরকারের নীতি তৈরি করেন না। কাজেই তাঁদের সঙ্গে ইউপিএ-র নীতির কোনও সম্পর্ক নেই।” ঠিক এইখানেই ভিন্ন মত আরএসপি। প্রণববাবুকে সমর্থন না করার পিছনে আরএসপি-র যুক্তি ছিল, অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনিই উদার অর্থনীতির স্থপতি ছিলেন। দলের নেতা অবনী রায় বলেন, “৩০ ও ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তবে আমরা ইউপিএ-র প্রার্থীকে সমর্থন করব না। ইউপিএ-র প্রার্থী মানেই আমাদের কাছে কংগ্রেসের প্রার্থী।” লোকপাল বিল নিয়ে বিতর্কে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসেবে আনসারির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অবনী।
ইয়েচুরিদের মত ঠিক উল্টো। তাঁদের মতে, রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসেবে আনসারি ভালই কাজ করেছেন। একই মত ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা দেবব্রত বিশ্বাসেরও। তাঁর বক্তব্য, ‘আমরা গত বারও আনসারিকে সমর্থন করেছিলাম। এ বারও সমর্থন করছি।” কিন্তু আরএসপি নেতাদের যুক্তি, গত বারের নির্বাচনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। তখন বামেরা ইউপিএ সরকারকে সমর্থন করছিল। আরএসপি-র প্রসঙ্গে দেবব্রতবাবুর বক্তব্য, “রাষ্ট্রপতি ভোটে শঙ্করদয়াল শর্মাকে সমর্থনের বিষয়েও আরএসপি ভিন্ন অবস্থান নিয়েছিল। আলাদা আলাদা দল পৃথক সিদ্ধান্ত নিতেই পারে।”
আরএসপি-র পাশাপাশি সিপিআই-ও রাষ্ট্রপতি ভোটে ভোটদানে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু ইউপিএ-র নীতির সঙ্গে প্রণববাবুকে এক করে দেখলেও আনসারিকে মেলাতে রাজি নয় তারা। এ বিষয়ে ১৮ জুলাই তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। |