রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে যতই মতান্তর হোক না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউপিএ ছেড়ে চলে যান, এটা মোটেই চান না সনিয়া গাঁধী। আজ দলের শীর্ষ নেতাদের নিজের বাসভবনে ডেকে দফায় দফায় বৈঠক করে এই বার্তা দিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরে মমতার সঙ্গে আলোচনায় বসবেন সনিয়া নিজে। ঠিক করবেন ভবিষ্যতের চলার পথ।
রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি ভোটের কৌশল ঠিক করতে আজ আহমেদ পটেল, প্রণব মুখোপাধ্যায় অম্বিকা সোনি, জয়রাম রমেশ প্রমুখর সঙ্গে বৈঠক করেন সনিয়া। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, অন্ধ্রপ্রদেশের জগন্মোহন রেড্ডি, চন্দ্রশেখর রাও, চন্দ্রবাবু নায়ডুদের সঙ্গে কথা বলে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রণববাবুর জন্য সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালানো হবে। পাশাপাশি, তৃণমূলের ভোট ভাঙানোর কোনও রকম চেষ্টা করা হবে না।
সনিয়া যে মমতাকে সঙ্গে নিয়ে চলতে চাইছেন, আজ তার প্রমাণ মিলেছে সলমন খুরশিদ ও দিগ্বিজয় সিংহের মন্তব্য থেকে। মমতার প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েছেন কংগ্রেসের এই দুই শীর্ষ নেতা। রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে মতপার্থক্য হলেও মমতা ইউপিএ ছেড়ে বেরিয়ে যাবেন না বলে আশা প্রকাশ করে দিগ্বিজয় বলেছেন, “আমরা কোনও ভাবেই চাই না তৃণমূল অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাক। আমরা মমতার নেতৃত্বকে, বিশেষ করে তিনি যে ভাবে প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই করেছেন, তাকে দারুণ সম্মান করি। কংগ্রেস মমতাকে সর্বোচ্চ সম্মান দেয়।”
একই সুরে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সলমন খুরশিদ জানিয়ে দিয়েছেন, মমতা শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকবেন না বলেই তাঁরা আশা করছেন। তাঁর কথায়, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য রকমের শরিক। তিনি কঠিন মনোভাবাপন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, যাঁর বিশ্বাসও খুব দৃঢ়। আমি ওঁকে যেমন সম্মান করি, তেমনই যে ভাবে তিনি শূন্য থেকে শুরু করে বিরাট সমর্থনের ভিত্তি গড়ে তুলেছেন, তাকে সম্মানও করি।” প্রণববাবু নিজেও মমতা সম্পর্কে নরম মনোভাব নিচ্ছেন। |
আমরা মমতার নেতৃত্বকে, বিশেষ করে তিনি যে ভাবে প্রতিকূলতার সঙ্গে লড়াই
করেছেন, তাকে দারুণ সম্মান করি। কংগ্রেস মমতাকে সর্বোচ্চ সম্মান দেয়। দিগ্বিজয় সিংহ |
|
কংগ্রেসের নেতাদের একাংশের মতে, এটা খুব স্পষ্ট যে মমতা আর যাই হোক, এনডিএ প্রার্থীকে সমর্থন করবেন না। এই অবস্থায় কংগ্রেসেরও উচিত তাঁর রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা বোঝার চেষ্টা করা। খুরশিদ যেমন আজ বলেছেন, “কিছু বিষয়ে মমতার দৃঢ় মনোভাব রয়েছে। তাকে সম্মান জানানো উচিত। অনেকের মতে সকলেরই নরম মনোভাবের হওয়া উচিত। কিন্তু মমতার সঙ্গে বোঝাপড়ার জন্য ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। যেটা আমাদের সকলের নেই।” এর জন্য যথেষ্ট সময় দিতে হবেও বলে মনে করছেন খুরশিদ। তাঁর মতে, শরিকদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলাটা সপ্তাহে সাত দিন, দিনে ২৪ ঘণ্টার কাজ। এক এক জনের সঙ্গে যে এক এক রকম ভাবে কথা বলতে হয়, সেটাও বোঝা দরকার।
|