অচেনা মোবাইল নম্বর থেকে ফোন, আর তাতে বোনের গলা পেয়ে কিছুটা অবাকই হয়েছিলেন কেষ্টপুরের গৃহবধূটি। বোনের কথা শুনে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। বোন বলেন, “আমাকে বেচে দেওয়া হয়েছে। একটা ঘরে আটকে রেখে দেড় মাস ধরে ধর্ষণ করা হচ্ছে। বাঁচাও।’ দিদি দেরি করেননি। স্বামী ও তাঁর বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে গিয়ে বি কে পাল অ্যাভিনিউয়ের এক ‘কুঠুরি’ থেকে বোনকে উদ্ধার করেন তিনি। বোন জানান, প্রতি রাতে তাঁর ঘরে নতুন লোক পাঠানো হত। তেমনই এক অপরিচিত ব্যক্তি তাঁর দুর্দশার কথা শুনে নিজের মোবাইল ওঁকে ব্যবহার করতে দেন। বছর উনিশের তরুণীটির অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগরের পুলিশ সোমবার এক মহিলা-সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতেরা হল সাহেব সর্দার, প্রশান্ত দেবনাথ ও তার মা করুণা দেবনাথ। সাহেব-প্রশান্তের বিরুদ্ধে নারী পাচার, জবরদস্তি দেহব্যবসায়ে নামানো এবং গণধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের সাহায্য করায় অভিযুক্ত করুণা।
বিধাননগর পুর-এলাকার বাসন্তীদেবী কলোনির বাসিন্দা মেয়েটির মা নেই, বাবা বেকার। তাঁর বক্তব্য, আর্থিক অনটনের সুযোগ নিয়ে সাহেব-প্রশান্ত তাঁকে ফাঁদে ফেলেছিল। তরুণীর অভিযোগ: উত্তর কলকাতায় এক অসুস্থ বৃদ্ধার দেখাশোনার কাজের টোপ দিয়ে ওই দু’জন তাঁকে একটি বাড়িতে এনে তোলে, এবং সেখানে তাঁকে ধর্ষণ করে। পরে তারা তাঁকে জনৈক ‘ভোলা’র হাতে তুলে দিয়ে বিনিময়ে চল্লিশ হাজার টাকা নেয় বলে মেয়েটির দাবি।
তরুণীর অভিযোগ, পুরো ব্যাপারটা করুণারই মস্তিষ্কপ্রসূত। করুণা বলেন, তাঁদের মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। পুলিশকে মেয়েটি আরও বলেছেন, এলাকায় সাহেবদের ‘প্রভাব’ থাকায় উদ্ধার পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানায় যেতে সাহস পাননি। প্রায় সাত দিন পরে, এ দিন সকালে ঠাকুর্দার সঙ্গে তিনি বিধাননগর দক্ষিণ থানায় গিয়ে পুলিশকে বিস্তারিত জানান। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের ডেপুটি কমিশনার (সদর) সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হচ্ছে। অভিযোগের ভিডিও রেকর্ডিং হয়েছে।” |